ভুলে আটক হওয়া এই তরুণের বিয়ে ভেঙেছে, চাকরিও হারিয়েছে
Published: 27th, January 2025 GMT
বলিউড নবাব সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় নিত্য নতুন তথ্য সামনে আসছে। এখন পর্যন্ত হামলাকারীর সঠিক পরিচয় শনাক্ত হয়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, হামলাকারী বাংলাদেশি নাগরিক। যা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বেশ।
এবার ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিপোর্টে নতুন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এই মামলায়। প্রশ্ন উঠেছে, শরিফুল ইসলাম শেহজাদ কি আদৌ সাইফ আলী খানের হামলাকারী? এদিকে সাইফের ওপর হামলার সন্দেহে ভুলবশত আটক করা ব্যক্তি আকাশ কানোজিয়ার জীবন এখন দূর্বিষহ! চাকরি হারিয়েছেন, বিয়েও ভেঙে গেছে তার।
সম্প্রতি অভিনেতার হামলাকারী হিসেবে একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যার নাম আকাশ কানোজিয়া। ৩১ বছর বয়সী আকাশ কৈলাস কানোজিয়াকে ভুলবশত ধরেছিল মুম্বাই পুলিশ।
তারপর তার জীবন একদম দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সাইফের ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর তার অতীত বর্তমান সব শেষ হয়ে গেছে বলেই দাবি করেছেন তিনি। সেই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তার বিয়ে পর্যন্ত ভেঙে গিয়েছে! তার জীবনে যে দুর্ভোগ এভাবে নেমে আসবে তিনি ভাবতেও পারেননি।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে আকাশ বলেন, ‘একটা জিনিষ পুলিশ কী করে তাহলে ভুলে গেল, এবং তাদের নজরে পড়ল না যে আমার একটা গোঁফ আছে! যেখানে, সেই ব্যক্তি যিনি সাইফ আলী খানকে আক্রমণ করেছিলেন, তার গোঁফ দাঁড়ি কিছু নেই। আমায় এভাবে কেন আটক করা হল? তার থেকেও বড় কথা, আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেল।’
জানা গেছে বিলাসপুরের আকাশ মুম্বাই এসেছিলেন তার হবু স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু এখন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনায় বেশ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার জীবনে।
তিনি জানিয়েছেন, ‘আরপিএফ পার্সোনাল শুধু আমায় গ্রেপ্তার করেননি। বরং প্রেস রিলিজ দিয়ে আমার ছবি দিয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হল।
টিভি চ্যানেল থেকে মিডিয়া সর্বত্র আমায় দেখানো হল। এবং এর ফলস্বরূপ আমার সঙ্গে মেয়ের বাড়ির লোক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে না। তারা বিয়েটা ভেঙে দিয়েছে এবং আমার কাজটাও চলে গিয়েছে। আমি এখন পুরো ফাঁকা হাত। কেমন যেন ওলটপালট হয়ে গেল জীবনটা!’
ভুক্তভোগী আকাশ হতাশ হয়ে পড়েছেন এই ঘটনায়। তিনি পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছিলেন যেন, সবকিছু ভাল করে খতিয়ে দেখা হয়। তারপরেও পুলিশ শোনেননি।
এদিকে সাইফের ওপর হামলার সন্দেহে আটক শরিফুল ইসলাম শেহজাদকে নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সদ্যই সাইফের ঘটনায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিপোর্টে নতুন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, শরিফুল ইসলাম শেহজাদ কি আদৌ সাইফ আলী খানের হামলাকারী? ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, মহারাষ্ট্র সিআইডির ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিভাগের রিপোর্ট বলছে, সাইফের বাড়ি থেকে হামলাকারীর যে ১৯টি ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গিয়েছে, সেগুলির সঙ্গে শরিফুলের আঙুলের ছাপের কোনও মিল নেই। মহারাষ্ট্র সিআইডির ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে রীতিমতো চমকপ্রদ তথ্য এসেছে। বলা হচ্ছে, সাইফের বাড়ি থেকে পাওয়া নমুনার একটাও মিলছে না শরিফুলের সঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে আদৌ শরিফুলই সাইফের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন তো? আপাতত মুম্বাই পুলিশও ব্যস্ত সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অ
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি)। তার সাবেক সহকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের নগদ অর্থ ও ১৬ কেজি স্বর্ণবার জব্দের ঘটনায় ইসমাইল সাবরিকে প্রধান সন্দেহভাজনদের মধ্যে রাখা হয়েছে। আগামী বুধবার (৫ মার্চ) তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
স্থানীয় সময় আজ সোমবার (৩ মার্চ) মালয়েশিয়া এমএসিসি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান আজম বাকি।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর বলছে, ইসমাইল সাবরি ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দেশের সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইসমাইল সাবরি হলেন তৃতীয় নেতা, যিনি তার পূর্বসূরি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন এবং নাজিব রাজাকের পরে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
নারী কর্মীদের মালয়েশিয়া না যেতে সতর্কতা
আটকেপড়া ৭ হাজার ৯৬৪ বাংলাদেশি কর্মীকে নিতে রাজি মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি) সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কিত সম্পত্তিতে তিনটি অভিযানে মার্কিন ও সিঙ্গাপুর ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাত দিরহাম এবং জাপানি ইয়েনসহ বিভিন্ন মুদ্রায় নগদ অর্থ উদ্ধার করেছে।
সোমবার এমএসিসি প্রধান আজম বাকি সাংবাদিকদের বলেন, “এই নগদ অর্থের সন্ধান নিশ্চিত করে যে (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) এই মামলায় একজন সন্দেহভাজন।”
সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা জব্দকৃত নগদ অর্থ, বিলাসবহুল ঘড়ি ও ১৬ কেজি সোনার বার প্রদর্শন করেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর অনুসারে, ইসমাইল সাবরির একজন প্রতিনিধি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেননি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নির্বিশেষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
গত ৮ জানুয়ারি জাতীয় সুশাসন সম্মেলনে তিনি দুনীর্তির বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্স অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আমি কারো অবস্থান বা প্রভাব নিয়ে চিন্তা করি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই এটি শুরু করেছি।
তবে সমালোচকরা আনোয়ারকে দুর্নীতির অভিযোগ ব্যবহার করে বিরোধীদের চুপ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, যার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এবং প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী দাইম জয়নুদ্দিনও রয়েছেন।আনোয়ার ইব্রাহিম তাদের বিরুদ্ধে পদের মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করার অভিযোগ এনেছিলেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মাহাথির মোহাম্মদ আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ১৫০ মিলিয়ন রিঙ্গিত মানহানির মামলা দায়ের করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গত মাসে মাহাথির মোহাম্মদ তার ব্লগে লিখেছিলেন, “আনোয়ার যখন মুখ খোলেন, তখন তিনি মিথ্যা বলেন।”
ঢাকা/ফিরোজ