সোনারগাঁয়ে সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্বারকলিপি
Published: 26th, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সন্তান হত্যার ১০ বছর পর বিচার চেয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্বারকলিপি দিয়েছেন নিহত রুহুল জামিলের মা রওশন বানু।
বিগত এক দশকেও বিচার না পেয়ে রোববার (২৬ জানুয়ারি) সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন তিনি।
এর আগে নিহতের পরিবার দুপুরে সোনারগাঁ প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে নিহত মো.
নিহতের মা রওশন বানু জানান, আমার ছেলে রুহুল জামিলের সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমি দস্যুদের বিরোধ ছিল। তারা সে সময় তাকে হুমকি দিলে সে সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে।
পরে ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি জামিল বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে এশিয়ান হাইওয়ের রাস্তার পাশে আমার ছেলের লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আমজাদ,রাসেল, আলমগীর, জুয়েল ও রফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা জামিনে বের হয়ে আসে। পরবর্তীতে পুলিশ উল্লেখিত আসামীদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দিলে আমরা নারাজি প্রদান করি।
প্রশাসন দোষীদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। গত ১০বছর প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কাছে সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও এখনো কোন ধরনের বিচার পাইনি।
বর্তমানে আমার পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে আমার ছেলে হত্যার সঠিক বিচার ও আমাদের নিরাপত্তা বাদী করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত রুহুল জামিলের মা রওশন বানু, স্ত্রী সালমা আক্তার নিঝুম, বড় মেয়ে ফৌজিয়া আফসানা ইনান, ছোট মেয়ে সারা জামিল সিফা, বোন দিলরুবা আক্তার, বিলকিস সুলতানা, ছোট ভাই রুহুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাম্মি আক্তার লিপি।
এ ব্যপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান জানান, এ ঘটনার একটি স্বারকলিপি পেয়েছি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় এটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ব রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি ঋণ ছাড় কমছেই বাড়ছে শুধু পরিশোধ
উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থার পক্ষ থেকে ঋণের অর্থ ছাড়ের পরিমাণ এবং নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছেই। অথচ আগে নেওয়া ঋণের সুদাসল পরিশোধের পরিমাণ বাড়ছেই। গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ বেড়েছে ৩১ শতাংশ। অন্যদিকে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ শতাংশ। এ ছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের পক্ষ থেকে অর্থ ছাড় কমেছে ১০ শতাংশের মতো।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত সাত মাসে ঋণের সুদাসল বাবদ ২৯ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২০ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরিশোধ বেড়েছে ৮ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। অর্থবছরের সাত মাসে বিদেশি মুদ্রায় সুদাসল পরিশোধের পরিমাণ ২৪২ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৮৬ কোটি ডলারের কিছু কম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনকার ঋণদায় বর্তমান সরকারের সময়ের নয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার মধ্যে পরিণাম চিন্তা না করেই বড় অঙ্কের ঋণ
নেওয়া হয়। ঋণের একটি বড় অংশ রাজনৈতিক প্রকল্প, ঠিকাদারকে সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজনে নেওয়া হয়। এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকার চলমান সব প্রকল্প পর্যালোচনা করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে।
ইআরডির তথ্য বলছে, গত ছয় মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে মাত্র ২৩৫ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭১৭ কোটি ডলারেরও কিছু বেশি। অন্যদিকে গত সাত মাসে বিদেশি ঋণের অর্থ ছাড় হয়েছে ৩৯৪ কোটি ডলারের কিছু কম, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৪০ কোটি ডলারের মতো।
চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের গতি অত্যন্ত ধীর। অনেক ক্ষেত্রে এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় হচ্ছে না। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ আইএমইডির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের গত সাত মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার মাত্র ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ। গত ১৩ বছরের মধ্যে যা সবচেয়ে কম।
ইআরডির সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, চলতি অর্থবছর এডিপি বাস্তবায়নের সর্বনিম্ন রেকর্ড দাঁড়াতে পারে। অনেক কারণে এবার এ রকম হতে পারে। এর মধ্যে বিদেশি অর্থায়নের
বিভিন্ন প্রকল্পে
যেসব বিদেশি কর্মী, ঠিকাদার প্রতিনিধি ও পরামর্শক কাজ করতেন, তাদের বেশির ভাগ রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বাংলাদেশ ছেড়ে যান। তাদের বড় একটা অংশ এখনও
ফেরেননি। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম কার্যত স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী
সরকার এডিপিভুক্ত সব প্রকল্প পর্যালোচনা করছে। কিছু প্রকল্প বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এসব কারণে এডিপির বড় একটা অংশই এবার অব্যয়িত থেকে যাবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি না থাকায় উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থ ছাড়ও করছে না। এ
কারণেই অর্থ ছাড় এত কম দেখা যায়।
একই কারণে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতিও
বাড়াচ্ছে না তারা।