ঘোষণা দিয়ে দল ছাড়লেন জাপা নেতা বাবুল
Published: 27th, January 2025 GMT
ঘোষণা দিয়ে দল ছেড়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর কমিটির আহ্বায়ক শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুল। যদিও ছাত্র-জনতার আন্দোলন-পরবর্তী সময় গত বছরের ১৭ আগস্ট জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগের পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর বিষয়টি আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে জানান তিনি।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের কারণ তুলে ধরেন বাবুল। তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের ২০ জুলাই আমি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে যুক্তরাজ্যে যাই। সেখানে অবস্থানকালেই দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন করি। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্র-জনতার ওই আন্দোলন প্রতিহত করতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত করে। তৎকালীন বিরোধী দল হিসেবে সে সময় জাতীয় পার্টি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই দলের দায়িত্বশীল সদস্য হয়ে আমি এ দায় এড়াতে পারি না। একজন সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে আমার পক্ষে নিরস্ত্র এবং নিরপরাধ মানুষ হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এই ঘৃণ্য অপরাধের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে আমি জাতীয় পার্টির সব দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বিষয়টি এতদিন গণমাধ্যমকে জানাতে পারিনি।’
কোনো দলে যোগ দেবেন কিনা প্রশ্নে বাবুল বলেন, ‘এখন আমি কোনো দলে যুক্ত নই। আমার ব্যবসা ও পত্রিকা নিয়ে থাকতে চাই। আপাতত কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা নেই।’
নজরুল ইসলাম বাবুল এক সময় মহানগর তাঁতী দলের সহসভাপতি ছিলেন। বিএনপির রাজনীতে যুক্ত থাকাবস্থায় কয়েক বছর আগে যোগ দেন জাপায়। গত সিটি নির্বাচনে দলের মেয়র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। গত শুক্রবার নগরীর সাগরদীঘিরপারের মৎস্য ভবনসংলগ্ন সরকারি জায়গা দখলের চেষ্টায় তাঁর নাম আসে। যদিও বাবুল দাবি করেন, এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় সংস্থার সভাপতি হিসেবে তিনি এলাকাবাসীর সঙ্গে ছিলেন। রাজনৈতিক কোনো দলের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪ বাসিন্দা
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এর আগে ওই যুবকদের গুলিতে স্থানীয় চার বাসিন্দা আহত হন। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকদের পরিচয় তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেননি পুলিশ। গুলিবিদ্দ স্থানীয় চার বাসিন্দা হলেন ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় মসজিদে ডাকাত পড়েছে এমন প্রচারের পর লোকজন জড়ো হয়ে অটোরিকশায় করে আসা দুই যুবককে আটক করে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হন।
এক যুবকের লাশের পাশ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই যুবককে আটকের আগে গুলির ঘটনায় আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলসহ সাতকানিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এখনো ওই দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।