সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব, সুবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
Published: 27th, January 2025 GMT
ভাড়া আদায় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় উত্তপ্ত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুবিপ্রবি) প্রাঙ্গণ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৬ দফা দাবি আদায়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, সোমবার সুনামগঞ্জ শহর থেকে বাসে করে শান্তিগঞ্জের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন সুবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আল-নাহিয়ান। বাসে শিক্ষার্থী হিসেবে হাফ ভাড়া দেওয়ার কথা বলায় হেলপারের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় তাঁর। এসময় আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন।
কিছু সময় পর হেলপারের পাশাপাশি বাসের চালকও নাহিয়ানের সঙ্গে তর্কে জড়ান। শান্তিগঞ্জে বাস থামানোর পর দু’পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা বেড়ে যায়। এ সময় প্রক্টর সেখ আব্দুল লতিফ দ্বন্দ্ব মিটিয়ে শিক্ষার্থীদের সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের সুবিপ্রবি’র অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় শিক্ষার্থী নাহিয়ানকে মারধর করেন বাসের হেলপার। এতে আহত হন নাহিয়ান। তাঁর ডান হাতে ৮টিরও বেশি সেলাই লেগেছে।
ক্যাম্পাসে এ কথা ছড়িয়ে পড়তেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টার দিকে তারা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং পরিবহন শ্রমিক নেতাদের হস্তক্ষেপে ৪৫ মিনিট পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। এদিকে বিকেলের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচির কথা জানান শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সুবিপ্রবি’র অফিসে আলোচনায় বসা পরিবহণ শ্রমিক নেতাদের কাছে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা এবং দাবি পূরণের জন্য সোমবার বিকেল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে আহত করা এবং পরিবহন চালকদের এমন আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুবিপ্রবি’র ডিন অধ্যাপক হারুনুর রশিদ।
শিক্ষার্থীরা জানান, শুরু থেকেই তারা দাবি করে আসছেন, সুবিপ্রবির সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ভাড়া অর্ধেক করতে হবে। সারাদেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে হাফ পাস প্রচলিত। শিক্ষকরা আশ্বস্ত করেছেন, দ্রুত এর সমাধান হবে। বিকেল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অভিযুক্ত চালক ও হেলপারকে ক্যাম্পাসে এসে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে হবে।
আহত শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান জানান, তাদের অন্যান্য দাবি হচ্ছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট-সুনামগঞ্জ রুটে সুবিপ্রবির সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীর হাফ পাস নিশ্চিত করা। তাদের সঙ্গে মার্জিত আচরণ করা। প্রতি বাসে হাফ পাসের লিফলেট টাঙানো এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা একজন হলেও বাস দাঁড়িয়ে থেকে তাঁকে নিয়ে যেতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সেখ আব্দুল লতিফ জানান, তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বাসের হেলপার শিক্ষার্থীর সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। ছেলেরা উত্তেজিত হওয়ার পর তিনি তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় নাহিয়ানের ওপর হামলা করা হয়। এর সুষ্ঠু সমাধান দরকার। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোও যৌক্তিক।
সুবিপ্রবির ডিন অধ্যাপক হারুনুর রশিদ জানান, এটি অত্যন্ত উদ্বেগের কথা। হাফ পাস চাইলে ছেলেদের ওপর হাত তোলাটা চরম অন্যায়। আশা করা যায়, পরিবহন নেতারা বিকেলের মধ্যে এর সমাধান করবেন।
শান্তিগঞ্জের ইউএনও সুকান্ত সাহা জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে নেন।
সুনামগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরুল হক জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানিয়েছেন। এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বিকেলের মধ্যেই অভিযুক্ত চালক ও হেলপারকে খুঁজে বের করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ সড়ক অবর ধ স ন মগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
১৫ চিকিৎসাকর্মী হত্যার ভিডিও প্রকাশ, কী আছে ভিডিওতে
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত ২৩ মার্চ ইসরায়েলি সেনারা কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি অগ্নিনির্বাপণের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকে যে নির্বিচারে গুলি চালান, সে ঘটনার ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এই ভিডিও চিত্রের সঙ্গে এ ঘটনা নিয়ে ইসরায়েলের দেওয়া বর্ণনার মিল নেই। ঘটনাটিতে ১৫ উদ্ধারকর্মী (চিকিৎসাকর্মী) নিহত হয়েছিলেন।
প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) এ ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সসহ ওই গাড়িগুলো রাতের অন্ধকারে সম্মুখবাতি জ্বালিয়ে ও জরুরি ফ্লাশলাইট চালু রেখে ছুটে চলেছে। হঠাৎই এসব যানের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু হয়। পিআরসিএস বলেছে, ভিডিওটি একজন প্যারামেডিকের ফোন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনিও ওই ঘটনায় নিহত হন।
ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজন চিকিৎসাকর্মী ইতিপূর্বে বিবিসিকে বলেছেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত করা ছিল এবং এগুলোর ভেতর ও বাইরের বাতি জ্বালানো ছিল।এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) যানবাহনগুলোর সম্মুখবাতি জ্বালানো ও জরুরি সংকেত বাতি চালু রাখার কথা প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করেছিল।
এখন ভিডিও প্রকাশিত হওয়ায় আইডিএফ বিবিসিকে বলেছে, ‘ওই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত ভিডিও চিত্রসহ সব দাবি পুঙ্খানুপুঙ্খ ও গভীরভাবে পরীক্ষা করে দেখা হবে। এর মাধ্যমে ঘটনাক্রম ও পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে, তা বোঝার চেষ্টা করা হবে।’
আরও পড়ুনগাজায় হামলা চালিয়ে চার শতাধিক মানুষ হত্যার পর নেতানিয়াহু বললেন, ‘এটা কেবল শুরু’১৯ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদের আহ্বান জানিয়ে কয়েক মুসলিম ধর্মীয় নেতার ফতোয়া জারি১৭ ঘণ্টা আগেওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজন চিকিৎসাকর্মী ইতিপূর্বে বিবিসিকে বলেছেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত করা ছিল এবং এগুলোর ভেতর ও বাইরের বাতি জ্বালানো ছিল।
প্রকাশিত ভিডিওর বিষয়ে পিআরসিএস বলেছে, এ ভিডিও দৃশ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে দেখানো হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, গুলিবর্ষণের মুখে অ্যাম্বুলেন্সসহ যানগুলো একটি রাস্তার ধারে থেমে যায়, তখনো সেগুলো থেকে আলো জ্বলছিল এবং অন্তত দুজন জরুরি কর্মী আলো প্রতিফলিত হয় এমন পোশাক পরে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে আহত শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি