উড়োজাহাজের টিকিট মজুতদারি বন্ধের দাবি আটাবের
Published: 27th, January 2025 GMT
উড়োজাহাজের টিকিট মজুতদারি বন্ধের দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। টিকিটের দাম কমানোর পাশাপাশি বাল্ক টিকিট (বিশেষ টিকিট) বিক্রিও বন্ধ চায় সংস্থাটি। গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান আটাব সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ।
এ সময় আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ, সাবেক মহাসচিব জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দিপু, উপমহাসচিব তোয়াহা চৌধুরী, অর্থ সচিব সফিক উল্যাহ নান্টু উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন আটাব সভাপতি। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে চলমান বড় সমস্যা হলো টিকিটের দাম বৃদ্ধি। এর নেপথ্যে প্রধান কারণ ‘নামবিহীন গ্রুপ টিকিট বুকিং’। মধ্যপ্রাচ্যগামী কিছু এয়ারলাইন্স তাদের পছন্দের এজেন্সির নামে যাত্রী তালিকা ছাড়াই শুধু ই-মেইলের মাধ্যমে সিট ২ থেকে ৩ মাস অগ্রিম ব্লক করে রাখে। তাতে পাসপোর্ট, ভিসা, ভ্রমণ নথিপত্র কিংবা প্রবাসগামী শ্রমিকদের বৈদেশিক ওয়ার্ক পারমিটের তথ্যও থাকে না।
আটাব সভাপতি বলেন, এভাবে টিকিট মজুতদারি করার ফলে সিন্ডিকেট তৈরি হয় ও আসন সংকট দেখা দেয়। ফলে টিকিটের দাম কখনও ২০ থেকে ৫০ শতাংশ, কখনও দ্বিগুণ-তিন গুণ পর্যন্ত বাড়ে। এতে বিদেশগামী শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও প্রবাসী চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
মূলত মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইটের দিন-তারিখের অনেক আগেই আসন বিক্রি করে ফেলে। অধিক মুনাফার জন্য তারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে। রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা, ওমান, দোহা, কুয়ালালামপুরসহ বিভিন্ন রুটের সিট ব্লক করে রাখা হয়। বিশেষ করে ওমরাহ ও বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর নামে টিকিটের মজুতদারি চলে। এতে অন্যান্য রুটের (যেমন লন্ডন, নিউইয়র্ক, ইউরোপ, আমেরিকা) টিকিটের দামও বেড়ে যায়। ফলে মার্কেট মনোপলি তৈরি হচ্ছে। এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইটের সংখ্যা কমানোর কারণেও টিকিটের দাম বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
তুফানের পর বনলতা সেন
‘আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন/ আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন’– কবি জীবনানন্দ দাশের সুবিখ্যাত কবিতা ‘বনলতা সেন’। এ কবিতা নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের কোনো অন্ত নেই। কে এই সুন্দরী নারী? কী তাঁর পরিচয়? নাটোরের বনলতা সেন নামের কোনো মায়াবতীর সঙ্গে কবির কি আদৌ পরিচয় ছিল? বনলতা সেন বিষয়ে আজীবন এই নীরবতা বজায় রেখেছেন কবি; মনের অজান্তেও কখনও কারও কাছে বনলতা সেনকে নিয়ে বলেননি কোনো কথা। কবির চরিত্র অনাবিষ্কৃত থাকলেও এবার পর্দায় আসছে ‘বনলতা সেন’ নামে একটি সিনেমা। মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের পরিচালনায় এতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী ও মডেল মাসুমা রহমান নাবিলা। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরই এ সিনেমা মুক্তি পাবে।
বনলতা সেনের খোঁজে...
নাবিলার সর্বশেষ অভিনীত সিনেমা ‘তুফান’ মুক্তি পেয়েছে গত বছর ঈদুল আজহায়। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমায় তাঁর অভিনীত ‘জুলি’ চরিত্রটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর নতুন রসায়নও দর্শক গ্রহণ করেছেন। তাদের খুনসুটি, ঝগড়া, অভিমান-অনুযোগ, প্রেমের দৃশ্যগুলো দর্শককে বেশ আনন্দ দিয়েছে। এর আগে তিনি শেষ করেছেন অনুদানের সিনেমা ‘বনলতা সেন’-এর কাজ। একেবারে নীরবেই সিনেমার দৃশ্যধারণ হয়েছে । এটি তাঁর অভিনয় ক্যারিয়ারে একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ বলে মনে করছেন তিনি। সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে নাবিলা বলেন, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে বেশ বাছবিচার করে সিনেমার কাজে হাত দিয়েছি। আমার অভিনীত তৃতীয় সিনেমা ‘বনলতা সেন’-এর গল্প অসাধারণ। নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল বেশ যত্ন নিয়ে কাজটি শেষ করেছেন। অনেক বছর ধরে সিনেমার কাজ হয়েছে। আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। আমি চাই, দর্শক পর্দায় কাজটি দেখুক। গল্প ও চরিত্র মিলে সিনেমাটি দর্শকের ভালো লাগবে– এ আশা করাই যায়।
একটি সূত্রে জানা গেছে,শুরুতে নাবিলাকে নির্মাতা শুধু চরিত্রের সারসংক্ষেপ দিয়েছিলেন। পরে পুরো স্ক্রিপ্ট পড়তে চান তিনি। নির্মাতা তাঁকে প্রথমে কম গুরুত্বপূর্ন চরিত্রের কথা বলছিলেন। কিন্তু বিরতির পর ওই ধরনের চরিত্র দিয়ে ফিরতে চাইছিলেন না এই অভিনেত্রী।
অনেক দিন পর নাবিলাকেই ডাকলেন নির্মাতা। নিলেন অডিশন। পরে চরিত্রটি নাবিলার জন্য গুরুত্বপূর্ন চরিত্রটিই বরাদ্দ হলো। নাম শুনে অনেকেই মনে করছেন এটি সাহিত্যনির্ভর কাজ। কেউ কেউ বলেছেন,বনলতা সেন কবিতার ছায়া থাকবে সিনেমায়। বিষয়টি নিয়ে নাবিলা বলেন, ‘স্ক্রিপ্টে যখন চোখ রাখি তখনই মনে হয়েছিল, আমি কোনো সাহিত্য পড়ছি। আসলে এটি সাহিত্যনির্ভর কাজ নয়। বনলতা সেন কে, এটি তো আমাদের জানা নেই। কাল্পনিকই বলা চলে। কেউ কখনও তাকে দেখেননি। নির্মাতা যেভাবে বনলতা সেনকে কল্পনা করেছেন, সেভাবেই সিনেমায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সিনেমাটিকে আসলে কোনো জনরায় ফেলা যায় না। নির্মাতা নিজের মতো করে গল্প লিখেছেন। এটি একটি রহস্যময় সিনেমা। অনেক ইতিহাস আছে এতে। বনলতা সেন কে তা সিনেমা দেখার পর বোঝা যাবে।
রান্নার আয়োজন
অভিনয়, উপস্থাপনা, মডেলিংয়ে বছরজুড়েই ব্যস্ত সময় কাটে নাবিলার। মাঝে সিনেমার কাজে বেশি মনোযোগী ছিলেন তিনি। এ কারণে উপস্থাপনায় একেবারেই দেখা যায়নি এ অভিনেত্রীকে। ১০ বছর পর ফিরলেন উপস্থাপনায়। ‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ ও ‘স্টারশিপ ফিউশন কিচেন’ নাম দুটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন তিনি। গত বছরের শেষ দিকে আবারও ‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ নিয়ে ফিরেছেন নাবিলা।
‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ উপস্থাপনা প্রসঙ্গে নাবিলা বলেন, ‘বেশ বিরতির পর রান্নার অনুষ্ঠান দিয়ে উপস্থাপনায় ফিরতে পেরে ভালোই লাগছে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে অনেক ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার হচ্ছে। নানা অনুষ্ঠানের ভিড়ে এর আইডিয়া ব্যতিক্রম। পাকা ১০০ রাঁধুনির রেসিপি দিয়ে সাজানো হয়েছে এ আয়োজন। মাছারাঙা টেলিভিশনে এর ১৩ পর্ব প্রচার হয়েছে। বেশ সাড়া পাচ্ছি আয়োজনটিতে। ‘স্টারশিপ ফিউশন কিচেন’ কাজটি পছন্দের বলে জানিয়েছেন নাবিলা। একটি দৈনিক পত্রিকার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও চরকিতে রান্নার এ আয়োজন দেখা যাচ্ছে। রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা বেশ উপভোগ করছেন বলে জানান এ অভিনেত্রী।
কাজের অবসরে
শুটিং না থাকলেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করেন নাবিলা। তিনি বলেন, ‘আমি ঘরকুনো মেয়ে। ঘরেই বেশি মন টেকে। যখন শুটিং করি, তখনও সন্তানকে সময় দিতে পারছি না বলে অপরাধবোধ কাজ করে। ওই সময় সন্তানের সঙ্গ খুব মিস করি। সংসার সামলে সময় যে কখন চলে যায়, টেরই পাই না।’ v