ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সম্মেলন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল
Published: 26th, January 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন বাতিলের দাবিতে মশাল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপির একটি পক্ষ।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাতে মশাল নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ থেকে ‘বুকের রক্ত দিয়ে প্রতিহত’সহ ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জেলার বিএনপির সম্মেলন করতে দেওয়া হবে না’ বলে হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারি জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এক পক্ষ সম্মেলন সকলের প্রস্তুতি নিলেও অপরপক্ষের অনড় বিরোধিতার জন্য দুটি তারিখই পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
গত ২২ জানুয়ারি সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইনজীবী আ জ ম মোরশেদ আল মামুন স্বাক্ষরিত জেলা বিএনপির দলীয় প্যাডে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটিসহ নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত। ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি পক্ষ এবং আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি এবং সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনের নেতৃত্বে আরেকটি বড় অংশ রয়েছে।
গত প্রায় দুই বছর ধরেই উভয়পক্ষ পৃথকভাবে দলীয় সব কর্মসূচি পালন করে আসছে। নেতা-কর্মীদের বিরোধ দূর না করেই গত বছরের ২ নভেম্বর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিএনপির ফেসবুক পেজে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে।
আগের পাঁচ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আগের কমিটির ২ ও ৩ নম্বর সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও জহিরুল হক খোকন নতুন কমিটিতে ৩ ও ৪ নম্বর এবং কবির আহমেদ ভূইয়াকে ৩২নম্বর সদস্য করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বিএনপির আরেকটি পক্ষ কবিরের অনুসারী। হাফিজুর ও জহিরুলের নেতৃত্বে শহরে সম্মেলন বিরোধী একাধিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে জেলা শহরের পাওয়ার হাউজ রোড এলাকা থেকে জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাতে মশাল জ্বালিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে টেংকের পাড় এলাকায় গিয়ে সমাবেশ করেন। মশাল মিছিলে নেতাকর্মীরা ১ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সদস্য কবির আহমেদ ভূইয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
সমাবেশে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আজমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপিত গোলাম সরোয়ার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ বি মমিনুল হক, সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মনির হোসেন, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা।
গোলাম সারোয়ার বলেন, “কবির আহমেদ ভূঁইয়া ও তার অনুসারীরা মিলে ১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলন ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির মূল শক্তি ও মূল ধারাকে পাশ কাটিয়ে এই সম্মেলন দিয়েছে। আমরা এই সম্মেলন প্রতিরোধ করব। যাকে নিয়ে আজকে এই সম্মেলনের আয়োজন চলছে, সেই কথিত কবির আহমেদ ভূঁইয়া ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন (আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক)। আজকে সে জেলা বিএনপির সভাপতি হতে চায়। তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দেব না। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি যে সম্মেলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা স্থগিত করা না পর্যন্ত আমাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি চলতে থাকবে।”
এবি মমিনুল হক, আলী আজম, মনির হোসেন ও শামীম মোল্লা বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে এই সম্মেলন করতে দেওয়া হবে না। এই অপশক্তিকে রুখে দেওয়া হবে। বুকের রক্ত দিয়ে এই সম্মেলন প্রতিহত করব।”
একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান ও সদস্য সচিব সিরাজুল ইসমামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ঢাকা/মাইনুদ্দীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব র হ মণব ড ব এনপ র দ ব এনপ র স ও সদস য র সদস য সদস য র কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই
নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।
আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।
এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’
গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।
দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।