রানিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত সরকার: রেল উপদেষ্টা
Published: 28th, January 2025 GMT
আন্দোলনকারী বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের সঙ্গে যে কোন সময় আলোচনায় বসতে সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, তাদের কিছু দাবি পূরণ করা হয়েছে। বাকি দাবির বিষয়ে তাদের সঙ্গে যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে প্রস্তুত সরকার।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যান রেল উপদেষ্টা। রানিং স্টাফদের আন্দোলনের মুখে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার ১০ ঘণ্টা পর যাত্রীদের মুখোমুখি হলেন তিনি।
এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন রেল সচিব, রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক, বিআরটিসি চেয়ারম্যানসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। ট্রেন সার্ভিস বন্ধ থাকায় স্টেশনে উপদেষ্টাকে পেয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন যাত্রীরা। উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে।
তিনি বলেন, যাত্রীরা যারা এখানে আছেন, তাদের জন্য আমরা বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করছি। রেলের টিকিটে তারা যাত্রীদের গন্তব্যে নিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাত ১২টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ (গার্ড, লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার, সাব লোকোমাস্টার, টিটিই) কর্মচারী ইউনিয়ন। এতে সারাদেশে রেল চলাচল বন্ধ রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ল য গ য গ বন ধ উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
দিনে খাবারের দোকান বন্ধ রাখতে হুঁশিয়ারি, দুর্ভোগ
রমজানের ‘পবিত্রতা’ রক্ষায় দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনে খাবারের দোকান খোলা রাখায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। নিরাপত্তার কথা ভেবে এসব জায়গায় দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অসুস্থ ব্যক্তি, শিশু ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা। ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বাজারে রমজানে দিনে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখলেই ৩ হাজার টাকা জরিমানার ঘোষণা দিয়ে নোটিশ দিয়েছে স্থানীয় বণিক সমিতি। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বাজারের হোটেল-রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ছেংগারচর পৌর সমবায় সমিতি। আদেশ অমান্যকারীদের জরিমানা করা হবে।
নোটিশে সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান লস্করের স্বাক্ষর রয়েছে। একই রকম আদেশ জারি করেছে উপজেলার সুজাতপুর বাজারের বণিক সমিতি। তবে এই বাজারে খাবারের দোকান খোলা রাখলে জরিমানা হবে ১ হাজার টাকা।
ছেংগারচর পৌর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকানগুলো বন্ধ। চর অয়েস্টার থেকে ছেংগারচর বাজারে চিকিৎসা নিতে আসা রহমত মিয়া (৬৫) খাবার খেতে গিয়ে দেখেন, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ। তিনি বলেন, রোগীর জন্য এটা খুব কষ্টকর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেস্তোরাঁ ও চা ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যবসা বন্ধ থাকায় রোজগার বন্ধ। এবার ঈদ করা তাদের জন্য কষ্টকর হবে। ছেংগারচর পৌর বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আব্দুল মান্নান দোকান বন্ধের আদেশ এবং জরিমানার নির্দেশনা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ‘বিষয়টি জানি না। বণিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারব।’
এদিকে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এতে দেখা যায়, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় হাজী শরীয়তুল্লাহ সমাজকল্যাণ পরিষদের প্রতিনিধি ও হাজী শরীয়তুল্লাহর বংশধর পীরজাদা হানজালা রমজান মাসে দিনে খাবারের দোকান খোলা রাখার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। রমজান শুরুর আগে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ভিডিওতে হানজালাকে বলতে শোনা যায়, ‘রমজানের হেফাজত করা প্রতিটি মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। এ জন্য রমজান মাসকে কেন্দ্র করে শিবচরের ১৯টি ইউনিয়নে হাজী শরীয়তুল্লাহ সমাজকল্যাণের লোকজন কাজ করবে। এটা বাংলাদেশ, এটা ভারত নয়, মনে রাখতে হবে। রমজান মাসে সকালে চায়ের দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ খোলা থাকবে– এটা হতে পারে না। তার সঙ্গে এটা হাজী শরীয়তুল্লাহর মাটি। এখানে এ কাজ হতে পারে না, হতে দেওয়া হবে না।’ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি আপনাদের দোকান দিনে বন্ধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আমাদের নেতৃবৃন্দ দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হবে।’ তিনি নারীদের ‘বেপর্দায়’ বাজারে ঘোরাফেরা করতে নিষেধ করেন।
এ বিষয়ে হানজালা সমকালকে বলেন, ‘রমজান সিয়াম সাধনার মাস। এ মাসে যদি কেউ দিনে চা-সিগারেট বা অন্য কিছু খায়, বিষয়টা অনেক দুঃখজনক।’ এই ঘোষণায় অন্য ধর্মের মানুষরা বিপাকে পড়বেন কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অন্য ধর্মের যারা আছেন, তারা তাদের মতো করে চলবেন, তাদের মতো করে খাবেন। আমার বার্তা ছিল মুসলমানদের প্রতি। তারা যেন এ মাসে বেহায়াপনা না করেন।’ বেহায়াপনা বলতে কী বুঝিয়েছেন তা জানতে চাইলে বলেন, অন্যান্য মাসে চায়ের দোকানে আড্ডা কিংবা বেহায়াপনা চলে। এটা বন্ধে কথা বলেছি।
এ বিষয়ে শিবচরের ইউএনও পারভীন খানম বলেন, কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর মাধ্যমে এ বিষয়ে জানতে পেরেছি। এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবসায়ী অভিযোগ করেননি। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন মতলব ও শিবচর প্রতিনিধি)