৩১ জানুয়ারির পর রিটার্ন দিলে জরিমানা ২ শতাংশ
Published: 26th, January 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, এখন থেকে সারাবছর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। তবে ৩১ জানুয়ারির পরে রিটার্ন জমা দিলে বকেয়া আয়করের ওপর ২ শতাংশ হারে জরিমানা গুনতে হবে। গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট বন্ধ হবে না। ৩৬৫ দিনই করদাতা ই-রিটার্ন দিতে পারবেন। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যারা ট্যাক্স রিটার্ন দেবেন, তাদের করের হিসাব এক রকম হবে। এর পর যারা দেবেন, তারাও অনলাইনে দিতে পারবেন, তবে তাদের অটোমেটিক্যালি অতিরিক্ত চার্জ যুক্ত হবে। বকেয়া করের ওপর প্রতি মাসে এ চার্জ হবে ২ শতাংশ। সর্বোচ্চ সময় ২৪ মাস পর্যন্ত তা আমলে নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে মোট ৪৮ শতাংশের বেশি কারও কাছ থেকে চার্জ নেওয়া হবে না।
অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত অনলাইন রিটার্ন জমা দিয়েছেন ১২ লাখ করদাতা। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৪ লাখের কাছাকাছি যাবে।
মূল প্রবন্ধে এনবিআর সদস্য হোসেন আহমদ বলেন, ভবিষ্যতে অংশীজনের সশরীরে উপস্থিতি ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় কাস্টমস সেবা নিশ্চিত করা হবে। এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এনবিআরকে প্রতিদিন গড়ে ২২৭৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে
চলতি অর্থবছরের শেষ তিন মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এ বছরের সংশোধিত লক্ষ্য অর্জনে শেষ তিন মাসে এমন চাপে থাকবে এনবিআর।
চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) এনবিআরকে ২ লাখ ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য আছে। চলতি অর্থবছরের পুরো সময়ের জন্য এনবিআরের সংশোধিত শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য হলো ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৯ মাসের শুল্ক-কর আদায়ের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। এই সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে অর্থবছরের শেষ তিন মাসের রাজস্ব আদায়ের চাপের চিত্রটি উঠে এসেছে।
ঋণের শর্ত হিসেবে শুল্ক-কর আদায় বাড়ানোর জন্য শর্ত দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ৭ দশমিক ৪ থেকে বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরের মধ্যে ৭ দশমিক ৯-এ উন্নীত করার কথা বলেছে আইএমএফ। কিন্তু এনবিআর এ বছরও বড় ধরনের ঘাটতির মুখে পড়তে যাচ্ছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ঘাটতি হয়েছে ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা। এই সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আদায় করেছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা। এই সময়ে ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ছিল।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে গড়ে প্রতিদিন সাড়ে নয় শ কোটি টাকার মতো আদায় হয়। এখন পুরো বছরের লক্ষ্য অর্জনে প্রতিদিন আগের চেয়ে আড়াই গুণ বেশি শুল্ক কর আদায় করতে হবে।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরে জন্য মূল লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় না হওয়ায় লক্ষ্য কমানো হয়।
এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ে। এ ছাড়া অর্থনীতি তথা ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতিও রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়ার কারণ। আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট আদায় বিঘ্ন হয়েছে। আয়কর কর কম আদায় হয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, প্রতিবছর এনবিআরের ওপর যৌক্তিকভাবে বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে। এ জন্য লক্ষ্য অর্জিত হয় না।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-মার্চ মাসে আমদানি, ভ্যাট ও আয়কর—এই তিন খাতের মধ্যে কোনোটিতেই সাত মাসের লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
পরিসংখ্যান
জুলাই-মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি আয়কর খাতে। এই খাতে লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা। এই সময়ে আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। আয়করে ঘাটতি হয়েছে ২৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ৯ মাসে আমদানি খাতে ৯০ হাজার ৭২৭ কোটি টাকার লক্ষ্যের বিপরীতে ৭৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। এই খাতে ঘাটতি হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।
গত জুলাই-মার্চ সময়ে ভ্যাট খাতে আদায় হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। এই সময়ে এই খাতে লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। এ খাতে ঘাটতি হয়েছে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা।