করনীতির ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিলেন বিশেষজ্ঞরা
Published: 27th, January 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কারের ওপর এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করনীতি বারবার পরিবর্তন হলে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা যথাযথভাবে করা যায় না। বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হন। ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির স্বার্থে করনীতির ধারাবাহিকতা থাকা দরকার। কোনো পরিবর্তনের চিন্তা থাকলে তার জন্য অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ এবং অনেক আগে থেকে ঘোষণা দেওয়া জরুরি। গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সিএ ভবনে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে এর আয়োজন করে।
সরকার গঠিত এনবিআর সংস্কার কমিটির সদস্য এবং সংস্থাটির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কোনো সময়সীমা দেওয়া হয়নি। তারা অন্তর্বর্তীকালীন একটি রিপোর্ট দিয়েছেন এবং চেষ্টা করছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের। তিনি মনে করেন, এনবিআর সংস্কারে প্রথম দরকার নীতি এবং প্রশাসন আলাদা করা। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ডিজিটাইজেশন। তাঁর মতে, এনবিআরকে ক্ষমতায়িত করতে হলে সংস্থাটিকে স্বাধীন করতে হবে।
সংস্কার কমিটির সদস্য এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড.
সংস্কার কমিটির সদস্য এবং এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও উৎসে করহার যৌক্তিকীকরণের ওপর জোর দেন। কমিটির আরেক সদস্য এবং এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন কার্যকর করহার অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেন। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ নীতির ধারাবাহিকতার ওপর জোর দেন। সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কারের প্রয়োজনীতা তুলে ধরেন।
বৈঠকে উপস্থাপনা করেন আইসিএবির সিইও শুভাশীষ বসু। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিএবি সভাপতি মারিয়া হাওলাদার। ইআরএফের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা। আলোচকদের মধ্যে ছিলেন ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির ও জামাল উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: করন ত ন ত র ধ র ব হ কত কম ট র র ওপর ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ