বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীসহ তার অনুসারীদের ফাঁসির দাবিতে রূপগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সাবেক এ মন্ত্রী ও তার অনুসারীদের ছবিতে জুতার মালা পরিয়ে বিক্ষোভ করেন।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার ভুলতা কাঁচাবাজার আড়তের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সারা দেশের মতো রূপগঞ্জ উপজেলায় অনেকে হতাহত হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়া লোকের পরিবারের কান্না থামছে না। আন্দোলনে কেউ ভাই হারিয়েছেন, কেউ সন্তান হারিয়েছেন। 

এ ছাড়াও অনেকে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই খুনি সন্ত্রাসীদের বাংলার মাটিতে বিচার অবশ্যই হতে হবে। সাবেক মন্ত্রী গাজীসহ তার দোসরদের ফাঁসি দিয়ে যথাযথ বিচারের দাবি জানাই।

রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ত নামে একটি কাঁচাবাজারের আড়ত সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার অনুসারীরা দখল করেছে বলে দাবি করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। 

তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নির্দেশে তার অনুসারী ডা.

মজিবুর মিয়া আড়তটি দখল করে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। 

ভুয়া চুক্তিনামা বানিয়ে আড়তের প্রকৃত মালিক সেলিম মিয়াকে ভাড়ার টাকা নিতে দফায় দফায় বাধা দিয়েছে। এভাবে সমগ্র রূপগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী গাজীর নির্দেশে তার লোকজন ও সন্ত্রাসীরা দখলদারিত্ব করে মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে। আমরা এই সন্ত্রাসীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা বাবু, রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদল নেতা ইয়াকুব মিয়া, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা জাহিদ হাসান সাকিবসহ শতাধিক এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক হত্যা মামলায় সাবেক মন্ত্রী গাজীকে আসামি করা হয়েছে। তিনি এখন হত্যা মামলার আসামি হয়ে কারাগারে রয়েছেন। 

এ ছাড়া তার ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজী ও তার অনুসারীদেরও একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স ব ক মন ত র র পগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।

এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।

এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের  প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”

আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”

তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ দাবিতে নোবিপ্রবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • সেন্টমার্টিনে পর্যটক উন্মুক্ত রাখার দাবি
  • সাদ্দা‌মের ফাঁসির দাবিতে দে‌বিদ্বা‌রে বি‌ক্ষোভ
  • মাছচাষিদের ‘পাওনা’ সাত কোটি টাকা, পুলিশ সদস্য লাপাত্তা