রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। সোমবার উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের পাটিয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন– পাটিয়াকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, শিমুলিয়া গ্রামের শাহজাহান আলী, তাঁর ছেলে সেলিম হোসেন, একই গ্রামের নাজমুল আলী, পলাশ আলী, শাহু সর্দার ও কাজিম উদ্দিন মোল্লা। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
 
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ ও জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের তপশিল ঘোষণা করা হলে প্রধান শিক্ষক জাকারিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন আবু সাইদ চাঁদের সমর্থকরা। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। তারা প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগসূত্র আছে এমন অভিযোগ তুলে তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। এর পর থেকে প্রধান শিক্ষক গত ১০ দিন ছুটি নেন। ছুটি শেষে সোমবার সকালে পাশের গ্রাম থেকে লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। বহিরাগত আনায় উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। এসময় সরদহ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহাবুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।

আহত স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট প্রধান শিক্ষক ৩০-৪০ জন বহিরাগত ক্যাডার নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদের কাছে দেশীয় অস্ত্র ছিল। বাধা দিলে তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে।
 
প্রধান শিক্ষক এ কে এম জাকারিয়া বলেন, নিয়ম অনুযায়ী তপশিল ঘোষণা করে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন দিয়েছিলাম। কিন্তু একটি পক্ষ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। কয়েকজন স্বজনকে নিয়ে বিদ্যালয়ে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। 

চারঘাট মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ইউএনও এবং এসিল্যান্ড স্যারকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় উত্তেজনা থাকলেও পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ালো ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। সামরিক অভ্যুত্থানের চার বছর পূর্তির একদিন আগে এ ঘোষণা এলো। আজ শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতাসীন হয়। এরপর থেকে দেশটি গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের জয় পাচ্ছে। দেশের অনেক এলাকা এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে।

এদিকে জান্তা বাহিনী এ বছর নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রক্সির মাধ্যমে জেনারেলদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একটি প্রহসন হতে পারে এ নির্বাচন। কারণ, সেনাবাহিনী ক্ষমতা ধরে রাখতে বহুবার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে আবারও মেয়াদ বাড়ানো পরিস্থিতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।

রাষ্ট্র পরিচালিত এমআরটিভি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে জরুরি অবস্থা বৃদ্ধির ঘোষণা প্রচার করে বলেছে, সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য এখনো আরও অনেক কাজ বাকি আছে। বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রয়োজন।

নির্বাচনের জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে জান্তা সরকার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যদিও তারা দেশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার লড়াইয়ে ক্লান্ত। কারণ, তারা একাধিক ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এক সময় মিয়ানমারের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাজারে একটি প্রতিশ্রুতিশীল শক্তি হিসেবে দেখা হলেও এখন তা ব্যাপক চাপে রয়েছে। সামরিক বাহিনী একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছে এবং দেশটির জনগণের ওপর চাপ দিন দিন বাড়ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ