নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে ২ জন নিহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গতকাল রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ফজরের পর মাইকে ঘোষণা দিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। 

নিহতরা হলেন আলমগীর হোসেন আলম (১৯) ও আলি আহম্মেদ (২৩)। এ ঘটনার পরই ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন্স) সিদ্দিকুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি সিরাজুল হক সরকারের ছেলে আশরাফুল হক সরকার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.

হাসানের ছেলে বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হাসান রাতুল সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জেরে গতকাল সকালে দু’পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। গুরুতর আহত অবস্থায় আলমগীরকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নরসিংদী ১০০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানান, সকালে আমাদের হাসপাতালে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়। গুরুতর আহত আলি আহম্মেদকে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। আরেকজনকে ঢাকায় নিয়ে যান স্বজনরা। 

রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, বাঁশগাড়ীতে সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন নিহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানার দাবি, দুই আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন রাতুল ও  আশরাফুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি ও টেঁটাযুদ্ধ হয়। এতে রাতুল সমর্থিত ২ জন ও আশরাফুল সমর্থিত ১ জন নিহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে তথ্যটির ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত নন।   

ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন্স) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় তাৎক্ষণিক সব তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সংঘর্ষে নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ সমর থ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ালো ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। সামরিক অভ্যুত্থানের চার বছর পূর্তির একদিন আগে এ ঘোষণা এলো। আজ শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতাসীন হয়। এরপর থেকে দেশটি গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের জয় পাচ্ছে। দেশের অনেক এলাকা এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে।

এদিকে জান্তা বাহিনী এ বছর নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রক্সির মাধ্যমে জেনারেলদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একটি প্রহসন হতে পারে এ নির্বাচন। কারণ, সেনাবাহিনী ক্ষমতা ধরে রাখতে বহুবার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে আবারও মেয়াদ বাড়ানো পরিস্থিতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।

রাষ্ট্র পরিচালিত এমআরটিভি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে জরুরি অবস্থা বৃদ্ধির ঘোষণা প্রচার করে বলেছে, সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য এখনো আরও অনেক কাজ বাকি আছে। বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রয়োজন।

নির্বাচনের জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে জান্তা সরকার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যদিও তারা দেশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার লড়াইয়ে ক্লান্ত। কারণ, তারা একাধিক ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এক সময় মিয়ানমারের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাজারে একটি প্রতিশ্রুতিশীল শক্তি হিসেবে দেখা হলেও এখন তা ব্যাপক চাপে রয়েছে। সামরিক বাহিনী একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছে এবং দেশটির জনগণের ওপর চাপ দিন দিন বাড়ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ