বাদ পড়ছে ভিকি-রাশমিকার ‘আপত্তিকর নাচ’
Published: 27th, January 2025 GMT
আপত্তির মুখে রাশমিকা মান্দানা ও ভিকি কৌশলের নাচের দৃশ্য কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ‘ছাবা’ সিনেমার পরিচালক লক্ষ্মণ উতেকার। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই নির্মাতা।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ‘ছাবা’ সিনেমায় সম্ভাজি মহারাজের সঙ্গে তার মহারাণী যিশুবাইয়ের লেজিম নৃত্য পরিবেশনের দৃশ্য রয়েছে, যা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে পরিচালক লক্ষ্মণ উতেকার বলেন, “আমি রাজ ঠাকরের সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি জানাশোনা মানুষ। তাই আমি তার কাছ থেকে কিছু পরামর্শ এবং নির্দেশনা নিয়েছি। আমি এটা বলতে পারি, তার কথাগুলো আমার জন্য খুবই সহায়ক। তার সঙ্গে দেখা করার পর, আমি সেসব দৃশ্যগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেখানে আমরা সম্ভাজি মহারাজকে লেজিম নৃত্য করতে দেখাতে চেয়েছিলাম।”
আরো পড়ুন:
নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছেন না রাশমিকা
যশুবাই রূপে রাশমিকা
ভারতের মহারাষ্ট্রের একটি লোকনৃত্য লেজিম। এ নাচে অন্তত পক্ষে ২০ জন নৃত্যশিল্পী অংশ নিয়ে থাকেন। এ নাচের চেয়ে সম্ভাজি মহারাজের গুরুত্ব অনেক। তা জানিয়ে লক্ষ্মণ উতরেকার বলেন, “লেজিম নাচ বড় কোনো বিষয় নয়। লেজিম নাচের চেয়ে সম্ভাজি মহারাজ অনেক বড়। তাই আমরা চলচ্চিত্রটি থেকে সেই দৃশ্যগুলো কেটে ফেলতে যাচ্ছি।”
কয়েক দিন আগে ‘ছাবা’ সিনেমার ট্রেইলার প্রকাশিত হয়। তাতে ভিকি-রাশমিকার ‘আপত্তিকর নাচের’ দৃশ্য দেখা যায়। ট্রেইলার প্রকাশের পরই মহারাষ্ট্রের একাধিক মন্ত্রী আপত্তি জানান। শুধু তাই নয় এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফার্নাভিস উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দৃশ্যটি সিনেমায় রাখা হলে মহারাষ্ট্রে ‘ছাবা’ সিনেমা মুক্তি দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রীরা।
রাশমিকা অভিনীত ‘ছাবা’ সিনেমা আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। সিনেমাটির গল্প শিবাজির পুত্র ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজের জীবনের ওপর ভিত্তি করে। দীনেশ বিজন প্রযোজিত সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন লক্ষ্মণ উতেকার।
সিনেমাটিতে ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজের চরিত্রে ভিকি কৌশল ও মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের চরিত্রে অক্ষয় খান্নাকে দেখা যাবে। সম্ভাজি মহারাজের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাশমিকা মান্দানা। এ ছাড়া অভিনয় করেছেন— আশুতোষ রানা, ডিয়ানা পেন্টি, দিব্যা দত্ত প্রমুখ।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন আপত ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি–জামায়াতের বাইরে অভ্যুত্থানের পক্ষের দলগুলোর নির্বাচনী জোট করা ছাড়া পথ কী
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে সব পর্যায়ে রাষ্ট্র সংস্কারের দমকা হওয়া উঠেছিল। কিন্তু নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারের পালে হঠাৎ করে হাওয়া কমে গেছে বলেই মনে হচ্ছে।
দ্বিদলীয় গণতন্ত্রে এক দল পলাতক হলে অন্য দল যে খোলা মাঠে গোল দিতে নির্বাচন চাইবে, সেটা স্বাভাবিক। অন্যদিকে নির্বাচন গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রাণভোমরা। তাই নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করাতে গণতন্ত্রকামী অন্য দলগুলোও তাদের নির্বাচনী হিসাব মেলাতে বাধ্য হওয়ার কথা। এমনকি নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করা দলও তাদের বৈধতা প্রমাণ করতে নির্বাচনের রাজনীতির দিকেই ঝুঁকবে।
কিন্তু একদলীয় নির্বাচনী ভাগ্যচক্রে অন্য দলগুলো কী পরিণতি আশা করতে পারে?
ভোটের হিসাবে বিএনপির পর দ্বিতীয় শক্তিশালী দল জামায়াত কোনো নির্বাচনেই পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট পায়নি। তাই তাদের পক্ষে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫টি আসন পেতেই হিমশিম খাওয়ার কথা। দ্বিতীয়-তৃতীয় সারির দলগুলো এক নেতা, এক দল; তাই তারা সম্মিলিতভাবে ১০টির বেশি আসনে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে হয় না। কিন্তু তাদের আসনে বিএনপি যদি প্রার্থী দেয়? তাহলে বোধ হয় তারা নিজেরাই বিশ্বাস করে না যে তারা ১০ ভাগ ভোট পেতে পারে। জিতে আসা তো অনেক দূর।
বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে এই জোটই সংসদের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায়ও আওয়াজ তুলতে পারবে। সেটা একদিকে আওয়ামীতন্ত্রে ফেরার ঝুঁকি কমাবে, আবার অন্যদিকে গণতন্ত্রের আওয়াজ জারি রাখলে পাঁচ বছর পরের যে সংসদ, সেখানে ক্ষমতা নির্ধারণ তাদের হাতেই থাকবে।ছাত্রদের নতুন দলে হাতে গোনা কয়েকজনের জাতীয় পরিচিতি থাকলেও এলাকার রাজনীতি তাঁরা করেননি। তাই রাষ্ট্রীয় সমর্থনবিহীন নির্বাচনী পাশা খেলায় তাঁরা নিজ নিজ আসনে কতটা কী করতে পারবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এদিকে বিএনপি বুঝতে পারছে যে একদলীয় নির্বাচনে ২৯০ সিট জিতে আসা তাদের জন্য বিপজ্জনক। বিরোধী দল না রাখার শেখ সাহেবের ’৭৩ সালের ভুল তাদের স্মরণে আছে নিশ্চয়ই। সে জন্য তারা তাদের মিত্রদের কাছে ১০০ সিট ছেড়ে দিতেও প্রস্তুত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এই সুযোগে মিত্র দলগুলো এখনই সংসদের সবুজ চেয়ারে বসার স্বপ্নের ডানায় উড়াল দিয়ে ফেলেছে।
এই স্বপ্নের যাত্রায় গণতন্ত্রের পক্ষের যে দলগুলো আওয়ামী জুলুমের সময় রাস্তায় ছিল, তারাও কি বুঝতে পারছে যে একবার বিএনপির আশীর্বাদের চাদরে ঢুকে গেলে তাদের ইনু-মেনন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না? আর ইনু-মেননরা যেহেতু রাস্তার রাজনীতি বিসর্জন দিয়েই যেহেতু সংসদে বসার দাসখত দেন, সামনের বিএনপির সময়েও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো এই কায়দায় রাস্তায় নামতে না পারার ঝুঁকিতে পরতে পারে।
আর রাস্তা ফাঁকা থাকলে মানুষ তো আর বসে থাকবে না। তখন হয়তো তারা তাদের স্বার্থেই আওয়ামী লীগকে ডেকে আনবে!
এমন একই পটভূমিতে ইতিহাস যাতে গুম-খুনের আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার বাঁক নিতে বাধ্য না হয়, সে জন্য বিএনপির বাইরে অভ্যুত্থানের পক্ষের নতুন-পুরোনো সব দল মিলে একটা নির্বাচনী জোট গড়ে তোলা ছাড়া কোনো সমাধান নেই।
বাংলাদেশের মানুষের অভিজ্ঞতা বলে যে বিএনপি আসলে আওয়ামী লীগেরই অন্য পিঠ। তাই মানুষের পক্ষের নির্বাচনী জোট সামনে এলে আগামী নির্বাচনে চমক দেখানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল। সেই নির্বাচনে যদি তারা পঞ্চাশের কম আসনও পায়, তারাই হবে প্রধান বিরোধী জোট। সেই সংসদে বিএনপি জোর জুলুম করতে চাইলে হয়ে সংসদে তারা জোরালো কণ্ঠে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারবে।
বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে এই জোটই সংসদের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায়ও আওয়াজ তুলতে পারবে। সেটা একদিকে আওয়ামীতন্ত্রে ফেরার ঝুঁকি কমাবে, আবার অন্যদিকে গণতন্ত্রের আওয়াজ জারি রাখলে পাঁচ বছর পরের যে সংসদ, সেখানে ক্ষমতা নির্ধারণ তাদের হাতেই থাকবে।
সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মী
[email protected]