শিক্ষার্থীদের নাচ-গানের একটি ভিডিও গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা তাকে নিজ অফিস কক্ষে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। আজ রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলা আইসিটি অফিস থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য কালীগঞ্জ শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসার কম্পিউটার ল্যাবটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। গত ২৪ জানুয়ারি ছুটির দিনে প্রশিক্ষণার্থীরা ক্লাস শেষে সেখানে পিকনিক করেন। পিকনিক শেষে তারা নাচ-গান পরিবেশন করেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে আজ সকালে মাদরাসা খুললে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন। একপর্যায়ে অফিস কক্ষে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ৪ ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে তাদের দেওয়া একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন অধ্যক্ষ নুরুল হুদা। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক হুসাইন আহমেদ বলেন, ‘রাতে নাচ-গানের একটি ভিডিও আমার কাছে আসে। সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি, বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখি, শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির গেট তালা দিয়েছেন। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন।’ 

মাদরাসার কামিল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, ‘নাচ-গানের ভিডিও ইসলামের অনুভূতিতে আঘাত এনেছে। একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা আমরা মানতে পারিনি। এর জন্য অধ্যক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। তার বিচার হোক।’ 

মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল হুদা বলেন, ‘ঘটনার দিন শুক্রবার মাদরাসা বন্ধ ছিল। সেদিন আমি মাদরাসাতে ছিলাম না। তার অনুমতি না নিয়ে প্রশিক্ষক প্রবির বিশ্বাস পিয়নের থেকে চাবি নিয়ে ল্যাবের রুমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের। শুনেছি, বিকেলে শিক্ষার্থীরা পিকনিক করে এবং নাচ-গানও করেছিল। যেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। আজ মাদরাসা খুললে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল ১০টায় অফিস কক্ষে আমাকে অবরুদ্ধ করে পদত্যাগের চাপ দিতে থাকে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবহিত করা হয়। কিন্তু জেলার একটি মিটিংয়ে থাকায় তিনি আসতে পারেননি। তবে তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তাকে মাদরাসাতে আসেন। কিন্তু তিনিও কোনো সুরাহা করতে পারেননি। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের চাপে দুপুর ২টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।’ তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। দ্রুতই শিক্ষকদের ডেকে সার্বিক বিষয়ে বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো সরকারি নির্দেশনায়ও নেই।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ পদত য গ পদত য গপত র পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়ায় সালিশি বৈঠকে পক্ষপাতিত্বের জেরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং শোলাকুড়া বাজারের ১৮-২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। 

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফার সংঘর্ষ চলাকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংড়া ইউনিয়নের পীরবাড়িতে একই ইউনিয়নের মুলিয়া এবং সাকরাইল গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে মুলিয়া গ্রামে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। বৈঠক চলাকালে শুকুর মাহমুদের পক্ষপাতিত্বমূলক কথার জের ধরে পুনরায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা শুকুর মাহমুদ গুরুতর আহত হন। এ খবর তার নিজ গ্রাম সহদেবপুর পৌঁছালে তারাও এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এরপর ত্রিমুখী সংঘর্ষে সালিশি বৈঠকে আসা স্থানীয় বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়াও কয়েক জন ব্যক্তি সামান্য আহত হন। এ সময় শোলাকুড়া বাজারে হামলা চালিয়ে ১৮-২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং দোকানগুলোতে লুটপাট চালানো হয়।

এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের তিন দিকে তিন গ্রামের বাসিন্দারা অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এসময় ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনি।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 
  • বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
  • ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
  • বাগবিতণ্ডা-হাতাহাতির একপর্যায়ে যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
  • বগুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় মা–মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, অভিযোগ মেয়ের সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে