ঘুষ না পেয়ে ভোটার হতে আসা এক ব্যক্তিকে ‘ঘাড়ধাক্কা’
Published: 26th, January 2025 GMT
ঝালকাঠির রাজাপুরে ঘুষ না পেয়ে ভোটার হতে আসা এক ব্যক্তিকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রবিউল গাজী।
ডহরশঙ্কর গ্রামের নুরুল ইসলাম গাজীর ছেলে রবিউল গাজী জানান, তার ছোট ভাই সিয়াম সৌদি আরব যাবেন। এ কারণে ভোটার আইডি কার্ড করতে অনলাইনে ফরম পূরণের পর কাগজপত্রসহ নির্বাচন অফিসে যান। এ সময় দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কর্মকর্তা এমদাদুল হক ও তার সহকারী বিপ্লব কাগজপত্র জমা নিতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে তারা ২ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের বেয়াদব বলে গালাগাল করেন। এক পর্যায়ে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এমদাদুল হক। তার দাবি, রবিউল নামে একজন ভোটার হতে আসেন। তাকে বলা হয়, ভোটার হতে যেসব সরঞ্জাম প্রয়োজন সেগুলো ঝালকাঠি সদর ও নলছিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে অফিসে কাজ করার সুযোগ নেই। এভাবে বুঝিয়ে বলার পরেও তিনি টাকা দিলে সব হয় বলতে থাকেন। এর পর দেখে নেবেন বলে উচ্চ স্বরে কথা বললে কর্মচারীরা তাকে অফিস থেকে বের করে দেয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার
চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নের খোর্দগোবিন্দপুর মাঠপাড়ার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে শত বছর ধরে গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তাটি পাকা করতে দরপত্রও করা হয়েছে। সেই রাস্তার জমি নিজের দাবি করে পটোল রোপণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী। এতে মানুষের চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এক যুগে কয়েক দফা কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় শতবর্ষী মাটির রাস্তাটির সংস্কার করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে পাশের জমির মালিক সমজান আলী শ্রমিক দিয়ে রাস্তা কেটে ফসলি জমি বানিয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, দৈর্ঘ্যে ১২০ ফুট ও প্রস্থে ৪ ফুট অংশ কেটে নিজের জমির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন সমজান আলী। সেখানে পটোল রোপণ করা হয়েছে। ১৩ ফুট প্রস্থের সড়ক থেকে আরও ৪ ফুট কেটে নেওয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা পাকাকরণ কাজ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও রাস্তা কাটা বন্ধ না করে উল্টো হুমকি দেন সমজান আলী।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের দরপত্র হয়েছে। এখন সেই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ নিজের দাবি করে কেটে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী।
নাইমুর রহমান বলেন, বাবা-দাদা সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন। এখন শত শত মানুষের চলাচল। মাঠপাড়ার ফসল ভ্যান, ট্রলি ও মিনি ট্রাকে করে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নেওয়া হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলা হলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
সমজান আলী বলেন, রাস্তার বেশির ভাগ অংশই আমার জমিতে। এ জন্য কিছু অংশ কেটে নিয়েছি। শুধু আমি রাস্তায় জমি দেব– তা হবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র এখন কাছে নেই। তবে স্থানীয় আমিন সুবল চন্দ্র ছয় মাসে দুই দফা জমি পরিমাপ করেছে। মাপ অনুযায়ী রাস্তার বেশির ভাগ অংশ আমার জমিতে পড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বলেন, জমিটি দেড় থেকে দুই বছর আগে পরিমাপ করেছি। কিছু অংশ রাস্তার ভেতরে ছিল। রাস্তাটি এখন সরকারি সম্পদ। তাই সমজান আলী জমি নিতে পারবে না– এ তথ্য তাঁকে জানানো হয়েছিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শুনানির নোটিশ করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে সমজান আলীকে আসতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জমি ব্যক্তির সম্পত্তি হলেও ২০ বছর সেখানে মানুষজন হাঁটলেই তা সরকারি হয়ে যাবে।