নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে একটি বাণিজ্যিক পোল্ট্রি ফার্মে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হওয়ায় ১ লাখেও বেশি হাঁস মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্য বিভাগ। সাফোক কাউন্টি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা পরীক্ষার মাধ্যমে ১৭ জানুয়ারি উক্ত ফার্মে বার্ড ফ্লু শনাক্ত করেন। 

নিউ ইয়র্ক সিটি থেকে প্রায় ৬৬ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত ডাক ফার্মটির মালিক আকুয়েবোগের ক্রিসেন্ট ডাক। গত সপ্তাহে তারা প্রথম লক্ষ্য করেন যে উক্ত ফার্মের হাঁসের ঝাঁক অসুস্থ। সাফোক কাউন্টি স্বাস্থ্য বিভাগ পরীক্ষার মাধ্যমে ফার্মে বার্ড ফ্লু শনাক্ত করেন।

লং আইল্যান্ডের শেষ বাণিজ্যিক হাঁসের ফার্মটি বন্ধ করতে এবং ১ লাখেরও বেশি হাঁস নিধনের প্রক্রিয়া শুরু করতে বাধ্য করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে এক সপ্তাহের কিছু বেশি সময় লাগবে। সাফোক কাউন্টির স্বাস্থ্য কমিশনার ড.

গ্রেগসন পিগট বলেন, দুঃখজনকভাবে এমন পরিস্থিতিতে এখন পুরো ঝাঁক নিধন করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই, কেননা একটি ঝাঁক সংক্রমিত হয়েছে। 

স্বাস্থ্য বিভাগের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত কোনো ফার্ম কর্মীর অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সংস্পর্শে আসা কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেছেন এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের পরীক্ষা ও প্রতিরোধমূলক ওষুধ প্রদান করছেন। ড. পিগট জানিয়েছেন যে ওষুধগুলোর মধ্যে রয়েছে ট্যামিফ্লু এবং ট্যামিভির।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ফার্মের মালিককে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, যেমন সঠিকভাবে হাত ধোয়া এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহারের বিষয়ে শিক্ষাও প্রদান করা হচ্ছে। পিগট আরও বলেন, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি খুবই কম কারণ এই ভাইরাস বর্তমানে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয় না। সম্পূর্ণ তদন্ত চলছে কারণ সংক্রমিত পাখি থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ সংস্পর্শে থাকা কর্মীদের মধ্যে এইচ৫এন১ বার্ড ফ্লু সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে।

সাফোক কাউন্টি স্বাস্থ্য বিভাগ তাৎক্ষণিকভাবে এবিসি  নিউজের মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি। এবিসি নিউজ ক্রিসেন্ট ডাক ফার্মের কাছে মন্তব্য চেয়ে একটি বার্তা রেখে গেছে। বার্ড ফ্লু বা এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোল্ট্রি এবং ডেইরি গরুর মধ্যে প্রাদুর্ভাব ঘটাচ্ছে, সাম্প্রতিক মানব কেস পোল্ট্রি এবং ডেইরি কর্মীদের মধ্যে দেখা গেছে।

২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে দেশে মানব কেস সনাক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১০টি রাজ্যে ৬৭টি নিশ্চিত কেস রয়েছে। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুযায়ী। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে কোনো মানব কেস রিপোর্ট করা হয়নি।

মানব কেসগুলোর বেশিরভাগই মৃদু হয়েছে এবং রোগীরা পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেবল লুইজিয়ানায় ৬৫ বছরের বেশি বয়সী, অন্যান্য চিকিৎসাগত সমস্যা থাকা একজন রোগীর মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। সিডিসি এবং অন্যান্য জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে বর্তমানে মানব থেকে মানব সংক্রমণের কোনো প্রমাণ নেই এবং সাধারণ জনগণের জন্য ঝুঁকি কম।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন উইয র ক

এছাড়াও পড়ুন:

দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই

নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।

এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’

গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।

দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ