‘নয়া মানুষ’ সিনেমার বিকল্প প্রদর্শনী
Published: 26th, January 2025 GMT
গণমানুষের কাছে ‘নয়া মানুষ’ সিনেমা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিকল্প প্রদর্শনীর ঘোষণা দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। গত ২৫ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে প্রদর্শনীটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে চলে এ প্রদর্শনী।
এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ জানুয়ারি ও আগামী ১ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে স্ব চিন্তনের আয়োজনে বিকাল সাড়ে ৪টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হবে সিনেমাটির প্রদর্শনী।
প্রদর্শনী নিয়ে নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “দেশের একটা বিশাল অংশের মানুষ বিভিন্ন কারণে সিনেমা হলবিমুখ। পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিনেমা দেখার দীর্ঘদিনের অভ্যাস ত্যাগ করেছে। কিন্তু ‘নয়া মানুষ’ পরিবারের সবাইকে নিয়ে বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে দেখার মতো সিনেমা। সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখাটা ব্যয়বহুল, যা বহন করার সামর্থ্য অনেকের নেই। তাই আমরা এই বিকল্প প্রদর্শনীর মাধ্যমে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই সিনেমাটি।”
সিনেমার কাহিনিকার আ মা ম হাসানুজ্জামান বলেন, “আমরা মানুষের যে আত্মিক সম্পর্ক তথা মানবিক দায়িত্ব, তা তুলে ধরতে চেয়েছি ‘নয়া মানুষ’ সিনেমার গল্পে। কারণ এই বিষয়টি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে আত্মিক ও মানবিক দায়িত্বগুলো সম্পর্কে তারা সচেতন হবে। তাই সিনেমাটি সবার দেখা উচিত।”
এতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আ মা ম হাসানুজ্জামান, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, স্মরণ সাহা, শিখা কর্মকার, মাহিন রহমান, মেহারান সানজানা, পারভীন পারু, মেরি, শিশুশিল্পী ঊষশী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, চরের মেহনতি মানুষের জীবন ও প্রকৃতির খেয়ালিপনার বিভিন্ন দিক নিয়ে সোহেল রানা বয়াতি নির্মাণ করেছেন তাঁর প্রথম সিনেমা ‘নয়া মানুষ’। ৬ ডিসেম্বর এটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। হাসানুজ্জামানের ‘বেদনার বালুচরে’ গল্প অবলম্বনে সিনেমার চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন মাসুম রেজা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।