জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনের হৃদয়ের ক্ষত এখনও দগদগে। প্রিয়জন হারানোর ব্যথায় কেউ কেউ আজও ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। তাদের একজন খায়রুন নাহার। গত ১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরার ভাড়া বাসার চারতলার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় তাঁর মেয়ে নাইমা সুলতানা (১৬)। সে মাইলস্টোন স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। তার শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি মা-বাবা-ভাই-বোন। খায়রুন নাহার বলেন, ‘নাইমাকে হারিয়ে ওর বড় বোন আর ছোট ভাই এখনও ট্রমাতে আছে। ছোট ছেলে মাঝেমধ্যে বলে ওঠে– মা, গুলি আসে, গুলি। আমরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না।’
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজন করেছে প্রথম আলো। ‘জুলাই-জাগরণ প্রদর্শনী’ শীর্ষক এ আয়োজনে গতকাল সোমবার আলোচনা সভা ছিল। সভায় সন্তানকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কথাগুলো বলেন খায়রুন নাহার। 

৫ আগস্ট শহীদ ছয় বছরের জাবির ইব্রাহিমের মা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘তিন ভাইবোনের মধ্যে ছোট ছিল আমার জাবির। তাকে ছাড়া আমরা সবাই অসহায় হয়ে পড়েছি। পরিবারের ১২ জন ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে যোগ দিই। কিন্তু মিছিলের সেই আনন্দ শোকে পরিণত হয়। জাবির তার বাবার হাত ধরে হাঁটছিল। বাবার কোলেই সে গুলিবিদ্ধ হয়।’
শহীদ শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফের মা জারতাজ পারভিন বলেন, ‘আমার ছেলের বয়স ছিল ১৭ বছর। দুই মাস পর ও আঠারোতে পা দিত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আমার ভোটার আইডি কার্ড চাইত। না দেওয়ায় রাগ করে বলত, দুই মাস পর আমার ১৮ হবে। আমিও ভোটার আইডি পাব। কিন্তু তার আগেই ওর ডেথ সার্টিফিকেট এসে গেল!’
সভায় আরও কথা বলেন, শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী, মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত, জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবীর হোসেন, মাহমুদুর রহমান সৈকতের বড় বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস। তারা নতুন বাংলাদেশে প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। সভা সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক সুমনা শারমীন।

গত ২৪ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে শহীদদের ব্যবহৃত সামগ্রী– কারও রক্তমাখা পরিচয়পত্র, কারও গিটার, কারও আঁকা ছবি। আরও রয়েছে পত্রিকা ও অনলাইন থেকে আলোচিত সংবাদ এবং অনুসন্ধানী ভিডিও প্রতিবেদন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

হঠাৎ চারজনকে উদ্ধারের আলোচনা, নিশ্চিত নয় পুলিশ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনের খোঁজ মিলেছে– সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন আলোচনা থাকলেও এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। তাদের ভাষ্য, আজকালের মধ্যে এমন তথ্যের বিষয়টি আরও পরিষ্কার হতে পারে। 

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল সমকালকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকজনের খোঁজ মিলেছে– এমন প্রচার আছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা এখনও উদ্ধার বিষয়ে নিশ্চিত নই। আজকালের মধ্যে পরিষ্কার হতে পারব। 

পাহাড়ের বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি থেকে চবি ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে জেলা সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে ১৬ এপ্রিল সকালে পাঁচ শিক্ষার্থীকে দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে। অপহৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রিশন চাকমা, দিব্যি চাকমা ও মৈত্রীময় চাকমা রাঙামাটি এবং অন্য দু’জন লংঙি ম্রো ও অলড্রিন ত্রিপুরা বান্দরবানের বাসিন্দা। তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপণ ত্রিপুরা এ অপহরণের ঘটনায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছেন। তবে ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

একাধিক অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে চাপের মুখে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনকে গত সোমবার রাতে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার সর্বোসিদ্ধিপাড়া এলাকা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হঠাৎ চারজনকে উদ্ধারের আলোচনা, নিশ্চিত নয় পুলিশ
  • নবীনগরে হেফাজতের কমিটি নিয়ে মুখোমুখি দু’পক্ষ
  • ফেসবুক লাইভে এসে নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা
  • ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে জখম, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পরিবারের
  • বাংলাদেশকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ দেখছে জিম্বাবুয়ে
  • লেনিন কেন এখনও জরুরি
  • মিয়ানমার জান্তার মরিয়া চেষ্টা
  • হাওরে হাওরে ধান কাটার ধুম