বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সেনাপ্রধান ও রূপগঞ্জের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল  কে,এম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) মৃত্যুবরণ করেছেন। রোববার (২৬ জানুয়ারী) সকাল ৮টায় সিএসএইচ হাসপাতালে মুত্যুবরণ করেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। তিনি শারীরীক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।

রূপগঞ্জের কাজী আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাদ জোহর জানাজা নামাজ শেষে বনানীস্থ সেনাবাহিনী কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এ সময় জানাজা নামাজে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

সাইফুল ইসলাম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, পূর্বাচল সার্কেলের এসিল্যান্ড উবায়দুর রহমান সাহেল, রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু, রূপগঞ্জ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু হোসেন ভুঁইয়া রানু, জেনারেল সফিউল্লাহর ছেলে কেএম ওয়াকুজ্জামান প্রমুখ।

মেজর জেনারেল কে, এম, সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ সনে তদানীন্তন ঢাকা জেলার (বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলা) রূপগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৩ সনে পাকিস্তান সেনা বাহিনীতে যোগদান করেন এবং ১৯৫৫ সনে পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমি থেকে গ্রেজুয়েশন করে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পদে নিযুক্ত হন। সেনা বাহিনীতে কমিশন প্রাপ্তির পর ১৯৭০ সন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে, স্টাফে এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সাথে কাজ করেছেন। তিনি ১৯৬৮ সনে পাকিস্তান কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ কোয়েটা থেকে পিএসসি লাভ করেন। '৭১-এর স্বাধীনতার আন্দোলনকে সমর্থন করে জেনারেল সফিউল্লাহ ২৮ মার্চ '৭১ -এ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড ইন কমান্ড থাকাকালে ঐ ব্যাটালিয়ন নিয়ে বিদ্রোহ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে মেজর সফিউল্লাহ তিনি তাঁর নামের প্রথম অক্ষর ‘এস' দিয়ে এস ফোর্স' নামে একটি নিয়মিত ব্রিগেড গঠন করেন এবং সে ব্রিগেডের কমান্ডার নিযুক্ত হন। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি জীবন বাজি রেখে কখন কখন সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। ১৬ ডিসেম্বর '৭১-এর বিজয় দিবসে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণকালে তিনি তার এই ব্রিগেড নিয়ে ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ও সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে গ্যালেন্টি এওয়ার্ড বীর উত্তম পদকে ভূষিত করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার এপ্রিল ১৯৭২ সনে তাকে প্রথম সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করেন। এই পদে তিনি আগষ্ট '৭৫ পর্যন্ত নিয়ােজিত ছিলেন। । জেনারেল সফিউল্লাহ ১৯৭৫-এর পর থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত এক নাগারে ১৬ বৎসর বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭৬-এ মালয়শিয়া ও ১৯৮১-তে কানাডায় হাইকমিশনার, ১৯৮৬-তে সুইডেনে এ্যাম্বাসেডর এবং ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার হিসেবে কর্তব্য পালন করেছেন। তিনি ১৯৯২ সনে সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগের এম,টি নির্বাচিত হন। তবে পরবর্তীতে ওনাকে আর নমিনেশন দেয়নি আওয়ামীলীগ। জেনারেল সফিউল্লাহ এক ছেলে এবং তিন মেয়ের পিতা। তার মৃত্যুতে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজিব বলেন, মেজর জেনারেল কে, এম, সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) একজন সৎ ও পরিছন্ন রাজনীতিবীদ ছিলেন। ওনার মৃত্যু তে রূপগঞ্জবাসী ও রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো। ওনার শুন্যস্খান পূরণ হবার নয়। আমরা ওনার আত্বার মাগফেরাত কামনা করছি।

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ উপজ ল আওয় ম ল গ র রহম ন কর ছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই

নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।

এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’

গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।

দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ