বিনা সুদে ঋনসহ নানা প্রতিশ্রুতি রেজা রিপন প্যানেলের
Published: 27th, January 2025 GMT
হোসিয়ারী এসোসিয়েশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র হোসিয়ারী মালিক ঐক্য ফোরাম এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার ( ২৭ জানুয়ারী) সকালে বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন ( ২০২৫ - ২০২৭) নির্বাচন উপলক্ষে দেওভোগ মার্কেট ও রিভার ভিউ কমপ্লেক্স দোকান মালিক ব্যবসায়ীবৃন্দদের সাথে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় স্বতন্ত্র হোসিয়ারী মালিক ঐক্য ফোরাম জেনারেল গ্রুপ পরিচালক পদপ্রার্থী ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, মোঃ আওলাদ হোসেন, বাবুল চন্দ্র দাস, মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ফকির, সুশান্ত পাল চৌধুরী, মোহাম্মদ আবুল বাশার বাসেত,মোহাম্মদ নাজমুল হক, দিদার খন্দকার, এসোসিয়েট গ্রুপের পরিচালক পদপ্রার্থী মোঃ মাসুদ রানা, নারায়ণ চন্দ্র মজুমদার, মোক্তার হোসেন, মোহাম্মদ মাসুম মোল্লা, ফারুক হোসেন, ইবনে মুহাম্মদ আল কাওসার ব্যবসায়ীদের সাথে পরিচিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রিভার ভিউ মার্কেট স্টকলট ব্যবসায়ী সভাপতি কে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, হাবিব শপিং কমপ্লেক্সের ফেডারেল কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আউয়াল, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, দেওভোগ মার্কেট এর ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, টান বাজার লোড আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন এম এ মান্নান সরকার সহ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মামুন, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মোর্শেদ, ব্যবসায়ী ইব্রাহীম খলীল ভূঁইয়া সহ অসংখ্য হোসিয়ারী মালিক ব্যবসায়ী বৃন্দ।
স্বতন্ত্র হোসিয়ারী মালিক ঐক্য ফোরাম জেনারেল গ্রুপ পরিচালক পদপ্রার্থী ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, ভোটারদের মর্যাদা হচ্ছে প্রার্থীরা তাদের কাছে ভোট চায়। ভোটারদের অধিকার হরণের জন্য সিলিকশনের মাধ্যমে চেয়েছিলো হোসিয়ারী নেতৃত্বে বসিয়ে দিতে। বিগত ১০/১২ বছর যাদের জন্য নির্বাচন হয়নি, তারাও আবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
বিগত দিনে এমনও প্রার্থীকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। বলেছে তুমি জঙ্গি তোমাকে মামলা দিয়ে দিবো। হোসিয়ারী ভবনে আটকে রেখেছে এমন ঘটনাও ঘটেছে। ৭২ টি প্লট ফেরত আসলে হোসিয়ারী মালিকদের মাঝে ক্ষুদ্র আকারে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ১ কোটি টাকা এফডিআর রয়েছে। এই টাকা দিয়ে কমজোর মালিক তাদের বিনা সুদে ঋনের ব্যবস্থা করবো। ভ্যাট দেন ২২শ। মানি রিসিট পান ১৫০০ বাকি ৭শ টাকা কার পকেটে যায়? প্রত্যেক মার্কেটে আলাদা মালিক সমিতি হবে। সমস্যা সমাধানের জন্য।
কারখানা মালিকদের ঝুট সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবস্থা নিবো। কমিনিউটি পুলিশ, থানা পুলিশের টহলের ব্যবস্থা থাকবে। পিকনিকের ব্যবস্থা হবে। কক্সবাজার ভ্রমন করবো এটা ওয়াদা।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালিনী সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ বলেন, ১ যুগ পরে একটা নির্বাচন পক্রিয়া চলছে। হোসিয়ারী সমিতির নির্বাচনের একটি ভোট হচ্ছে মালিকানা। সেই মালিকানা বুঝে পাবার সেই পক্রিয়াটি যারা করছে তারা হচ্ছে সতন্ত্র হোসিয়ারী মালিক ঐক্য ফোরাম।
তাদের আপনারা একটা করে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। পরিকল্পনা গুলা বাস্তবায়নের জন্য ভোটারদেরও এগিয়ে আসতে হবে। ভোটারিধিকার যেহুতু পেয়েছেন, এমন জায়গায় ভোট দিয়েন যেনো হোসিয়ারী সমিতি শিল্পের সক্ষমতায় অনেকদুর এগিয়ে যাবে। এই প্যানেল জিতলে আমি জিতে গেলাম।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র ব যবস ব যবস থ ব যবস য় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চালের দাম যেটুকু কমে বাড়ে তার চেয়ে বেশি
নিয়ন্ত্রণে আসছে না চালের বাজার। মাঝেমধ্যে দুই-এক টাকা কমলেও তা এক বা দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হচ্ছে না। যত টাকা কমে তার চেয়ে বাড়ছে বেশি। এক বছরের বেশি সময় ধরে চালের বাজারে এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
বন্যায় ফলন কম, সরবরাহ খরচ বেড়ে যাওয়া, ডলারের দাম বাড়ার কারণে আমদানি কম– এ রকম নানা ছুতা দেখিয়ে মূলত চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন মিলার ও করপোরেট ব্যবসায়ীরা।
ভোক্তা-সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, যথাযথ তদারকি ও সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায় চাল ব্যবসায়ী চক্র নিজেদের ভিত্তি শক্ত করে ফেলছে। বড় ব্যবসায়ীরা চালের বাজারে কলকাঠি নাড়লেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ভরা মৌসুমে কৃষক থেকে ধান কিনে নিজেদের কবজায় নিয়ে নেয় তারা। তারপর পুরো বছর বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। সরকার তাদের বাগে আনতে পারছে না। এতে বেশি ভুগতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষকে।
কোন চালের দর কত সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, বাজারে গত এক বছরে সরু চালের দর বেড়েছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। মাঝারি চালের প্রায় ৯ এবং মোটা চালের ৫ শতাংশ দর বেড়েছে। যদিও গত এক মাসে দাম বাড়ার এই হার কিছুটা কম। তবে সরেজমিন বাজারে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।
গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল, তেজকুনিপাড়া ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরু বা মিনিকেট চালের দাম সর্বোচ্চ দরের রেকর্ড ছুঁয়েছে। ভালো মানের (মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের) এ চালের কেজি এখন সর্বোচ্চ ৯০ টাকা।
বেড়েছে মোটা ও মাঝারি আকারের চালের দরও। খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি গুটিস্বর্ণা বা মোটা চাল ৫৩ থেকে ৫৫ এবং পাইজাম চাল ৫৬ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগে এসব চাল অন্তত ২ টাকা কমে কেনা গেছে। বিআর-২৮ জাত বা মাঝারি চালের কেজি মাসখানেকের ব্যবধানে প্রায় ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৬৬ টাকায়। আবার ভালো মানের বিআর-২৮ জাতের চিকন চাল ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ মিনিকেট বলে বিক্রি করছেন ৭০ থেকে ৭২ টাকায়।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সরু চালের। ৮০ টাকা নিচে এখন সরু চাল মিলছে না। মানভেদে এ ধরনের চালের কেজি কিনতে ভোক্তাকে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এক-দেড় মাস আগে এ ধরনের চালের কেজি ছিল ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা।
ক্ষুব্ধ ক্রেতা
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে ২৫ কেজি ওজনের এক বস্তা মিনিকেট (সরু) চাল কেনেন বেগুনবাড়ী এলাকার ইলেকট্রিশিয়ান শাহরিয়ার হোসেন। কত টাকায় কিনেছেন জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, ‘সবজির দাম কমায়া বাহাদুরি করলে হবে? মানুষ কী শুধু সবজি খায়? আগে তো গরিব বাঁচাতে হবে, তারপর বাকি আলাপ।’ একই বাজারে গাজী সাইফুল নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সরকার বড় ব্যবসায়ীদের ধরতে পারে না। এ জন্য চালের দামও কমে না।’
চালের সংকট নেই
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিপরীতে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারিভাবে আমদানি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৯ হাজার টন। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে আমদানি হয়েছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার টন চাল। সরকারি-বেসরকারি মিলে চলতি অর্থবছরের সাড়ে ৯ মাসে মোট আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ৭৭ হাজার টন। সরকারের গুদামে বর্তমানে প্রায় ৯ লাখ টন চাল মজুত রয়েছে।
অনেকে বাজারে সংকট আছে বলে আওয়াজ তুললেও মূলত চালের ঘাটতি নেই। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংকট শুধু মুখে মুখে। চাহিদামতো সব সময় চাল থাকে। এর আগে কখনই সরু বা চিকন চালের দাম এতটা বাড়েনি। তাদের অভিযোগ, চালের বাজার এখন মিলার এবং করপোরেট ব্যবসায়ীর হাতে।
তেজকুনিপাড়ার মায়ের দোয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মিলাররা বলে চালের সংকট। তবে যখন যত বস্তার অর্ডার দেই, পাই। মিলে না থাকলে চাল কোথা থেকে দেয়। নাই নাই বলে আতঙ্কে ফেলে দাম বেশি নেয়।’
কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী জনতা রাইস এজেন্সির মালিক মো. রাসেল বলেন, ‘গত বছর নির্বাচনের পর থেকে দাম বাড়ছে। সেই যে বাড়া শুরু হইল আর কমাতে পারল না সরকার।’ তবে আগামী সপ্তাহ থেকে বোরো ধান আসা শুরু হলে দাম কমতে পারে বলে ধারণা এই ব্যবসায়ীর।
খুচরা আর মিলগেটে চালের দামের ব্যবধান অনেক বেশি বলে মনে করেন মিল মালিকরা। বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রশিদ সমকালকে বলেন, মিলাররা চাল বিক্রির সময় পাইকারি ব্যবসায়ীকে চালান সরবরাহ করেন। তাতে চালের ক্রয়মূল্য লেখা থাকে। সরকারের উচিত ব্যবসায়ী পর্যায়ে চালান খোঁজ করে ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের ফারাক দেখা। আর যদি কোনো মিলার চালান সরবরাহ না করেন তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
এবারও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে উল্লেখ করে শীর্ষস্থানীয় এই মিল মালিক বলেন, চাল নিয়ে বেশি টেনশন করতে হবে না। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে মিল, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সরকারের কঠোর নজরদারি দরকার। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর কারণে মিলারদের বিপদে পড়তে হয়।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, চালের বাজার দীর্ঘদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। এর মূল কারণ বাজারে তদারকি নেই। করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিলার একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে দাম বাড়ান। যারা এই সিন্ডিকেটে জড়িত আবার তারাই আমদানিকারক। আমদানি ও মজুত সবই তাদের হাতে। ফলে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে বাজার।
যদিও বাজারে তদারকি অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি সরকারের সংশ্লিষ্টদের। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আরীম আখতার খান বলেন, ‘চালের বাজার তদারকি হচ্ছে।’