গাজীপুরে জামায়াতের আমিরকে নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূতের শীতবস্ত্র বিতরণ
Published: 26th, January 2025 GMT
গাজীপুরে কালিয়াকৈরে সহস্রাধিক দুস্থ ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত এইচ. ই ইয়াও ওয়েন। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার শফিপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় চীনা দূতাবাসের সহায়তায় কম্বল বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের একটি করে ফুড প্যাকেট বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এতিম শিশু ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
আরো পড়ুন:
অতীতকে স্মরণ রাখলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না: আযাদ
‘দেশ নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না’
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.
তিনি আরো বলেন, “বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ হিসাবে চীন আমাদের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু, আলোচিত পদ্মা সেতু এবং কর্ণফুলী টানেল নির্মাণে কারিগরি ও নানাবিধ সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি সড়ক, রেল, বিদ্যুৎখাতসহ দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ, কোভিড-১৯ প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশকে সিনোফার্মের টিকা সরবরাহ দুই দেশের অকৃত্রিম বন্ধুত্বের অসামান্য নিদর্শন বহন করে।”
জামায়াতের আমির বলেন, “চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে চীনের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকবে, যা এদেশের জনগণের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরও বেশি গভীর ও নিবিড় করবে।”
অনুষ্ঠানে চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জামায়াত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে চীনের রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে ওয়ামী স্কুলের শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানান।
ঢাকা/রফিক/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।