পথে থামিয়ে সাংবাদিককে কোপাল দুর্বৃত্তরা
Published: 26th, January 2025 GMT
ঢাকার নবাবগঞ্জে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের রাহুৎহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি। বর্তমানে নাজমুল হোসেন অন্তর নামের ওই সাংবাদিক ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক্স (পঙ্গু) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নাজমুল হোসেন একই ইউনিয়নের খানেপুর গ্রামের মানিক বেপারির ছেলে। তিনি বেসরকারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ও আমাদের সময়ের দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি।
নাজমুল শনিবার রাতে দোহারের জয়পাড়া মাহমুদিয়া আলিম মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে যান। সেখান থেকে খানেপুরের বাড়ি ফেরার সময় রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে রাহুৎহাটি এলাকায় তাঁর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে মুখোশধারী দুই দুর্বৃত্ত। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখে নাজমুল মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পেছন থেকে তাঁর হাত-পায়ে কোপানো হয়। তিনি দৌড়ে পাশের জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনে আশ্রয় নিলে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের সদস্যরা নাজমুলকে উদ্ধার করে শুরুতে বান্দুরা মডার্ন ক্লিনিকে নিয়ে যান। পরে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে নাজমুলকে রাতেই ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকরা। জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মো.
নাজমুলের ছোট ভাই নয়ন বলেন, রোববার সকালে তাঁর ভাইয়ের মোটরসাইকেলটি নয়নশ্রী ইউনিয়নের দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে ইছামতী নদীর তীর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। হামলাকারীরা ডাকাত হলে মোটরসাইকেল ফেলে যাওয়ার কথা নয়। এতেই বোঝা যায়, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত। তিনি এতে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হরগোবিন্দ সরকার বলেন, নাজমুলের ডান হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের গুরুতর চিহ্ন ছিল। তাঁর প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে রাতেই জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় একই ইউনিয়নের দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন ইছামতী নদীর তীর থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি এখনও পাওয়া যায়নি। তারা তদন্ত শুরু করেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আর্থিক সাক্ষরতায় বাংলাদেশ কতদূর এগোল
এ বছর বাংলাদেশে তৃতীয়বারের মতো পালিত হচ্ছে আর্থিক সাক্ষরতা দিবস। ২০২২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারের মাধ্যমে প্রতিবছর মার্চ মাসের প্রথম সোমবার আর্থিক সাক্ষরতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সে অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৬ মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আর্থিক সাক্ষরতা দিবস পালন করা শুরু হয়।
আর্থিক সাক্ষরতা বলতে কোনো ব্যক্তির অর্থসংক্রান্ত সেই জ্ঞান, দক্ষতা ও মনোভাবকে বোঝানো হয়, যা ব্যক্তি তাঁর অর্থ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য ব্যবহার করে থাকেন।
এর মধ্যে আয় ও ব্যয়ের সঠিক পরিকল্পনা করা, সঞ্চয়ের অভ্যাস গঠন করা, বিনিয়োগের কৌশল বোঝা, ঋণ ব্যবস্থাপনা ও সুদের হার বোঝা এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকি নিরূপণ করে তা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জন করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সাধারণ জনগণের আর্থিক জ্ঞান বৃদ্ধি করা এবং আর্থিক বিষয়ে তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে ক্রমেই আর্থিক সাক্ষরতা দিবসটির গুরুত্ব বেড়ে চলেছে।
এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুননতুন বছরে অর্থনীতির সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ০২ জানুয়ারি ২০২৫পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশেও নানাবিধ কার্যক্রমের মাধ্যমে আর্থিক সাক্ষরতা দিবস কর্মসূচি পালন করা হয়ে থাকে।
কারণ, উচ্চতর আর্থিক সাক্ষরতা মানে, অধিকতর আর্থিক স্থিতিশীলতা যা একটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
বর্তমানে সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিও সম্মিলিতভাবে আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে, যাতে মানুষ সঠিকভাবে তাদের আর্থিক সম্পদ পরিচালনা করতে পারে। তারপরও বাংলাদেশের তিন কোটি মানুষ এখনো পুরোপুরি ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে।
একটি জরিপের ফলাফল অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ৩৩ শতাংশ বা এক-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আর্থিকভাবে শিক্ষিত।
এর অর্থ হলো, প্রায় ৩৫০ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মৌলিক আর্থিক ধারণা সম্পর্কে শিক্ষা নেই, যাঁদের বেশির ভাগই উন্নয়নশীল দেশগুলোয় বসবাস করছে।
বিশ্বব্যাপী পরিচালিত আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচির ইতিহাস পর্যালোচনায় বরাবরের মতোই আমেরিকার ইতিহাস চলে আসে।
১৬০০ সালের পরে আমেরিকা মহাদেশের বেশির ভাগ উপনিবেশ গড়ে ওঠে। সে সময় অর্থ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে দিকনির্দেশনাগুলো মা–বাবা, বন্ধুবান্ধব বা পেশাদার পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে আসত বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুনউচ্চ মূল্যস্ফীতি+নিম্ন প্রবৃদ্ধি+উচ্চ বেকারত্ব: কোন পথে অর্থনীতি?২৬ জানুয়ারি ২০২৫আমেরিকার প্রতিষ্ঠাতা জনকদের অন্যতম বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন ১৭৩৭ সালে একটি বার্ষিক পঞ্জিকায় ‘যাঁরা ধনী হতে চান, তাঁদের জন্য কিছু পরামর্শ’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন।
সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘এক পয়সা বাঁচালে দুই পয়সা সঞ্চয় হয়। প্রতিদিন এক পিন (ছোট খরচ) করে বছরে এক গ্রোট (বড় খরচ) হয়। সঞ্চয় করুন এবং উপভোগ করুন।’
এই লেখা সে সময় অনেকের মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি করেছিল। কারণ, সে সময় ব্যক্তিগত আর্থিক শিক্ষা বা সঞ্চয়ের ধারণা তেমন একটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।
তখনকার স্কুলগুলোয় ব্যক্তিগত অর্থায়নের ক্লাসও দেওয়া হতো না এবং বর্তমানের মতো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য আর্থিক সাক্ষরতা শিক্ষা প্রদানের বিষয়টিও ছিল না।
যদিও তার অনেক আগেই ১৪০১ সাল থেকে ইতালীয় সরকারের উদ্যোগে ‘ব্যাংক অব বার্সেলোনা’ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ব্যাংকিং পদ্ধতিতে আধুনিকীকরণের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে।
এরপর ১৮০০–এর দশকে আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক সাক্ষরতারও ব্যাপক প্রসার ঘটে, যার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সঞ্চয় ও ঋণের ধারণা তৈরি হতে শুরু করে।
এই ধারণা বিকাশের ফলে পৃথিবীর বর্তমান মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে ৭৬ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করছেন।
এটি প্রকারান্তরে আর্থিক সাক্ষরতা বিস্তারে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুনঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতি পিছিয়েও পড়তে পারে১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার কার্যক্রম শুরু হওয়ার প্রায় ২০০ বছর পর অর্থাৎ ২০০০ সালের মধ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিষ্ঠা, বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী সময়ে ব্যাংকিং সেবা সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হতে শুরু করে এবং স্কুল ও কলেজে আর্থিক শিক্ষার গুরুত্ব বাড়ে।
এর মধ্যে ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড চালু হয়, ফলে ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
ব্যাংকিং সেবার ডিজিটাল রূপান্তরও শুরু হয়। ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু হয়, বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো আর্থিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে, সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সাক্ষরতার জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
মোবাইল ব্যাংকিং ও ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। এমনকি উন্নয়নশীল দেশগুলোয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মোটাদাগে আর্থিক সাক্ষরতা বলতে, আমরা বর্তমানে যে কর্মসূচি পালন করে চলেছি, সেটির ইতিহাস মূলত বিংশ শতকের প্রথম দিকে শুরু হয়।
১৯৯০-এর দশক থেকে এই উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক গতি লাভ করে। এরপরের ইতিহাস পরিক্রমা সবার কাছেই পরিষ্কার।
বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী নারী-পুরুষের আর্থিক সাক্ষরতার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে। আপাতদৃষ্টে প্রাপ্তবয়স্ক ৩৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩০ শতাংশ নারী আর্থিকভাবে শিক্ষিত হলেও বিশ্বব্যাপী এ ব্যবধান নেহাত কম নয়।
শিক্ষার এই বৈষম্য উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় অর্থনীতিতেই বিদ্যমান এবং শিগগিরই এটি দূর হবে বলে মনে হচ্ছে না।
আরও পড়ুনদারিদ্র্যই আমাদের শতভাগ সাক্ষরতার পথে বড় বাধা০৭ আগস্ট ২০২৪বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই আর্থিক সাক্ষরতার ব্যবধান বাংলাদেশের অগ্রগতিতেও একটি বড় বাধা।
এখানে প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ এখনো ব্যাংকিং সেবা, ব্যাংকিং প্রোডাক্ট বা সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা সম্পর্কে পরিচিত নন।
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে ৪৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ নারী আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবা গ্রহণ করছেন, যেখানে ৬২ দশমিক ৮৬ শতাংশ পুরুষ আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
ব্যক্তিজীবনে আর্থিক সাক্ষরতার গুরুত্ব অনুধাবন করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আর্থিক শিক্ষা ও সচেতনতা কর্মসূচি চালু করে, যা পরবর্তীকালে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
একই বছর যুক্তরাষ্ট্রে ‘আর্থিক সাক্ষরতা ও শিক্ষা কমিশন’(এফএলইসি) গঠন করা হয় যা অর্থ ব্যবস্থাপনার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রচারের জন্য কাজ শুরু করে। তখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও স্কুল পর্যায়ে আর্থিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়।
একইভাবে ভারতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ২০১৩ সালে আর্থিক সাক্ষরতা কেন্দ্র স্থাপন করে।
যদিও ২০০৫ সালে একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের মঙ্গলম গ্রামের সব পরিবারকে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সাক্ষরতার একটি উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়।
তারপরও ভারতের ক্ষেত্রে, সাধারণ সাক্ষরতার হার ৭৭ শতাংশ, কিন্তু আর্থিক সাক্ষরতার হার ৩৫ শতাংশ।
এ ছাড়া জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০–এর মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে স্থান পেয়েছে।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে আর্থিক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করছে যা আর্থিক সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তবে বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অংশ হিসেবে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করেছে, যার মধ্যে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম, লিড ব্যাংক পদ্ধতিতে জেলা পর্যায়ে স্টুডেন্ট ব্যাংকিং কনফারেন্সের আয়োজন করা, ন্যানো লোন, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্ট খোলা, মোবাইল ব্যাংকিং ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা অন্যতম।
বৈশ্বিক গবেষণা বলছে ডেনমার্ক ও নরওয়েতে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের আর্থিকভাবে শিক্ষিত হওয়ার হার ৭১ শতাংশ, যা বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। অন্যদিকে পূর্ব ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, সাবসাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোয় ইতিমধ্যেই উদ্বেগজনকভাবে বৈশ্বিক গড়ের নিচে রয়েছে।২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক শিক্ষা ও অন্তর্ভুক্তির জন্য ‘জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল’ চালু করে, যার ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি চালু করা হয়।
ডিজিটাল লেনদেন, ই-ওয়ালেট ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের প্রসারের ফলে মানুষের মধ্যে আর্থিক সচেতনতা আরও বৃদ্ধি পায়।
আর্থিক সাক্ষরতার শিক্ষায় শিক্ষিত বর্তমান তরুণেরা পুঁজিবাজারে সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ করছেন। সেখানে ৭০ শতাংশ খুচরা বিনিয়োগকারীর বয়স ৪৫ বছরের কম। তবে, বিশ্বব্যাপী তরুণদের আর্থিক সাক্ষরতার হার ৫০ শতাংশের নিচে যেটি এখনো উদ্বেগের কারণ।
কিন্তু বৈশ্বিক গবেষণা বলছে ডেনমার্ক ও নরওয়েতে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের আর্থিকভাবে শিক্ষিত হওয়ার হার ৭১ শতাংশ, যা বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
অন্যদিকে পূর্ব ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, সাবসাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোয় ইতিমধ্যেই উদ্বেগজনকভাবে বৈশ্বিক গড়ের নিচে রয়েছে।
কিন্তু আফগানিস্তান, আলবেনিয়া ও অ্যাঙ্গোলায় আর্থিকভাবে শিক্ষিত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সংখ্যা ১৪ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে কম।
তবে অর্থনৈতিক বিভিন্ন মানদণ্ডে বাংলাদেশ এসব দেশের বেশ ওপরে জায়গা করে নিলেও আর্থিক সাক্ষরতায় ২৮ শতাংশ অর্জন নিয়ে সামনে কতটুকু এগোনো যাবে, সেটি সময়ই বলে দেবে।
এম এম মাহবুব হাসান, ব্যাংকার ও উন্নয়ন গবেষক
ই-মেইল: [email protected]