নান বিতর্কে বরাবরই শিরোনামে এসেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। কিন্তু এগারোতম আসর ছাড়িয়ে গেল সব মাত্রা। বিপিএল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়া মাঠে নেমেছে দুর্বার রাজশাহী।

অথচ আসরের শুরু থেকে নানা আয়োজনে নতুন বিপিএলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফারুক আহেমেদ। তার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য চেষ্টা করে রাইজিংবিডি, কিন্তু সাড়া দেননি।  

রবিবার (২৬ জানুয়ারি, ২০২৫) রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিং করছে রাজশাহী। টসের সময় অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ জানান কোনো বিদেশি ছাড়াই নামছেন তারা।

আরো পড়ুন:

বেতন সংকট, বিদেশি ছাড়া নজিরবিহীন ম্যাচ খেলছে রাজশাহী

সিলেটকে শক্তি দেখিয়ে প্লে’অফে বরিশাল

বাইলজ অনুযায়ী দুজন ক্রিকেটারকে খেলাতেই হবে। আর সর্বোচ্চ চারজন। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় সেটি পরিবর্তনের নিয়মও রেখেছে। রাজশাহীর আবেদনের ভিত্তিতে বিদেশি ছাড়াই রাজশাহীকে বিপিএলে ম্যাচ খেলার অনুমতি দিয়েছে টেকনিক্যাল কমিটি। 

পরবর্তীতে সেটি ব্যাখা দিয়ে স্পষ্ট করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এক বিবৃতিতে বিসিবি জানায়, রাজশাহীর অনুরোধ বিবেচনা করার পর বিপিএল ২০২৪-২৫ এর ম্যাচ খেলার শর্তাবলির ধারা ১.

২.৮ অনুযায়ী, টেকনিক্যাল কমিটি এই ম্যাচের জন্য দুর্বার রাজশাহীকে শুধুমাত্র বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠনের অনুমতি দিয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রামে অনুশীলন বয়কট করেছিল রাজশাহী। তখন তড়িঘড়ি করে টাকা পরিশোধ করায় এবং বিসিবি প্রেসিডেন্ট ফারুকের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়। ঢাকায় এসে আরও একধাপ এগিয়ে দলটির বিদেশি ক্রিকেটাররা ম্যাচই বয়কট করে। 

বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন দলটির বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। তিনি বলেছেন, “বিদেশি ক্রিকেটার আসেনি, এটা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কী ধরণের সিদ্ধান্ত আসবে, সেটি বলতে পারছি না। কিন্তু কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আমরা ছাড় দিচ্ছি, খেলছে খেলুক। কিন্তু কতটুকু ছাড় দেওয়া যাবে? আমরা তো বিপিএলের মর্যাদা ক্ষুন্ন হতে দিতে পারি না। বিসিবির প্রধান দায়িত্ব বিপিএলের মর্যাদা রক্ষা করা।’’ 

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যাম্পে ফেরার প্রস্তুতি মেয়েদের

বাড়ির পাশে ফুল বাগানে শাড়ি পরে ছবি তুলে তা শেয়ার করছেন কেউ। আবার কেউ কেউ পাহাড়ের কোলে বসে সেলফি তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছেড়েছেন। ফুটবল থেকে দূরে থাকা সানজিদা আক্তার-ঋতুপর্ণা চাকমাদের সময়টা যাচ্ছে এখন পরিবারের সঙ্গে হাসি আর আনন্দে। এক মাসের বেশি সময় ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়া মেয়েরা ভুলে যেতে চায় পিটার বাটলারের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নেতিবাচক বিষয়গুলো। সব ভুলে এখন ক্যাম্পে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তহুরা খাতুন-শামসুন্নাহাররা। নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্রস্তুতির জন্য আগামী ৬ এপ্রিল ক্যাম্পে ফেরার কথা জাতীয় নারী ফুটবলারদের। বাটলারের অধীনে অনুশীলন বয়কট করা ১৮ নারী ফুটবলারও সেদিন যোগ দেবেন। তাদের নমনীয় হওয়াটা বাংলাদেশ নারী ফুটবলের জন্য ইতিবাচক বটে।

বডি শেমিংসহ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা সাবিনা খাতুন-মাসুরা পারভীনরা অনুশীলন বয়কট করেন। সিনিয়রদের ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করে আসে বাংলাদেশ দল। দুটি ম্যাচে হারলেও তরুণ এবং নতুন মেয়েদের নিয়ে ভবিষ্যতের দল গঠনের কাজ করতে থাকেন বাটলার। কিন্তু নারী সাফ জিততে যাদের বেশি অবদান, তাদের বাদ দিতে চায় না বলে বাফুফে মোট ৫৫ জনকে চুক্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়। ৩৭ জন চুক্তি করলেও বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি। মূলত কোচ ইস্যুতে তাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক আলোচনা হওয়ায় ট্রমায় চলে গিয়েছিল মেয়েরা। তাই ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখের পরে ছুটি নিয়ে যে যার মতো করে নিজ বাড়িতে চলে গিয়েছে। তবে ঈদে যাওয়ার আগে বাফুফে থেকে টাকা নিয়ে যেতে পারত। এবার চুক্তি না করাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেয়েরা। শুক্রবার সমকালের সঙ্গে আলাপে এ বিষয়টা স্বীকার করেছেন এক নারী ফুটবলার, ‘আমরা যদি চুক্তিতে থাকতাম, হয়তো আমরা বেতন পেতাম। তখন আরও বেশি ভালো লাগত আর ঈদটা একটু বেশি ভালোভাবে কাটাতাম।’ 

মেয়েদের আয়ের উৎসই হলো ফুটবল। তাই এবার বেতন পাননি বলে অনেকের ঈদটা যেমন ভালো কাটবে না, তেমনি করে অনেক দিন পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারার তৃপ্তিও আছে। ‘দেখেন আমি যখন ক্লাস সিক্সে উঠছি, তখন বাফুফের ক্যাম্পে চলে গিয়েছিলাম। ২০১৫ সালের পর থেকে এই পর্যন্ত বেশির ভাগ সময়ই ছিলাম ক্যাম্পে। পরিবারের সঙ্গে সেভাবে সময় কাটাতে পারিনি। এবার অনেক দিন বাড়িতে আছি বলে ভালো লাগছে। পরিবারও খুশি। বাড়িতে ঈদ করব বলে আমি এবং আমার পরিবার অনেক খুশি। আর যা কিছু হয়েছে আমি এগুলো নিয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনাও করি না। খেলা ও পরিবার আমার কাছে দুটি ভিন্ন জিনিস’– পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস এভাবেই প্রকাশ করেছেন ওই নারী ফুটবলার।

দেড় মাসের মতো বাফুফে ক্যাম্পের বাইরে আছেন নারী ফুটবলাররা। এই সময়ে অনেক কিছু উপলব্ধি করেছেন তারা। কোচের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলন করাটা যে সঠিক ছিল না, তা বুঝেছেন। বেশ কয়েকজনই জানিয়েছেন সবার সঙ্গে কোচের ঝামেলা ছিল না। হাতেগোনা কয়েকজনকে কোচ পছন্দ করতেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী ফুটবলার জানিয়েছেন, অনেকেই নাকি মোবাইল ফোন নিয়ে অনুশীলনে যেতেন, ‘সত্যি বলতে কি সব মেয়ের সঙ্গে কোচের ঝামেলা হয়নি। কিছু কিছু ফুটবলারের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়েছে। আমার সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। যেহেতু ফুটবল খেলা একটা টিম ওয়ার্ক, সেহেতু দলের সঙ্গে থাকতে হয়েছে।’ 
বিদ্রোহীরা সব ভুলে ক্যাম্পে ফিরবেন। কিন্তু এখন দেখার বিষয় পিটার বাটলার সেই মেয়েদের কীভাবে গ্রহণ করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শিগগিরই বিয়ে হবে, যদি দেন সালামি’
  • ক্যাম্পে ফেরার প্রস্তুতি মেয়েদের