ঢাবিতে আজ ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত, শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি
Published: 27th, January 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা আজ সোমবার স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা।
রোববার রাত ১১টার দিকে নীলক্ষেত মোড়-সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থী ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকা। সারারাত উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। থেমে থেমে চলছিল ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে রাতে ঢাবির প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোমবারের সব ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আজ ৭ কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। আশা করি, সব পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।
এদিকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা, পুলিশের একপেশে আচরণের প্রতিবাদে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
রাত ৩টার দিকে ঢাকা কলেজের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পার্সন আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম। আমাদের দাবি ছিল চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেটি করেনি। উল্টো ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আমরা এসব নিয়ে বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়েছি। সব শেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে আমরা নীলক্ষেত গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
আব্দুর রহমান বলেন, ৭ কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ত কল জ অবর ধ স ত কল জ কল জ র ৭ কল জ পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ক্ষমতার অপব্যবহারের দায় সরকার এড়াতে পারে না: টিআইবি
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য ঢাকার বাইরে অন্তত একটি জেলা থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের জন্য কর্তৃত্ববাদের অনুকরণে সরকারিভাবে হুকুম-দখল করে পরিবহন বাস অধিযাচনের (রিকুইজেশন) ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, এনসিপির জন্মলগ্নেই এরূপ ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিকতার দায় অন্তর্বর্তী সরকার এড়াতে পারে না।
আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, এনসিপির জন্মলগ্নেই এরূপ ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিকতার দায় অন্তর্বর্তী সরকার এড়াতে পারে না। অন্যদিকে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ও ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে’র ব্যানারে এ ধরনের কর্তৃত্ববাদী পুরোনো চর্চা পরিহার করার জন্য এনসিপি ও তার সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদেরকে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত ‘নতুন বাংলাদেশে’র অভীষ্ট অর্জনের আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানকারী শিক্ষার্থীদের হাত ধরে নতুন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব কর্তৃত্ববাদ পতন-পরবর্তী বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ তরুণ নেতৃত্বের হাতে গঠিত নতুন রাজনীতির প্রতি মানুষের প্রত্যাশাও অপরিসীম। এই প্রত্যাশা পূরণের পূর্বশর্ত হিসেবে দলটিকে একেবারে শুরুতেই বাস অধিযাচনের এই নজির ও তার নেতিবাচক প্রভাবকে ‘রেড এলার্ট’ হিসেবে গ্রহণ করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ জাতীয় গতানুগতিক আত্মঘাতী কর্মকাণ্ড ও আচরণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের গড়া এই নতুন রাজনৈতিক দল জিরো-সাম রাজনীতিনির্ভর ক্ষমতার অপব্যবহারের হাতে জাতীয় জিম্মিদশা থেকে এ দেশের উত্তরণের সম্ভাবনা ও ইতিবাচক গণতান্ত্রিকচর্চা বিকাশে সহায়ক হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই নতুন নেতৃত্বের চর্চা ও আচরণে পতিত কতৃত্ববাদী বা কোনো প্রকার ক্ষমতার অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি তাদের প্রতি জনমনে বিরূপ ধারণার জন্ম দিবে এবং নতুন বাংলাদেশের জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক বোধ ও চেতনা বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, ‘রাজনৈতিক, জনপ্রতিনিধিত্ব ও সরকার পরিচালনায় একচ্ছত্র আধিপত্যের মাধ্যমে কতৃত্ববাদী আচরণের সংস্কৃতির পরিবর্তনে নতুন রাজনৈতিক দল মূল অনুঘটকের ভূমিকা রাখবে, দেশবাসী এমন আশা করবে। তবে, সবকিছুই নির্ভর করবে, নতুন দল এদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন লালিত ক্ষমতার অপব্যবহারের চর্চা থেকে কতটুকু দূরে থাকতে পারবে, তার ওপর।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্ন্তবর্তী সরকারের দায়িত্ব সব পর্যায়ে যে কোনো রাজনৈতিক মহলকে সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া থেকে বিরত থাকা।’