ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ‘বাংলাদেশের কসাই’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া আন্দোলন, সে সময় তার এবং তৎকালীন সরকারের অবস্থানসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

সাবেক ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

লায়লা কানিজের রিমান্ড শুনানিতে মুন্নী সাহা প্রসঙ্গ

ওই সাক্ষাৎকারে কামাল দাবি করেন, বাংলাদেশে যৌথ অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে; ইসলামী উগ্রবাদ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভ্যুত্থান।

সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রেস সচিব বলেন, “আসাদুজ্জামান খান কামাল হচ্ছেন ‘বাংলাদেশের কসাই’। দেশে যে ছোট ছোট বাচ্চা ছেলে-মেয়ে, শিক্ষার্থী, শ্রমিক, রিকশাওয়ালাদের নির্দয়ভাবে খুন করা হয়েছে, তার অন্যতম কসাই হচ্ছেন উনি। তাকে যারা প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে, নিউজ যারা করছে, তাদের মানটা বোঝেন। এটা আন্তর্জাতিক প্রোপাগান্ডার অংশ। পৃথিবীর কেউ কোনো কসাইকে প্ল্যাটফর্ম দেয় না।”

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সুইজারল্যান্ড সফরের সার্বিক বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনে আসেন শফিকুল আলম।

গুজবের বিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “যদি এটা আইনের ব্যত্যয় হয় তাহলে আইনি ব্যবস্থার বিষয় আছে।”

ব্যবসায়ীদের নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, “ব্যবসায়ীদের জন্য বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ দিয়েছি। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সঠিক পরিবেশ দিতে পারছি কি না, সেটা তাদের বড় কনসার্ন হওয়া উচিত।”

প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা পালিয়েছেন বলে যে গুজব রটেছে, সে বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, “যারা পালিয়েছেন, তারাই ছড়াচ্ছে। শেখ হাসিনা পালায় না বলে, উনি পালালেন। ওনার চ্যালা-চামুন্ডারা এগুলো করছেন। প্রতিবার উনি (প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফর) আসলে এটা বলেন। এটা বলে যদি উনারা মনে মনে সুখ পান, তা পেতে দেন।”

দেশে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কারখানা খুলবে, বন্ধ হবে এটা প্রাকৃতিক নিয়ম। কিন্তু সরকার দেখে রপ্তানি বাড়ছে কি না। দেশের রপ্তানি সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ৭ শতাংশ, অক্টোবরে ১৬ বা ১৮ শতাংশ, নভেম্বরে ২২ শতাংশ, ডিসেম্বরের ১৮ শতাংশের মত। আমাদের প্রবৃদ্ধি সেই রকম আছে। রপ্তানি বৃদ্ধি মানেই হচ্ছে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হওয়া।”

বন্ধ হওয়া কারখানার মালিকদের বিষয়ে তিনি বলেন, “তাদের বেশিরভাগ মালিক পালিয়ে গেছেন। পুরো দায়টা আমাদেরও ওপর দিয়ে গেছেন। ব্যাংক থেকে যা যা ছিল তা চুরি করে পালিয়ে গিয়ে বেতন না দিয়ে, মজা দেখতেছেন। ভাঙচুর করা হচ্ছে দুই-তিনটা কারখানা মিলেই। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান খুবই সামান্য। একদমই কিছুই না।”

রপ্তানি তথ্যে সরকার কারসাজি করছে না জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “শেখ হাসিনার আমলে রপ্তানির তথ্য কারসাজি করা হয়েছিল। এটা ওই সময়ে রিপোর্ট হয়েছিল।”

সুইজারল্যান্ডে অনেকগুলো বৈঠকের মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

কবে নাগাদ অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, “বৈশ্বিকভাবে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনা খুবই ধীরগতির (স্লো) প্রক্রিয়া। এটা নিয়ে যত দ্রুত মুভ নেওয়া দরকার, তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করেছে।

“যে টাকা চুরি হয়েছে তা দেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকা, সেটা চুরি করে নিয়েছে শেখ হাসিনার চোরতন্ত্রের লোকজন। এটা যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনব। এটার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন, তা সবাই দিচ্ছে। টাকা ফিরিয়ে আনা আমাদের টপ প্রায়োরিটি। প্রধান উপদেষ্টা যাদের সঙ্গেই বৈঠক করছেন, সেখানে বিষয়টি তুলছেন।”

সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারির পরও মাজারে হামলার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, “মাজার বাংলাদেশে একটি অন্যতম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। দেশের লাখ লাখ জনগণ মাজারে যান। তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান করি। যারা মাজারে হামলা করবে, তাদের বিষয়ে সরকারের জিরো টলারেন্স। কোনোভাবে বরদশত করব না।”

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ সরক র র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্লে অফে রিয়াল-ম্যানসিটি মুখোমুখি 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির খারাপ সময় যেন শেষই হচ্ছে না। নতুন ফরম্যাটের গ্রুপ পর্বে খারাপ সময় পার করেছে দু’দলই। ম্যানসিটি গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিতে প্লে অফ নিশ্চিত করেছে। 

রিয়াল মাদ্রিদের প্লে অফে উঠতে খুব বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। তবে সেরা আটে থেকে সরাসরি শেষ ষোলো নিশ্চিত করতে পারেনি কার্লো আনচেলত্তির দল। 

সেরা আটে থাকতে না পারার শাস্তিই যেন পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। সেরা ষোলোয় যাওয়ার লড়াইয়ে প্লে অফ খেলতে হবে রিয়ালের। ওই লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার সিটিকে পেয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা। 

আগামী ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে অফের প্রথম লেগ মাঠে গড়াবে। ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি মাঠে গড়াবে প্লে অফের দ্বিতীয় লেগ। শেষ ষোলোর লড়াই ৪ ও ৫ মার্চ এবং ১১ ও ১২ মার্চ মাঠে গড়াবে। 

কোয়ার্টার ফাইনাল হবে ৮ ও ৯ এপ্রিল এবং দ্বিতীয় লেগ হবে ১৫ ও ১৬ এপ্রিল। এছাড়া ২৯ ও ৩০ এপ্রিল সেমিফাইনালের প্রথম লেগ এবং ৬ ও ৭ মে দ্বিতীয় লেগ মাঠে গড়াবে। ৩১ মে হবে ফাইনাল। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ