খুবি শিক্ষার্থী অর্ণব হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
Published: 26th, January 2025 GMT
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর তেঁতুলতলা মোড়ের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন-২ এর সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত অর্ণব এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী।
আরো পড়ুন:
যশোরে বায়েজিদ হত্যা: বিএনপি নেতা মুল্লুক চাঁনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
খুবির অর্ণবের মা, ‘বুকে ফিরে আয় আমার বাবা’
আরো পড়ুন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকার পতনের পর আমরা চেয়েছিলাম দুর্নীতিমুক্ত ও নিরাপদ একটি দেশ। কিন্তু আজ ভালো নেই আমাদের প্রাণের শহর খুলনা। সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য দিনদিন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অর্ণব হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
আরো পড়ুন: খুবির অর্ণবের মা, ‘বুকে ফিরে আয় আমার বাবা’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব রেজা, মো.
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর শেখপাড়া তেঁতুলতলা এলাকায় অর্ণব কুমার সরকার চা পান করছিলেন। এ সময় ১০-১৫টি মোটরসাইকেলে আসা সশস্ত্র যুবকরা অর্ণবকে প্রথমে গুলি করে। গুলি শরীরে লাগলে অর্ণব রাস্তার ওপর পড়ে যান। পরে সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় অর্ণবকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্ণবকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অর্ণব কুমার সরকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা নিতীশ কুমার সরকার বাদী হয়ে ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘মামলার এজাহারে হত্যার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। এ ঘটনায় আটক তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে অথবা ছেড়ে দেওয়া হবে।’’
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ম র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।
এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”
আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী