জামালপুরে অর্থ কষ্ট আর উন্নত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর দিনক্ষণ গুনছেন দৈনিক দি বাংলাদেশ টুডের সাংবাদিক এম সুলতান আলম। দীর্ঘ কর্ম জীবনে সংবাদের পেছনে ছুটেছেন শহর থেকে উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম ও দুর্গম চরাঞ্চলে। তার সেই ছুটে চলা প্রাণবন্ত মানুষটি এখন পড়ে আছেন ভাঙ্গাচোড়া বসতঘরে। সদা হাস্যোজ্জ্বল নিঃসন্তান সিনিয়র সাংবাদিক এম সুলতান আলমের এমন অবস্থা দেখে অশ্রু সংবরণ করা যাচ্ছে না।

ক্যান্সার আক্রান্ত সাংবাদিক এম সুলতান আলম জামালপুর শহরের লাঙ্গলজোড়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের সন্তান। এম সুলতান আলম স্ত্রী শাহিদা আক্তার মলিকে নিয়ে বাস করেন একটি দোচালা ঘরে। ৫৫ বছর বয়সী এ মানুষটি সাংবাদিকতায় কাটিয়েছেন ৩০টি বছর।

ভাতিজা শাহরিয়ার হাসান উল্লাস জানান, ২০২৪  সালের ১২ ডিসেম্বর এম সুলতান আলম অসুস্থ হয়ে পড়েন। পেট ব্যথা নিয়ে প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও কোনো সমাধান না পাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৩১ ডিসেম্বর গলব্লাডার ও লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চিকিৎসকেরা। এরপর ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। উন্নত চিকিৎসার অভাব ও শারীরিক জটিলতায় নিজ বাড়িতে ধুকে ধুকে দিন পার করছেন তিনি। এখন তিনি কিছু খেতে পারেন না। আর তার কথা স্পষ্ট হচ্ছে না। একদম শুকিয়ে গেছেন।

আরো পড়ুন:

বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে দুদকের অভিযান

ফরিদপুরে হামলায় ৩ ডিবি পুলিশ আহত

স্ত্রী শাহিদা আক্তার মলি জানান, তাদের নিজস্ব অর্থ, সম্পত্তি বলতে কিছু নেই। যা সামান্য ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা করানোর পর এখন হাত শূন্য। এখন অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে তিনি দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছেন।

শাহিদা আক্তার মলি আরো জানান, তার চিকিৎসার জন্য ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। সরকার বা কোনো বিত্তবান ব্যক্তি যদি পাশে দাড়ান তাহলে উপকার হয়। কেউ চাইলে ব্যাংক হিসাব বা বিকাশে টাকা দিতে পারেন। (এম সুলতানা আলম, হিসাব নং ১৫৬০১০১০৭০৬৬৬, পূবালী ব্যাংক, জামালপুর শাখা। আর বিকাশ নম্বর ০১৭১৬৫১৭৩৩৫)

প্রেস ক্লাব জামালপুরের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘সাংবাদিক সুলতান আলম সৎ সাংবাদিক হিসেবে আমাদের কাছে দৃষ্টান্ত। অসুস্থতার পর থেকে আমরা তার পাশে দাঁড়িয়েছি। তবে এর পরিমাণ খুবই সামান্য। কারণ তার চিকিৎসা ব্যয়বহুল। এখন সরকার আর সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তি যদি তার পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে অসময়ে একজন ভালো মানুষকে হারাতে হবে।’’

ঢাকা/শোভন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা

সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য  শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭

রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু

হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।

সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।

মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ