এ সময়ের কণ্ঠশিল্পী বর্ণালী সরকার। সংস্কৃতিমনা পরিবারে তার বেড়ে ওঠা। যার কারণে গানের প্রতি রয়েছে তার অন্যরকম ভালো লাগা। শৈশবেই গানের হাতেখড়ি। স্কুল-কলেজসহ ময়মনসিংহয়ের বিভিন্ন স্টেজে নিয়মিত পারফর্ম করেন। অন্য শিল্পীর গান কভার করে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন এই তরুণী।
প্রথমবারের মতো মৌলিক গান নিয়ে এলেন এই গায়িকা। ‘হৃদয়ের আয়না’ শিরোনামের গানটিতে তার সঙ্গে দ্বৈতভাবে কণ্ঠ দিয়েছেন সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী এফ এ প্রীতম। সালাউদ্দিন সাগরের কথায় গানটির সুর করেছেন এফ এ প্রীতম। সংগীতায়োজনে ছিলেন এস কে সাগর খান।
এ গান নিয়ে নির্মিত হয়েছে মিউজিক ভিডিও। গানের ভিডিওতে মডেল হয়েছেন আনান খান ও জয়া মির্জা। পরিচালনা করেছেন নোমান আরাফ। সম্প্রতি মিউজিক ভিডিওটি মুক্তি পেয়েছে রিয়েল লিঙ্ক মিউজিকের ইউটিউব চ্যানেলে।
আরো পড়ুন:
জুটি বাঁধলেন শিরিন শিলা-অমি
মুক্তা যেমন যত্নে রাখে স্ত্রী হিসেবে তেমন রেখেছো, স্বামীকে কনকচাঁপা
বর্ণালী সরকার বলেন, “জন্মদিনে আমার প্রথম মৌলিক গান মুক্তি পেয়েছে। এই দিনটি আমার জন্য বিশেষ। এ অনুভূতি অন্যরকম। সামনে আরো ভালো কাজ করতে চাই। গানের কথাগুলো সুন্দর। আমরা চেষ্টা করেছি, দর্শকদের সুন্দর একটি গান উপহার দেওয়ার। আশা করছি, গানটি সবার ভালো লাগবে।”
এফ এ প্রীতম বলেন, “বর্ণালী নতুন হিসেবে ভালো গেয়েছে। আশা করছি, ভালো সুযোগ পেলে ও আরো ভালো করবে। সবসময় ভালো কাজ করার চেষ্টা করি। গান গাওয়ার জন্য ঢাকায় এলেও কম্পোজার হিসেবে কাজ করছি। পাশাপাশি নিয়মিত গানও করব।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাংহাইয়ের জলাভূমিতে বিরল ডালমেশিয়ান পেলিকানের ফিরে আসা
বিশ্বের বৃহত্তম জলচর পাখি ডালমেশিয়ান পেলিকান, যা পূর্ব এশিয়ায় অত্যন্ত বিরল। মানুষের শিকার ও আবাসস্থল সংকটের কারণে এরা প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে সম্প্রতি সাংহাইয়ের একটি প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগারে দেখা গেছে ২৬টি ডালমেশিয়ান পেলিকান, যা এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ইঙ্গিত।
ডালমেশিয়ান পেলিকান ‘পেলিকান’ প্রজাতির বৃহত্তম সদস্য। এটি চীনের প্রথম শ্রেণির জাতীয় সুরক্ষার তালিকাভুক্ত। সাধারণত, এর দৈর্ঘ্য ১.৬ থেকে ১.৮ মিটার এবং ওজন ১০ কেজির বেশি হয়। পূর্ণবয়স্ক পাখির ডানার বিস্তার ৩ মিটারেরও বেশি এবং ওজন হতে পারে ১৫ কেজি পর্যন্ত।
বড় ঠোঁটের জন্য পেলিকান সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত হলেও পূর্ব এশিয়ায় ডালমেশিয়ান পেলিকানের সংখ্যা অত্যন্ত কম। এরা মূলত পশ্চিম মঙ্গোলিয়ায় প্রজনন করে এবং শীতকালে চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে চলে আসে।
আরো পড়ুন:
বিরল প্রজাতির সোনালি ঈগল উদ্ধার
সান-এলেক্সের বিরল ভালোবাসা
ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেসের এভিয়ান ইকোলজির অধ্যাপক মা ছিচুন জানান, মঙ্গোলিয়ার প্রজনন এলাকায় মানুষের শিকার ও পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে এদের আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে, যা এদের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।
সম্প্রতি, সাংহাইয়ের চিওতানশা ওয়েটল্যান্ড ন্যাচার রিজার্ভে ২৬টি বিরল ডালমেশিয়ান পেলিকান দেখা গেছে। এটি শহরের পরিবেশ সংরক্ষণ ও বাস্তুসংস্থান উন্নয়নের ইতিবাচক ফলাফল।
জানুয়ারিতে পৃথক দুটি পর্যবেক্ষণে ১৭টি পেলিকান শনাক্ত করা হয়, যা এ অঞ্চলে এদের পুনরাবির্ভাবের ইঙ্গিত দেয়। এর আগে, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এখানে মাত্র একটি পেলিকান দেখা গিয়েছিল।
সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের কর্মকর্তা চৌ তাওই জানান, ডালমেশিয়ান পেলিকান সাধারণত হ্রদ, নদী, জলাভূমি ও উপকূলীয় এলাকায় বাস করে। বিশেষ করে, যেখানে মানুষের হস্তক্ষেপ কম এবং বাস্তুসংস্থান সমৃদ্ধ, অর্থাৎ যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, কাঁকড়া, শামুক ও ব্যাঙ পাওয়া যায়।
চিওতানশা ওয়েটল্যান্ড ন্যাচার রিজার্ভটি ইয়াংজি নদী ও পশ্চিম চীন সাগরের মিলনস্থলে অবস্থিত। এই জনবসতিহীন অঞ্চলে মানুষের হস্তক্ষেপ নেই বললেই চলে, যা পাখিদের জন্য আদর্শ আশ্রয়স্থল।
২০২৩ সালের জুনে সংরক্ষণাগারটি ৬৩ প্রজাতির উচ্চতর উদ্ভিদ, ১২৬ প্রজাতির ম্যাক্রোফৌনা এবং ১৩৫ প্রজাতির মাছের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়। এছাড়াও আশেপাশের জলাভূমিতে ২৩৬ প্রজাতির পাখি রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০টি প্রজাতি চীনের প্রথম শ্রেণির জাতীয় সুরক্ষার অন্তর্ভুক্ত এবং ৪১টি প্রজাতি দ্বিতীয় শ্রেণির সুরক্ষার আওতায় রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাংহাই জলাভূমি সংরক্ষণে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে চীনের হলুদ সাগর-বোহাই উপসাগরের উপকূলীয় শহর চংমিং তোংতান বার্ড ন্যাচার রিজার্ভ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। একই বছরের ডিসেম্বরে সেখানে ১৮টি ডালমেশিয়ান পেলিকান পর্যবেক্ষণ করা হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সাংহাই জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য একটি বিশেষ পরিকল্পনা চালু করে। এর আওতায় ছয়টি মূল ক্ষেত্রের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়— সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার, ব্যবস্থাপনা, গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ, জনসাধারণের সম্পৃক্ততা এবং টেকসই ব্যবহার।
সাংহাইয়ের এই প্রচেষ্টা পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং ডালমেশিয়ান পেলিকানের মতো বিরল প্রজাতির পুনরাবির্ভাবের মাধ্যমে এর ইতিবাচক ফলাফল স্পষ্ট হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: সিসিটিভি
ঢাকা/হাসান/শান্ত