ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান মিসর জর্ডানের
Published: 28th, January 2025 GMT
গাজার বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানের আশ্রয় দেওয়া উচিত বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশ দুটি। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসও ট্রাম্পের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনিরাও গাজা ছাড়বে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার মুখে হাজারো মানুষের প্রাণহানি এবং চরম মানবিক সংকটে থাকা গাজার জন্য এটি সাময়িক, নাকি স্থায়ী সমাধান– ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে ট্রাম্প বলেন, দুটোই হতে পারে।
জর্ডান এরই মধ্যে লাখো ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। মিসরেও হাজারো ফিলিস্তিনি তাঁবুতে বসবাস করেন। মিসর, জর্ডান ও অন্যান্য আরব দেশ গাজার ফিলিস্তিনিদের তাদের দেশে সরিয়ে নেওয়ার ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা খারিজ করে দিয়েছে। গাজা ভূখণ্ডের ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে থাকতে চাইছেন।
জর্ডানের তরফ থেকেও ট্রাম্পের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সাংবাদিকদের বলেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের যে কোনো স্থানচ্যুতির বিরুদ্ধে তাঁর দেশের ‘দৃঢ় ও অটল’ অবস্থানে রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক স্থানান্তর ও উৎখাত শুধু জাতিগত নিধন বলে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূমি থেকে উৎখাতের প্রচেষ্টা– সেটা স্থানান্তর, সংযুক্তকরণ বা বসতি স্থাপনের মাধ্যমে হোক, অতীতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি সতর্ক করে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর করার চেষ্টা ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য মুছে ফেলার একটি প্রচেষ্টা হবে। সিসি এটিকে একটি ‘লাল রেখা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা মিসরের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূখণ্ড থেকে চলে গেলে এই সমাধান সম্ভব হবে না।
হামাসের এক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘর থেকে স্থায়ীভাবে বিতাড়িত হওয়ার আশঙ্কার কথা বলে আসছেন। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম বলেন, ফিলিস্তিনিরা এমন কোনো প্রস্তাব কিংবা সমাধান মেনে নেবে না। এমনকি যদি পুনর্গঠনের মতো ভালো উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়, যেমনটা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তবুও গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের মানুষেরা অবিচল থাকবে এবং মাতৃভূমি ত্যাগ করবে না। ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ওয়াফা আব্বাসের এ মন্তব্যের একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক ঘাসান আল-খাতিব বলেন, পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিরা, সেই সঙ্গে জর্ডান ও মিসর ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। আমি মনে করি না, বাস্তবে এমন ধারণার কোনো জায়গা আছে। সেখানকার বাসিন্দারা এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছেন, ট্রাম্প ও পুরো বিশ্বকে বলছি– আমরা ফিলিস্তিন ছাড়ব না। খবর রয়টার্স ও সিএনএনের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বইমেলা উপলক্ষে ঢাবিতে যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শিথিল
অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বহিরাগত যানবাহন প্রবেশের ক্ষেত্রে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অমর একুশে বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। সারা দেশ থেকে বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ এ বইমেলায় আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে তাদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে প্রবেশপথগুলোতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে যে বিধি-নিষেধ থাকে, তা অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে শিথিল করা হলো। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো ব্যারিকেড রাখবে না।
তবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এ প্রবেশপথগুলোতে সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন প্রবেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যানবাহনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে পার্কিং করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবক দল এবং প্রক্টরিয়াল মোবাইল সিকিউরিটি টিমের সদস্যরা ট্রাফিক বিভাগকে এ ব্যাপারে সার্বিক সহায়তা করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করার জন্য ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
ঢাকা/সৌরভ/রফিক