আওয়ামী লীগের সময়ে গণমাধ্যমে উন্নয়নের বয়ান তৈরি করা হয়েছিল। গণমাধ্যমের সহযোগিতা ছাড়া বিগত সরকার এত বছর টিকে থাকতে পারত না। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার ‘সংবাদ না বয়ান; গণমাধ্যমের ঝোঁক ও ঝুঁকি’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন বক্তারা। এর আয়োজক প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে মূল আলোচক পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, প্রধান অতিথি উপাচার্য ড.

মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, আলোচক যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম এবং কবি, বুদ্ধিজীবী ও ক্রিটিক রিফাত হাসান। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী আর রাজী সেমিনারের সঞ্চালনা ও সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘মিডিয়ার সহযোগিতা ছাড়া ফ্যাসিস্ট সরকার এত বছর টিকে থাকতে পারত না। আওয়ামী লীগের সময়ে সংবাদমাধ্যমে উন্নয়নের যে বয়ান তৈরি করা হয়েছিল সুন্দর সোনার বাংলার, সেই বয়ান বা ন্যারেটিভের বাইরে কিছু শোনা যেত না। এই ন্যারেটিভের বাইরে কেউ কিছু বলার চেষ্টা করলে তাদের লিমিটেড স্বাধীনতা দেওয়া হতো। বলতে পারবে, কিন্তু শুনবে না, মিডিয়ায় আসবে না, রাষ্ট্র শুনবে না, ধরে নেওয়া হবে, এই কথাটা বলা হয়নি। এই অভিযোগ করা হয়নি। এভাবে সুন্দর সোনার বাংলার বয়ানের মাধ্যমে সার্বভৌমত্ব, অর্থনীতি, জীবন ও জবান চুরি করা হয়েছিল। এর সহযোগিতা করেছিল মিডিয়া।’

রিফাত হাসান বলেন, ‘মিডিয়া হচ্ছে এমন জাদুকর, যার ইচ্ছাশক্তির ওপর আপনি কখনও শয়তান, কখনও ফেরেশতা হয়ে উঠতে পারেন। তাই আমি মিডিয়ার স্বাধীনতার চেয়ে নৈতিকতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি।’

ড. মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে দেখা গেছে, গণতন্ত্রের সূচক যতটুকু নেমেছে, প্রেস ফ্রিডমও ততটুকু কমেছিল।’
উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘সাংবাদিকদের নির্ধারণ করতে হবে তারা সত্যসন্ধানী  হবেন, নাকি রাষ্ট্রীয় বয়ানকারী হবেন।’

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহায়তায় আয়োজিত সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প আইব

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ‘মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে’ উদ্বিগ্ন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিতে ‘মৌলিক পরিবর্তনের ঘটনায়’ গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, জনগণকে ‘বিভক্ত ও প্রতারিত’ করতেই নানা বিভাজনমূলক কথাবার্তা বলা হচ্ছে।

আজ সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এক বক্তৃতায় ফলকার টুর্ক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার বিষয়ে গত কয়েক দশকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের উভয় দলের সমর্থন পেয়েছিলাম।...কিন্তু দেশটির অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতি মৌলিকভাবে দিক পরিবর্তন করেছে। এটা নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

ফলকার টুর্কের অভিযোগ, ‘মানুষকে বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে যেসব নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল, এখন সেই সব নীতিকেই বৈষম্যমূলক তকমা দেওয়া হচ্ছে।...জনগণকে বিপর্যস্ত, প্রতারিত এবং বিভক্ত করতেই এসব বাগাড়ম্বরপূর্ণ কথা বলা হচ্ছে। এসব কিছু অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ তৈরি করছে।’

গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর অনেক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প। এসব আদেশের মাধ্যমে তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ও বেসরকারি খাতের নানা কর্মসূচি বাতিল, স্থগিত বা সংকুচিত করেছেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে প্রত্যাহার করে নেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র না থাকায় এই কাউন্সিল কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তা নিয়ে আজ জোরালো মন্তব্য করেছেন ফলকার টুর্ক।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই সময়ে তাঁর প্রশাসন ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সবার আগে’ নীতির সঙ্গে সংস্থাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা খতিয়ে দেখছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ