নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে চাঁদা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে গ্রামবাসীর সঙ্গে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে তিনজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন।

স্থানীয়রা জানান, চাঁদা চাওয়া নিযে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে টেঁটা, বাঁশ, রড, ইট, পাথর নিয়ে কয়েকশত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চেয়ারম্যান রাতুল হাসান ও সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হক পেছন থেকে নিজ নিজ পক্ষের লোকজনকে নির্দেশনা দেন। এতে আহত আলী আহমদ (২৩), আলমগীর হোসেন আলম (১৯) এবং অজ্ঞাত একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। জেলা সদর হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত আলমের বোন ইয়াসমিন বলেন, ‘‘বর্তমান এবং সাবেক চেয়ারম্যান চাঁদার জন্য দফায় দফায় বাড়িতে লোক পাঠায়। আমার বাবা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারধর করে ও হুমকি-ধমকি দেয়। এ ঘটনায় দুই মাস বাবা গ্রামে ছিলেন না। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে আমার ভাই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি আসলে রাসেল, রায়হান, রাজিবসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে শাসিয়ে যায়। আজ সকালে তাদের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন আমাদের উপর হামলা চালায় এবং আমার ভাইকে বুকে গুলি করে মেরে ফেলে।’’

তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে রায়পুরায় বাঁশগাড়ী এলাকায় চাঁদা তোলা নিয়ে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। তারা ঝগড়া করবে, তারা সংঘর্ষ করবে, আমরা কেন টাকা দেবো? এ জন্য আমার ভাইকে হারাতে হলো।’’

বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের মফিজ উদ্দিন, মোবারক মিয়া, ফজলে রাব্বিসহ কয়েকজন জানান, বছর পর বছর ধরে সাবেক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু টেঁটাযুদ্ধ লাগিয়ে রেখে বিভিন্নভাবে ফায়দা লুটে গিয়েছেন। বাঁশগাড়ী এলাকার মধ্যে এমন বাড়ি নেই, যে চাঁদা দিতে হয় না। রাজু চলে গেলেও তার লোকজন নিয়মিত বাড়িতে এসে চাঁদা দাবি করেন। যদি কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান, তবে নির্যাতন করেন। বিশেষ করে যারা বিদেশ ফেরত বা যাদের পরিবারের লোক বিদেশ থাকে; তাদের মোটা অংকের টাকা দিতে হয় টেঁটাযুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য।

তারা জানান, এখানে পুলিশ, প্রশাসন কেউ কিছু বলতে পারে না। কেউ কিছু বললে তাকে প্রাণ হারাতে হয়। না হলে এলাকা ছাড়া হতে হয়। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে, ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল হাসান ও সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানান, সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। তাদের একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।

ঢাকা/হৃদয়/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

টিকটক করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে তরুণের মৃত্যু

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় টিকটক ভিডিও তৈরি করতে বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাকিব আহমদ নামে এক তরুণ মারা গেছেন। বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর এলাকায় একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

সাকিব দক্ষিণ সুরমার কামালবাজার ইউনিয়নের কুড়িগ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে। তিনি ধরাধরপুর এলাকায় ছাদেক মিয়ার কলোনিতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি। একটি দোকানে কাজ করতেন সাকিব। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে সাকিব ও তার তিন বন্ধু মিলে টিকটক ভিডিও করতে একটি বাড়ির দু’তলার ছাদে উঠেন। ভিডিও করার সময় পা ফসকে নিচে পড়ে যান। ওই বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দক্ষিণ সুরমা থানার পরিদর্শক মো. মারফত আলী সমকালকে জানিয়েছেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালে রাখা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ