গাজা খালি করার ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখান ফিলিস্তিন-মিশর-জর্ডানের
Published: 27th, January 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি ভয়াবহ গণহত্যার শিকার গাজা উপত্যকা ‘খালি’ করার ব্যাপারে যে প্রস্তাব দিয়েছেন, আরব বিশ্বজুড়ে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
ট্রাম্প শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত বিশেষ বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দাবি করেন, গাজা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এবং এটি পরিষ্কার করার জন্য সেখানকার অধিবাসীদের সরিয়ে দেয়া উচিত। তিনি গাজাবাসী ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী দেশ মিশর ও জর্দানে স্থানান্তর করার প্রস্তাব দেন।
পার্স টুডের খবরে বলা হয়েছে, যে গাজাবাসী গত ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভূমি ত্যাগ করতে রাজি হয়নি এখন সেই গাজাবাসীকে তাদের উপত্যকা পরিষ্কার করার অজুহাতে গাজা থেকে বিতাড়ন করতে চান ট্রাম্প যা ফিলিস্তিনি জনগণ ভালোভাবে নেয়নি।
আরো পড়ুন:
৩ দিনে গাজায় ঢুকেছে আড়াই হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক
৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিল ইসরায়েল
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে অবস্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে ‘গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যে যেকোনো প্রকল্পের’ তীব্র প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি জনগণ ‘তাদের ভূমি এবং পবিত্র স্থান ত্যাগ করবে না।’
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি চান জর্ডান এবং মিশর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে যাক। যুক্তরাষ্ট্র ‘পুরো এলাকাটি পরিষ্কার করবে।’
জর্ডান এবং মিশর ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, “আমরা ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালে আমাদের জনগণের ওপর যে বিপর্যয় নেমেছিল তার পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।”
গাজার বাসিন্দারা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বক্তব্য ‘নাকবা’ নামক ফিলিস্তিনের আধুনিক ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যখন ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কয়েক মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক তাদের পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
মাহমুদ আব্বাস ‘পূর্ব জেরুজালেমসহ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমির ঐক্যকে ক্ষুণ্ন করে এমন যেকোনো নীতি’ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি ট্রাম্পকে ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া গাজা জিম্মি-যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সমর্থন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও বলেছেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের শাসনভার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার ফলে ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধে এখন যুদ্ধবিরতি চলছে। এসময়ে গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তরে ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতি গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম এএফপিকে বলেছেন, “ফিলিস্তিনিরা গত কয়েক দশক ধরে যেভাবে তাদের জন্য কথিত বিকল্প ভূমিতে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে তেমনি তাদেরকে বলপূর্বক গাজা ত্যাগ করতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হলেও তারা তা প্রতিহত করবে।”
গাজার আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ এক বিবৃতিতে গাজাবাসীকে সরিয়ে নেয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, “এ ধরনের পরিকল্পনার ফলে গাজাবাসীর ওপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালাতে ইসরায়েল দ্বিগুণ উৎসাহিত হবে।”
ট্রাম্প বলেছেন, ১৫ মাস যুদ্ধের পর গাজা একটি ‘ধ্বংসস্তুপ’ হয়ে উঠেছে। তিনি আরো যোগ করেছেন যে, তিনি জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের এই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন।
তবে, জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, “ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির প্রতি আমাদের প্রত্যাখ্যান দৃঢ় এবং পরিবর্তন হবে না। জর্ডান জর্ডানবাসীর পক্ষে এবং ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদের জন্য।”
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে ‘ফিলিস্তিনি ভূমিতে ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ়তার প্রতি অব্যাহত সমর্থন’ প্রকাশ করেছে। দেশটি বলেছে, ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে স্থানচ্যুতিকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে মিসর। সেটা স্বল্পমেয়াদে হোক, কিংবা দীর্ঘমেয়াদে।
মিশর এর আগে গাজা থেকে সিনাই মরুভূমিতে ফিলিস্তিনিদের ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির’ ইসরায়েলি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। মিশরের প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেছিলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তিকে ভেস্তে দিতে পারে।
জাতিসংঘের মতে, জর্ডান ইতিমধ্যেই প্রায় ২৩ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি শরণার্থীর আবাসস্থল। এই পরিবারগুলোকে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল সৃষ্টির পর বহিষ্কার করা হয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ষ ক র কর ইসর য় ল য গ কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধীদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান অগ্রহণযোগ্য
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যে গণঅভ্যুত্থান হয়, তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতার ফসল, সন্দেহ নেই। আন্দোলনটি জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহের আগে নেহাতই সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা অবসানের দাবিতে সীমাবদ্ধ ছিল, যদিও ১৪ জুলাই দেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের নাতি-পুতি’ বক্তব্যটি আন্দোলনে ঘৃতাহুতি দিয়েছিল। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে কয়েকজন সমন্বয়ককে ডিবি হারুনের অফিসে ধরে নিয়ে গিয়ে ‘মিডিয়া-ডিনার’ খাওয়ানোর দৃশ্য এবং সমন্বয়কদের একজনকে দিয়ে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় আন্দোলন সমাপ্ত করার ঘোষণা দিতে বাধ্য করা জনগণের ক্রোধকে দ্রুত ঘনীভূত করে। অন্যদিকে আন্দোলন মোকাবিলার জন্য পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মাস্তান বাহিনীকে লেলিয়ে দেন শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের, যার ফলে সারাদেশে এক দিনেই শতাধিক আন্দোলনকারীর প্রাণহানি ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে কারফিউ জারি করে তা বলবৎ করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কিন্তু কারফিউ প্রায় ১০ দিন চলার পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ৩ আগস্ট দুপুরে সামরিক বাহিনীর ঢাকায় অবস্থিত সব অফিসারের সভা (দরবার) ডাকেন। সভায় প্রধানত জুনিয়র অফিসাররা মতামত ঘোষণা করেন– সেনাবাহিনী জনগণের বিপক্ষে গুলি চালাবে না। সেনাপ্রধান তাদের মত মেনে নেন। সেনাবাহিনীর এই সিদ্ধান্ত জানাজানি হওয়ার পর ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিশাল সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা সরকারের পদত্যাগ চেয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। তাদের ঘোষিত ৬ আগস্টের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে এক দিন এগিয়ে ৫ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে ৪ আগস্ট আবারও ছাত্রলীগ-যুবলীগ-পুলিশের যৌথ বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন শেখ হাসিনা। ওই দিনও শতাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ওই দিন দেশের প্রায় ৪০০ থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। উপরন্তু, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় আক্রমণ চালিয়ে ১৩ জন ও নরসিংদীতে ৬ জন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সাহস হারিয়ে রণে ভঙ্গ দিয়ে থানা থেকে পালিয়ে যায়। সাধারণ মানুষ বুঝে যায়, শেখ হাসিনার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এ প্রেক্ষাপট তুলে ধরার কারণ এটা বলা, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী লাখ লাখ মানুষের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, শেখ হাসিনাকে উৎখাত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে কারা রয়েছে– সেটা তাদের কাছে বিবেচ্য ছিল না। শেখ হাসিনার স্থানে কে ক্ষমতায় আসবে– সেটাও তাদের ভাবনায় ছিল না। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের সাড়ে পাঁচ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর জনগণের সিংহভাগ বুঝতে পারছে– বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রভাবশালী সমন্বয়কদের বড় অংশ একটি বিশেষ মতের। আন্দোলনের সময় তারা তাদের পরিচয় সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাদের অনেকেই ছদ্মবেশে ছাত্রলীগের রাজনৈতিক পরিচয় পর্যন্ত ধারণ করেছিলেন। এখন শীর্ষ সমন্বয়করাই বলে বেড়াচ্ছেন, আন্দোলনের ভ্যানগার্ড ছিল ইসলামী ছাত্রশিবির, যদিও লাখ লাখ জনতার মিছিল সংঘটিত করার পেছনে ছাত্রশিবিরের কোনো দলীয় তৎপরতার চিহ্নই ছিল না।
এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে– সরকারে অন্তর্ভুক্ত ছাত্রনেতারাসহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় সমন্বয়ক, যারা বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে ইতোমধ্যে জনপরিসরে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন; তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শিবিরের লোক। এই ব্যাপারটি এখন জাতির সামনে একটি মহাবিপদ হিসেবে হাজির হয়েছে। কারণ তারা জাতির প্রধান ঐতিহাসিক অর্জন ও আদর্শ ‘মুক্তিযুদ্ধ’কে মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি সিংহভাগ সাধারণ মানুষের কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ১৯৭১ সালে কারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তা কারও অজানা নয়। তারা গণহত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ হিসেবে ‘আলবদর’ ও ‘আলশামস’ গঠন করেছিল। এই আলবদর ও আলশামস বাহিনীর ক্যাডাররা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ঘাতকদের সশস্ত্র সহায়তাকারী, গোয়েন্দা বাহিনী ও পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি নিজেরাও অত্যন্ত নৃশংস ঘাতকের ভূমিকা পালন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের অন্তিম লগ্নে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল রাও ফরমান আলীর নীলনকশা অনুসারে এই আলবদর বাহিনীর ক্যাডাররাই দেশের বুদ্ধিজীবী হত্যায় মেতে উঠেছিল।
মুক্তিযুদ্ধ নিছক একটি গণঅভ্যুত্থান ছিল না। ছিল এক জনযুদ্ধ, যেখানে ধনী-গরিব-মধ্যবিত্ত সব অংশের প্রায় সব সদস্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল। এ কথা সত্য, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে দুই বা আড়াই লাখ মানুষ। কিন্তু ভারতের মাটিতে গড়ে ওঠা শরণার্থী শিবিরের এক কোটিরও বেশি মানুষ বলতে গেলে সরাসরি এর সঙ্গে যুক্ত ছিল। দেশের ভেতরে কত লাখ পরিবার যে মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহায়তা করেছে, তার কোনো হিসাব নেই। সর্বোপরি এ যুদ্ধের প্রস্তুতি চলেছে পাকিস্তানি শাসনের প্রায় ২৩ বছর ধরে। ফলে এর স্মৃতি, আবেগ ও চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলবে।
মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি যদি মনে করে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়ন্ত্রণকারী সমন্বয়কদের মদদ পেলেই তারা জনগণকে ধোঁকা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা স্বীয় কবজায় রাখতে পারবে– তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদেরও বলতে চাই, তাদের এই বিশেষ মহলকে তোষণ এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বক্তব্য ও অবস্থান দেশের সিংহভাগ জনগণ মোটেও পছন্দ করছে না।
অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করেছে, সেগুলোর প্রতিবেদনে যদি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার কিংবা খাটো করার কোনো প্রয়াস দৃশ্যমান হয়, তাহলে তাদেরও জনরোষ মোকাবিলা করতে হবে। সম্প্রতি ছাত্রদের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে বেশ হইচই হলো। বলা হচ্ছে, সব রাজনৈতিক দলের মত নিয়ে এই ঘোষণাপত্র সরকার দেবে। এই ঘোষণাপত্র আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা, আমরা জানি না। তবে এতে যদি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অর্জন সংবিধানকে ‘ছুড়ে ফেলা’র মতো কোনো কোনো সমন্বয়কের দম্ভোক্তির প্রতিফলন ঘটে, তাহলে জনগণ এর উদ্যোক্তাদের শুধু রুখে দাঁড়াবে না, ছুড়েও ফেলতে পারে– আগেভাগেই এই সাবধানবাণী উচ্চারণ করছি।
অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম: একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ; সাবেক সভাপতি
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি