ভাড়া আদায় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় উত্তপ্ত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুবিপ্রবি) প্রাঙ্গণ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৬ দফা দাবি আদায়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, সোমবার সুনামগঞ্জ শহর থেকে বাসে করে শান্তিগঞ্জের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন সুবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আল-নাহিয়ান। বাসে শিক্ষার্থী হিসেবে হাফ ভাড়া দেওয়ার কথা বলায় হেলপারের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় তাঁর। এসময় আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন।

কিছু সময় পর হেলপারের পাশাপাশি বাসের চালকও নাহিয়ানের সঙ্গে তর্কে জড়ান। শান্তিগঞ্জে বাস থামানোর পর দু’পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা বেড়ে যায়। এ সময় প্রক্টর সেখ আব্দুল লতিফ দ্বন্দ্ব মিটিয়ে শিক্ষার্থীদের সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের সুবিপ্রবি’র অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় শিক্ষার্থী নাহিয়ানকে মারধর করেন বাসের হেলপার। এতে আহত হন নাহিয়ান। তাঁর ডান হাতে ৮টিরও বেশি সেলাই লেগেছে।

ক্যাম্পাসে এ কথা ছড়িয়ে পড়তেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টার দিকে তারা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং পরিবহন শ্রমিক নেতাদের হস্তক্ষেপে ৪৫ মিনিট পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। এদিকে বিকেলের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচির কথা জানান শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সুবিপ্রবি’র অফিসে আলোচনায় বসা পরিবহণ শ্রমিক নেতাদের কাছে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা এবং দাবি পূরণের জন্য সোমবার বিকেল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে আহত করা এবং পরিবহন চালকদের এমন আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুবিপ্রবি’র ডিন অধ্যাপক হারুনুর রশিদ।

শিক্ষার্থীরা জানান, শুরু থেকেই তারা দাবি করে আসছেন, সুবিপ্রবির সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ভাড়া অর্ধেক করতে হবে। সারাদেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে হাফ পাস প্রচলিত। শিক্ষকরা আশ্বস্ত করেছেন, দ্রুত এর সমাধান হবে। বিকেল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অভিযুক্ত চালক ও হেলপারকে ক্যাম্পাসে এসে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে হবে।

আহত শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান জানান, তাদের অন্যান্য দাবি হচ্ছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট-সুনামগঞ্জ রুটে সুবিপ্রবির সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীর হাফ পাস নিশ্চিত করা। তাদের সঙ্গে মার্জিত আচরণ করা। প্রতি বাসে হাফ পাসের লিফলেট টাঙানো এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা একজন হলেও বাস দাঁড়িয়ে থেকে তাঁকে নিয়ে যেতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সেখ আব্দুল লতিফ জানান, তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বাসের হেলপার শিক্ষার্থীর সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। ছেলেরা উত্তেজিত হওয়ার পর তিনি তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় নাহিয়ানের ওপর হামলা করা হয়। এর সুষ্ঠু সমাধান দরকার। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোও যৌক্তিক।

সুবিপ্রবির ডিন অধ্যাপক হারুনুর রশিদ জানান, এটি অত্যন্ত উদ্বেগের কথা। হাফ পাস চাইলে ছেলেদের ওপর হাত তোলাটা চরম অন্যায়। আশা করা যায়, পরিবহন নেতারা বিকেলের মধ্যে এর সমাধান করবেন।

শান্তিগঞ্জের ইউএনও সুকান্ত সাহা জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে নেন।

সুনামগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরুল হক জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানিয়েছেন। এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বিকেলের মধ্যেই অভিযুক্ত চালক ও হেলপারকে খুঁজে বের করা হবে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ সড়ক অবর ধ স ন মগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

নারীকে গাড়ির সঙ্গে টেনে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের শিক্ষিকা ফারহানা আক্তার জাহান (৪৪)। শনিবার সকালে সিদ্ধেশ্বরীর গ্রিনল্যান্ড টাওয়ারের সামনে ঘটনা ঘটেছে।

ওই দিন সকালে কলেজের একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে বাসা থেকে বের হন ফারহানা আক্তার। বাসার সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করার সময় ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই ছিনতাই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা সৃষ্টি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রিনল্যান্ড টাওয়ারে তার বাসা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষিকা গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, গাড়িটি ওই নারীর সামনে আসার এক–দুই সেকেন্ডের মধ্যে ভেতর থেকে একজন ব্যাগটি টান দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই ওই নারীকে গাড়িটির সঙ্গে টেনে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এ সময় ট্রলি ব্যাগটি ঘটনাস্থলে থেকে যায়। পরে আশপাশে থাকা তিন ব্যক্তি দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এর মধ্যে একজন ট্রলি ব্যাগটির সামনে দাঁড়ান। বাকি দুজন ওই নারীর দিকে এগিয়ে যান। ৫০ সেকেন্ডের মাথায় ওই নারীকে আবার ঘটনাস্থলে এসে দাঁড়িয়ে উপস্থিত চার ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। এ সময় ভুক্তভোগী নারী অন্যদের হাতের কনুইয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখাচ্ছিলেন।

এ বিষয়ে ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফেসবুকে সিদ্ধেশ্বরীর এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ তাদের নজরে এসেছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালবৈশাখীতে ঘরবাড়ি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
  • দাউদ হায়দার: কবির দেশ ছাড়ার কষ্ট
  • নিউজ প্রকাশের জেরে জাবি সাংবাদিককে হুমকি, প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • নারী ও কন্যাশিশুরা কোথাও নিরাপদ নয়
  • ছিনতাইকারী টান দেয় ভ্যানিটি ব্যাগ, নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় প্রাইভেটকার
  • নারীকে গাড়ির সঙ্গে টেনে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা
  • সম্পর্কে এই ১০ আচরণ কখনোই সহ্য করবেন না
  • বিতর্কিত হৃদয়কে বাঁচাতে একাট্টা কেন ক্রিকেটাররা 
  • রাজনীতিতে আসা নিয়ে সেদিন যা বলেছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন
  • কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আদায়, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ