Samakal:
2025-04-02@21:27:23 GMT

সেতুর পাশেই সেতু, মাঠেও সেতু

Published: 26th, January 2025 GMT

সেতুর পাশেই সেতু, মাঠেও সেতু

চারপাশে ফসলি জমি। আশপাশে কোনো সড়ক নেই। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এমন স্থানে সেতু নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। জমি দখল করে এ কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ এক কৃষকের। পরে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন বিশ্বনাথপুর গ্রামে জমির মালিকানা দাবি করা মুনছুর আলীর ছেলে মাজহারুল ইসলাম পলাশ।
উপজেলার শাখাহার ইউনিয়নের দুদাহারা গ্রামের রাস্তায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও একটি নির্মাণের অনুমোদন নিয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। অথচ এর মাত্র ৫০ ফুট দূরে আরেকটি সেতু রয়েছে। একই স্থানে আরেকটি নির্মাণ করায় তা মানুষের কাজে লাগবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে সরকারের টাকার অপচয় হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ তুলেছেন। তবে কাজ না করলে টাকা ফেরত যাওয়ার শঙ্কা থাকায় সেতু দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
পলাশের অভিযোগে জানা গেছে, বিশ্বনাথপুর গ্রামের মুনছুর আলী একটি জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলসহ চাষাবাদ করে আসছেন। হঠাৎ জমিটিতে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। এতে বাধা দিলেও তা উপেক্ষা করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলেও এর প্রতিকার না পেয়ে আদালতে মামলা করেন তিনি। বর্তমানে বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে।    
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রামীণ রাস্তায় ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। কোটি টাকার কাজটি পান গোবিন্দগঞ্জের ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম রফিক। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বিশ্বনাথপুর ও তালুক রহিমাপুরের মাঝামাঝি ফাঁকা জমিতে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এটি কাজে আসবে না। সেতু যথাস্থানে নির্মাণ না করে কোটি টাকা পানিতে ফেলা হয়েছে। 
স্থানীয় বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান দুলু জমি দখল করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দিয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। যদিও জমিটি খাস খতিয়ানের দাবি করে গোবিন্দগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য দুলু বলেন, প্রকল্প কর্মকর্তা ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে পারছিলেন না। তাই জনস্বার্থে এ কাজে সহযোগিতা করেছেন বলে দাবি তাঁর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক যুবকের ভাষ্য, তারা সেতু নির্মাণের ভিডিও করে রেখেছেন। এতে দেখা গেছে, সেতুর উইন ওয়ালে রড কম দেওয়া হয়েছে। ফলে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ছাদ ও রেলিংয়েও রড কম। নিম্নমানের কাজ হয়েছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সেতুটি। এভাবে অনিয়ম করে কোটি টাকার বড় অংশই আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। 
নির্মাণকাজের একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্মাণকাজে যুক্ত এক শ্রমিকের ভাষ্য, নির্মাণের শেষ দিকে কিছু রড কম পড়েছিল। সেদিন কাজের সময় কয়েকজন যুবক ভিডিও করেন। রড কমের বিষয়টি ঠিকাদারকে জানানো হয়েছিল।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা যেখানে জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, সেখানেই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম রফিক। তিনি বলেন, নির্মাণকাজের শুরু থেকে তিনি সেখানে যাননি। ‘মিস্ত্রি’কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। মিস্ত্রি কাজে ফাঁকি দিয়ে রড 
কম দিতে পারে।
এদিকে উপজেলার শাখাহার ইউনিয়নের দুদাহারা গ্রামের রাস্তায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এর ৫০ ফুটের মধ্যে রয়েছে আরেকটি সেতু। ফলে এটিও মানুষের কাজে লাগবে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বিধবা নারী ইয়াসমিন আক্তারের জমি দখল করে সেতুটি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ সেতু নির্মাণে যুক্ত ঠিকাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
কাজ না করলে প্রকল্প ফেরত যাবে জানিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিন্দার আলী বলেন, জমিটি খাস। যদি রাস্তা না থাকে, তবে বিএনপির লোকজন সেটি করে দেওয়ার চুক্তি নিয়েছে। আরেক সেতুর বিষয়ে জানান, ‘এসব সেতু তো আপনাদেরই কাজে লাগবে। আমি কি টাকা মেরে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি? এখন না হলেও এক সময় কাজে লাগবে।’
ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার এখতিয়ার নেই ভূমি অধিগ্রহণ করে সড়ক নির্মাণ করার। দুটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর কর ছ ন সড়ক ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধির ফোনালাপ

যুক্তরাষ্ট্রের উপজাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অ্যালেক্স এন ওং বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ (উচ্চ প্রতিনিধি) ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে টেলিকনফারেন্স করেছেন। দুই কর্মকর্তা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে বলেন, নতুন মার্কিন প্রশাসন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ।

মার্কিন সরকার সম্প্রতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করেছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী। ২০১৭ সাল থেকে তারা প্রায় ২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রেখেছে এবং জাতিসংঘকে জরুরি খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্র জুলাই বিদ্রোহের সময় বাংলাদেশের ছাত্রী প্রতিবাদী নেতাদের মর্যাদাপূর্ণ ম্যাডেলিন অ্যালব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ