বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ওরফে এস কে সুরের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি লিখেছেন, ‘রক্ষক না হয়ে তিনি (এস কে সুর) ছিলেন ভক্ষকের ভূমিকায়।’

তিনি আরও লিখেন, ‘শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারেই ব্যাংকটির সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর রাখা ৫৫ হাজার ইউরো, এক লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ৭০ লাখ টাকার এফডিআর ও প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যের এক কেজি সোনার অলংকারও সেখান থেকে জব্দ করা হয়েছে। পুরো তদন্ত হলে হয়তো আরও বহুকিছু উদ্ধার হবে তার কাছ থেকে। অভিযোগ রয়েছে, রক্ষক না হয়ে তিনি ছিলেন ভক্ষকের ভূমিকায়।’

গতকাল রোববার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুদক রাজধানীর মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা সুর চৌধুরীর লকারটি খোলে। লকারে তিনটি এসডি (সেফ ডিপোজিট) নম্বরে মোট ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৯ টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। এর মধ্যে ইউরো ৫৫ হাজার, মার্কিন ডলার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০, এফডিআর ৭০ লাখ টাকার ও স্বর্ণালংকার ৮৬ দশমিক ২২ ভরি (১০০৫.

৪ গ্রাম)। এসব অর্থসম্পদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এগুলো আদালতে উপস্থাপন করে আদেশ অনুযায়ী সংরক্ষণ করা হবে। 

দুদক কর্মকর্তারা লকারে থাকা স্বর্ণালংকারের তালিকা তৈরি করেন। তাতে দেখা যায়- ৮৬ দশমিক ২২ ভরি স্বর্ণের মধ্যে চেইন ২৩টি, টিকলি দুটি, কানের দুল ১৪টি, লকেট তিনটি, চুড়ি ছয়টি, টারসেলসহ সীতাহার দুটি, আংটি তিনটি, কয়েন তিনটি, চামচ একটি, নোলক একটি, ব্রেসলেট একটি, টারসেলসহ গলার হার তিনটি এবং টারসেলসহ মুকুট একটি। এ ছাড়া হাতে পরার চূড় দুই পিস, চুড়ি দুই পিস, সীতাহার এক পিস, মুকুট দুই পিস, লকেট দুই পিস, টিকলি এক পিস, গলার চেইন তিন পিস, গলার হার দুই পিস, কানের দুল আট পিস এবং স্বর্ণবোতাম চার পিস।

দুদক পরিচালক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান সমকালকে বলেন, সুর চৌধুরী, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ২৩ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক। মামলাটি তদন্ত করতে গিয়েই তার নামে বিপুল অর্থসম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

গত ১৪ জানুয়ারি সুর চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ১৯ জানুয়ারি দুদক তার ঢাকার ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দ করে। দেশের আর্থিক খাত থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎকারী পি কে হালদারের প্রতাপশালী সহযোগী ছিলেন সুর। দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেন, দুর্নীতি-লুট নির্বিঘ্নে করে দেওয়ার বিনিময়ে সুর চৌধুরী প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের মাসোহারা পেতেন। সময়ে সময়ে তাঁতা দেওয়া হতো বিপুল অঙ্কের টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ