চিকিৎসকের ৯ পদই শূন্য জোড়াতালিতে চিকিৎসা
Published: 27th, January 2025 GMT
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৩১ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে জুনিয়র কনসালট্যান্টসহ চিকিৎসকের ৯ পদ রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি পদের বিপরীতে বছরখানেক ধরে কোনো চিকিৎসক নেই। একটি পদে কাগজে থাকলেও গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে তিনি বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে অন্য উপজেলার চিকিৎসক এনে জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, হাওর অধ্যুষিত এলাকার লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ভরসাস্থল খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও কাজ হয়নি। এতে জটিল ও জরুরি চিকিৎসাসেবা না পা পাওয়ায় ঝুঁকিতে পড়ছেন রোগীরা। উপজেলায় সরকারি এ চিকিৎসাকেন্দ্রটি ছাড়া তেমন কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক নেই।
শহরের কলেজ শিক্ষক জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা খুব অসুবিধার মধ্যে আছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসার জন্য অনত্র যেতে হয়। বিষয়টি ভাবতেই কেমন যেন লাগে।’ একই ধরনের কথা বলেন নূরপুর বোয়ালী গ্রামের মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ। তাঁর ভাষ্য, এই যুগে চিকিৎসক ছাড়া হাসপাতাল চিন্তাই করা যায় না। কিছুদিন আগে এক রোগী নিয়ে গিয়ে দেখেন চিকিৎসক নেই। পরে মদনে যেতে হয়েছে। তিনি দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানা গেছে, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) পদে ডা.
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবন থাকলেও তেমন কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। ফলে রোগীকে অনেক পথ পেরিয়ে যেতে হয় জেলা সদর, পাশের মোহনগঞ্জ ও মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা সুনামগঞ্জে যেতে হয়। এতে দুর্ভোগের পাশাপাশি বাড়তি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। ফলে এখানে মা ও শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের কখনও সিজারও হয়নি। চিকিৎসক, যন্ত্রপাতি এবং ব্লাড ব্যাংকের অভাবে অপারেশন থিয়েটার অচল পড়ে আছে। গতকাল সোমবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৌনম বড়ুয়া। তাঁর ভাষ্য, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার একটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। মেডিকেল অফিসারের পদ আছে তিনটি। সেগুলোও শূন্য।
জুনিয়র কনসালট্যান্টের পদ চারটি। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালট্যান্ট গাইনি ও অবস পদের বিপরীতে দু’জনের পোস্টিং রয়েছে। তবে তারা যোগদানের পর থেকে একজন সংযুক্তিতে রয়েছেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অন্যজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন। জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) পদও শূন্য।
এক মাসের অধিক সময় ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক নেই জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমর্কর্তা ডা. সৌনম বড়ুয়া বলেন, অন্য উপজেলার চিকিৎসক দিয়ে পালাক্রমে এলাকার বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স স ব স থ য কমপ ল ক স চ ক ৎসক ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’
আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।
উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।