কানেকটিকাটের তিন শহরে অভিবাসন পুলিশের হানা
Published: 28th, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়েছে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) এজেন্টরা। ইস্ট হার্টফোর্ড, উইলিম্যান্টিক এবং ব্রিজপোর্টে আইসিই এজেন্টদের উপস্থিতির খবর পাওয়া গেছে। কমিউনিটির নেতারা বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, আইসিই এজেন্টরা যদিআপনার দরজায় আসে, তবে আপনার অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
ইস্ট হার্টফোর্ডের মেয়র কনর মার্টিন কমিউনিটির সদস্যদের উদ্দেশে একটি বিবৃতিতে বলেছেন, আমি আমাদের কমিউনিটির মধ্যে ভয় এবং আতঙ্ক অনুভব করেছি। প্রায় আটজন এজেন্ট সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
রোববার তার শহরে একটি অভিযানের পর তিনি বাসিন্দাদের মনে করিয়ে দেন যে আইসিই এজেন্টরা বিচারকের স্বাক্ষরিত পরোয়ানা ছাড়া আপনার বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না।
মার্টিন বলেন, আমাদের দায়িত্ব হলো ইস্ট হার্টফোর্ডের সমস্ত বাসিন্দাকে তথ্য জানানো। যাতে তারা নিজ নিজ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতায়ন পায়।
ইস্ট হার্টফোর্ড পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে তারা একটি সৌজন্যমূলক কল পেয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, আইসিই বার্নসাইড অ্যাভিনিউতে একটি কন্ডো কমপ্লেক্স এলাকায় থাকবে। তবে পুলিশ বলেছে যে তারা এই অভিযানের অংশ ছিল না এবং কেউ আটক হয়েছে কি না তা পরিষ্কার নয়।
একই ধরনের পরিস্থিতি ব্রিজপোর্টেও দেখা গেছে। যেখানে পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে যে তারা শুনেছে আইসিই শহরে আছে। তবে তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এই অভিযানের কতগুলো আটক করার মাধ্যমে শেষ হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। ব্ল্যাক এবং পুয়ের্তো রিকান ককাস মনে করে, যেসব এলাকাগুলোকে লক্ষ্য করা হচ্ছে, সেগুলো প্রধানত পুয়ের্তো রিকান।
ব্ল্যাক এবং পুয়ের্তো রিকান ককাস চেয়ার প্রতিনিধি আন্তোনিও ফেলিপ বলেছেন, আমাদের কাছে এটি খুবই বর্ণগত প্রোফাইলিংয়ের মতো মনে হচ্ছে। এমনকি ভাষার ভিত্তিতে প্রোফাইলিং। তারা পুয়ের্তো রিকান এলাকায় যাচ্ছে। পুয়ের্তো রিকানরা সর্বদা নাগরিক ছিল। যখন আপনি তাদের আপনার এলাকায় দেখেন এবং এর কারণ বা যুক্তি জানেন না। তখন এটি ভালো লাগে না। আমরা বিশ্বাস করি তাদের উচিত এমন কিছু অপরাধমূলক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করা। তিনি এবং তার সহকর্মীরা রাজ্যের কংগ্রেস সদস্যদের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
আন্তোনিও ফেলিপ বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করছি যাতে জানতে পারি আইসিই-এর উদ্দেশ্য কী এবং আমরা কৃতজ্ঞ যে আমাদের প্রতিনিধি দল আমাদের রক্ষা করতে কাজ করছে। তারা বেশ ভালো কাজ করছে। বিশেষত এই প্রশাসনের অধীনে ডেমোক্র্যাটিক রাজ্যগুলো যে অস্থিরতার সম্মুখীন হতে পারে তা থেকে আমাদের রক্ষা করতে। হার্টফোর্ড, ওয়াটারবারি এবং নিউ হ্যাভেনের মেয়ররা জানিয়েছেন যে তাদের শহরে এখন পর্যন্ত কোনো আইসিই অভিযান হয়নি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ