রাজবাড়ীতে বালু ব্যবসায়ী হত্যা, ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
Published: 27th, January 2025 GMT
রাজবাড়ীতে বালু ব্যবসায়ী সাফিন খান (৪০) হত্যা মামলায় ২ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকেল ৫টায় রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভীন চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মৃত সাফিন খান কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের বক্কার খানের ছেলে। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলো কুষ্টিয়ার খোকসা জেলার আমবাড়িয়া গ্রামের সালাম মন্ডলের ছেলে আরিফুজ্জামান আরিফ ও একই গ্রামের ইব্রাহীম প্রামানিকের ছেলে রুহুল আমিন প্রামাণিক।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সেনগ্রামের মুরাদ মন্ডলের ছেলে সামাদ মন্ডল, শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে ওয়াহেদ আলী প্রামাণিক, পাবনা সদর উপজেলার আকাই কাজীর ছেলে রশিদ কাজী, খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের সাত্তার মোল্লার ছেলে রাজীব মোল্লা, একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সবুজ মোল্লা ও মোতালেব মোল্লার ছেলে সাগর মোল্লা।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সাফিন খান দীর্ঘ ১৮ বছর সৌদি আরব ছিলেন। সেখান থেকে দেশে ফিরে বালুর ব্যবসা শুরু করেন। ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর তারিখে পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে একটি ফসলি ক্ষেত থেকে সাফিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগের দিন ১৬ ডিসেম্বর তারিখে সে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল।
সাফিনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার বড় ভাই ফরিদ হাসান বাদী হয়ে পাংশা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেখানে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে, পুলিশ মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে ওই পাঁচজনসহ আরও ছয়জনের মোট ১১ জনের সম্পৃক্ততা পায়।
তদন্ত শেষে ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেওয়া হয়। মূলত বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই তাকে হত্যা করা হয়। আদালত মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ছয়জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সাথে ২০১ ধারায় প্রত্যেককে সাত বছরের কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আরিফুজ্জামান আরিফ ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত রশিদ কাজী অনুপস্থিত ছিলেন।
মামলার অপর তিন আসামি সেলিম রানা, রতন মোল্লা ও কবীরুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে হত্যায় সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রাজবাড়ী আদালতের পিপি আব্দুর রাজ্জাক (২) বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা ছিল। আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে তিনি খুশী। এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’