জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ঘরে ফিরলেন আন্দোলনকারীরা
Published: 26th, January 2025 GMT
পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজসহ চার বিচারকের অপসারণ দাবিতে আদালতের মূল ফটকে তালা ও সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আদালত চত্ত্বরে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক অভিযুক্ত বিচারকদের প্রত্যাহারের আশ্বাস দিলে ঘরে ফিরে যান আন্দোলনকারীরা।
আরো পড়ুন: বিচারক অপসারণ না হওয়ায় আদালতের ফটকে তালা, সড়ক অবরোধ
আরো পড়ুন:
বিচারক অপসারণ না হওয়ায় আদালতের ফটকে তালা, সড়ক অবরোধ
খুবির অর্ণবের মা, ‘বুকে ফিরে আয় আমার বাবা’
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “সোমবার থেকে এই বিচারকরা পঞ্চগড়ে দায়িত্ব পালন করবেন না। তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে, তা লিখিত আকার দিলে আমি প্রধান বিচারপতি বরাবর পাঠাতে পারব।”
এর আগে, আজ দুপুরে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ গোলাম ফারুক এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মন্ডলসহ চার বিচারকের অপসারণে দাবিতে কর্মসূচি পালন শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এসময় তারা আদালত ফটকে তালা দিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় সন্ধ্যার পর তারা আদালত চত্ত্বরে প্রবেশ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী ও মোকাদ্দেসুর রহমান সান।
গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিক্ষোভ মিছিল থেকে চার বিচারক অপসারণে আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। তারা সেদিন জজ আদালত ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য এবং বিচারকদের মধ্যে এখনো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী প্রীতি মনোভাব বিরাজমান বলে অভিযোগ করেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সম্প্রতি জেলা জজ আদালত এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কর্মচারী নিয়োগে পরীক্ষা হয়। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম হওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রেই হট্টগোল শুরু হয়। পরীক্ষার্থীদের বৃহৎ অংশ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি তোলেন। পরে নিয়োগ বোর্ড সেই পরীক্ষা বাতিল করে। পরবর্তীতে আবারো পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষাতেও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
নিয়োগ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য সাধারণ পরীক্ষার্থীদের পক্ষে নিয়োগ বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয়করা কথা বলেন। জেলা জজ গোলাম ফারুক এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মন্ডল সমন্বয়কদের দাবির কোনো তোয়াক্কা না করেই নিজেদের নির্ধারণ করা ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রদানের পাঁয়তারা করেন। এতে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলা হয়।
সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, “বিগত দিনে কর্মচারি নিয়োগে আনিসুল হকের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকদের পঞ্চগড়ের আদালতে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ গোলাম ফারুক। এবারও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। আমরা মেধার ভিত্তিতে সুষ্ঠু নিয়োগের দাবি জানালে এই জজ এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। আমরা পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট হটিয়েছি, তারা একথা ভুলে গেছেন। আজকে একটি সফল আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা পঞ্চগড়ের আদালতকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে পেরেছি। সারাদেশের বিচারকদের জন্য এটা দৃষ্টান্ত।”
অপর সমন্বয়ক মোকাদ্দেসুর রহমান সান বলেন, “তারা শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দেদারছে জামিন দিয়েছেন। এরা পতিত সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মদদপুষ্ট। আজকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার নেই, আনিসুল হকও নেই। গোলাম ফারুক, মেহেদী হাসানরাও থাকতে পারবে না। আমরা ইতোমধ্যে আশ্বস্ত হয়েছি, তাদেরকে আজকের মধ্যেই এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক অবর ধ পর ক ষ হওয় য়
এছাড়াও পড়ুন:
ইফতার করতে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচবিবিতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব গোলাম নাছির (বিপ্লব) সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। আজ সোমবার বিকেলে ইফতার করতে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার ফিচকারঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পাঁচবিবি থানার ওসি মইনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত গোলাম নাছির পাঁচবিবি উপজেলার মধ্য মালঞ্চ গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা গোলাম নাছির পারিবারিক কাজে সোমবার পাঁচবিবি উপজেলা সদরে এসেছিলেন। তিনি ইফতার করতে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। ইফতারের আগে ফিচকার ঘাট এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কে ঘোরানোর সময় মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে গোলাম নাছির মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে সড়কের ওপর পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় তাঁকে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম সোমবার রাত সোয়া দশটায় প্রথম আলোকে বলেন, ইফতার করতে বাড়িতে যাওয়ার সময় পাঁচবিবি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে ওসি জানিয়েছেন।