পিকনিকের নাচ-গানের ভিডিও ভাইরাল, অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য করলেন শিক্ষার্থীরা
Published: 27th, January 2025 GMT
শিক্ষার্থীদের নাচ-গানের একটি ভিডিও গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা তাকে নিজ অফিস কক্ষে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। আজ রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলা আইসিটি অফিস থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার কম্পিউটার ল্যাবটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। গত ২৪ জানুয়ারি ছুটির দিনে প্রশিক্ষণার্থীরা ক্লাস শেষে সেখানে পিকনিক করেন। পিকনিক শেষে তারা নাচ-গান পরিবেশন করেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে আজ সকালে মাদরাসা খুললে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন। একপর্যায়ে অফিস কক্ষে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ৪ ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে তাদের দেওয়া একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন অধ্যক্ষ নুরুল হুদা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক হুসাইন আহমেদ বলেন, ‘রাতে নাচ-গানের একটি ভিডিও আমার কাছে আসে। সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি, বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখি, শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির গেট তালা দিয়েছেন। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন।’
মাদরাসার কামিল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, ‘নাচ-গানের ভিডিও ইসলামের অনুভূতিতে আঘাত এনেছে। একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা আমরা মানতে পারিনি। এর জন্য অধ্যক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। তার বিচার হোক।’
মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদা বলেন, ‘ঘটনার দিন শুক্রবার মাদরাসা বন্ধ ছিল। সেদিন আমি মাদরাসাতে ছিলাম না। তার অনুমতি না নিয়ে প্রশিক্ষক প্রবির বিশ্বাস পিয়নের থেকে চাবি নিয়ে ল্যাবের রুমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের। শুনেছি, বিকেলে শিক্ষার্থীরা পিকনিক করে এবং নাচ-গানও করেছিল। যেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। আজ মাদরাসা খুললে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল ১০টায় অফিস কক্ষে আমাকে অবরুদ্ধ করে পদত্যাগের চাপ দিতে থাকে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবহিত করা হয়। কিন্তু জেলার একটি মিটিংয়ে থাকায় তিনি আসতে পারেননি। তবে তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তাকে মাদরাসাতে আসেন। কিন্তু তিনিও কোনো সুরাহা করতে পারেননি। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের চাপে দুপুর ২টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।’ তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। দ্রুতই শিক্ষকদের ডেকে সার্বিক বিষয়ে বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো সরকারি নির্দেশনায়ও নেই।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ পদত য গ পদত য গপত র পদত য গ
এছাড়াও পড়ুন:
টিকটকে পরিচয় থেকে বিয়ে, এরপর হঠাৎ 'নিখোঁজ' স্বামী
টিকটকে পরিচয়ের সূত্র ধরে মৌলভীবাজারের এক তরুণের সঙ্গে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আদালতে গিয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন তারা। একপর্যায়ে নববধূর কাছ থেকে পালিয়ে যান ওই তরুণ। পরে স্বামীর খোঁজে তার গ্রামের বাড়িতে এসে উপস্থিত হন ভুক্তভোগী। কিন্তু সেখানেও স্বামীকে পাননি। গতকাল সোমবার মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের কাটারাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায়।
ভুক্তভোগী তরুণীর ভাষ্য, তিনি পরিবারের সঙ্গে চট্টগ্রামে বসবাস করেন। টিকটকে গত জানুয়ারিতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাটারাই গ্রামের আপ্তাব আলীর ছেলে ওয়াকিব আলীর (২১) সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৩ এপ্রিল ওয়াকিব চট্টগ্রামে যান। ৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম সদরের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর তার পরিবারের সঙ্গেই অবস্থান করছিলেন ওয়াকিব। গত ১৫ এপ্রিল নামাজে যাচ্ছেন বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি ওয়াকিব। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এ অবস্থায় সোমবার স্বামীর সন্ধানে কাটারাই গ্রামে চলে আসেন ওই তরুণী। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ওয়াকিবের বাড়ির সন্ধান পেলেও স্বামীকে পাননি। পরে তিনি স্থানীয় খলিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হন। তরুণীর দাবি, তার স্বামীকে পরিবারের সদস্যরা প্রতিবেশীর বাড়িতে লুকিয়ে রেখে রেখেছেন এবং তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। স্বামীর সন্ধান পেতে বর্তমানে তিনি চেয়ারম্যানের বাড়িতে রয়েছেন।
ওয়াকিবের বাবা আপ্তাব আলী জানান, ব্যবসার টাকা ছয়-নয় করে তার ছেলে গত ঈদের আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বর্তমানে ছেলের অবস্থান সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাটারাই গ্রামের কয়েকজন জানান, গত রোববার বিকেলেও ওয়াকিবকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে খলিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু মিয়া চৌধুরী জানান, স্বামীকে খুঁজতে আসা এক তরুণী তার বাড়িতে রয়েছেন। বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করছেন তিনি।