বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গোলমাল ছিল বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, পুরো বাংলা একাডেমিকে ঢেলে সাজানো হবে। 

রোববার সচিবালয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
 
সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, যদি কেউ গণবিরোধী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকে এবং সেটা প্রমাণিত হয় তাহলে পুরস্কারের তালিকা থেকে তার নাম বাদ যাবে। সম্প্রতি পুরস্কার ঘোষণা হলে নানা মহল থেকে আলোচনা হয়। এরপর বিষয়টি আমলে নিয়ে তালিকাটি সাময়িক স্থগিত করেছি। তালিকাটি রিভিউ করব। যদি কারও বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড বা ইন্ধনের অভিযোগ প্রমাণিত হয় বা গণবিরোধী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকে বা অপরাধমূলক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তাহলে তার নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে।

মহাপরিচালক বলেন, বাংলা একাডেমির জন্য ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি খুব ব্যস্ত সময়। আমরা একটি বাংলা একাডেমি সংস্কার কমিটি করতে চাই। যে কমিটিতে বিজ্ঞজনরা সংস্কারের নানা বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেবেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রক্রিয়ায় ভুল করতে চাইনি, কিন্তু আমাদের ভুল হয়ে গেছে। পুরো প্রক্রিয়াটি মেইনটেইন করতে চেষ্টা করেছি। এ কারণেই আমরা তিন কার্যদিবসের জন্য এগুলো সাময়িক স্থগিত করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে আমরা রিভিউ কমিটিতে উঠিয়েছি। কমিটি সেটা বিবেচনা করে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেবে।

ফ্যাসিবাদ অপসারণের দাবিতে ঘেরাও-বিক্ষোভ

এদিকে বাংলা একাডেমির আমূল সংস্কার, ‘ফ্যাসিবাদী’দের অপসারণ এবং পুরস্কার ‘কেলেঙ্কারি’তে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে একাডেমির সামনে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে ‘বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ’ ও ‘জাতীয় সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ নামের দুটি প্লাটফর্ম। 

রোববার দুপুরে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর তাদের একটি প্রতিনিধি দল বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

ঘেরাও কর্মসূচিতে কবি আবিদ আজম বলেন, স্বৈরাচারের দোসরদের পুরস্কার স্থগিত নয়, বাতিল করতে হবে। স্বৈরাচারী সরকারের সময় বাংলা একাডেমিতে অনেক অযোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের বাদ দিতে হবে। পুরস্কারের জুরি বোর্ডে যারা ছিলেন, তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে।

তরুণ কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ বলেন, বাংলা একাডেমি নির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠন না করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। পুরস্কার স্থগিত করায় যোগ্যদেরও তো অপমান করা হলো। এই দায় পুরস্কারের জুরি বোর্ডকে নিতে হবে। জুরি বোর্ডে যারা আছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, তারা এখন বইমেলার আয়োজন আর পুরস্কার দেওয়ার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। মূল কাজ যে গবেষণা, তা নিয়ে কোনো কাজ নেই।

আয়োজক জুলাই আন্দোলনের রাজপথের সংগঠন বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজের আহ্বায়ক লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজমের পরিচালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কবি মাহবুব হাসান, কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কবি শাহীন রেজা, কবি ও অভিনেতা এ বি এম সোহল রশীদ, কবি আবিদ আজম, কবি সৈয়দ রনো, নাট্যকার হুসনী মোবারক, নাগরিক যুব ঐক্যের সভাপতি কবি সাম্য শাহ, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, কবি শাকিল মাহমুদ, কবি মঈন মুনতাসীর, জুলাই আন্দোলনে আহত প্রকাশক মোরশেদ আলম হৃদয় প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পরে শনিবার মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সই করা এক নোটিসে এ বছরের পুরস্কারের তালিকা স্থগিত করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল এক ড ম প রস ক র এক ড ম র দ আজম

এছাড়াও পড়ুন:

হেফাজতে ইসলামের খুলনা মহানগর কমিটি

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ খুলনা মহানগর শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইনকে সভাপতি এবং মুফতি গোলামুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দলের নগর কমিটির প্রচার সম্পাদক হাফেজ মাওলানা ফয়জুল্লাহ সিদ্দিকী এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রবিবার (২৮ এপ্রিল) হেফাজতে ইসলামের খুলনা মহানগর শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার লক্ষ্যে ইসলামপুর জামে মসজিদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন এবং পরিচালনা করেন মুফতি গোলামুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা নাসির উদ্দীন কাসেমী, জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল্লাহ ইয়াহিয়া প্রমুখ। 

সভায় সর্বসম্মতিতে মহানগর শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা নাসির উদ্দীন কাসেমী, সহ-সভাপতি মাওলানা আসয়াদুল্লাহ, মুফতি আব্দুল হাই, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মুফতি ওয়াক্কাস আলী, মুফতি জিহাদুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুস সাত্তার, মাওলানা রুহুল আমীন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ সাঈদুর রহমান, মুফতি জাকির হুসাইন, মুফতি ওয়ালিউল্লাহ মাহমুদ, মাওলানা আবু সালেহ, মুফতি মিরাজ মাহমুদ, জি এম এমদাদুল হক, মুফতি আব্দুস শাকুর যশোরী, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন, প্রিন্সিপাল ইমদাদুল্লাহ আজমী, মাওলানা গোলাম মাওলা, মাওলানা হাসিবুর রহমান মাদানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ইলিয়াস জাহানাবাদী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাদিকুল রহমান, মাওলানা আকবর, মাওলানা আসাদুল্লাহ, মুফতি আতাউল্লাহ, মাওলানা নূর আলম, মাওলানা আবু জ্বর, হাফেজ এমদাদুল্লাহ, মুফতি জহিরুল হক, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা সিফাতুল্লাহ, মুফতি হাসান জামিল, মুফতি শেখ আব্দুল্লাহ, মুফতি মঈন, মাওলানা নূর হুসাইন, প্রচার সম্পাদক মুফতি মাহমুদ, সহ-প্রচার সম্পাদক হাফেজ মাওলানা ফয়জুল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা আশরাফ, মাওলানা বেলাল, মিডিয়া সম্পাদক সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান, দফতর সম্পাদক মাওলানা আবিদুর রহমান, সহ-দফতর সম্পাদক মাওলানা আবরার, হাফেজ শফিকুর রহমান, অর্থ সম্পাদক মাওলানা মাশহুদুর রহমান, সহ-অর্থ সম্পাদক মাও দ্বীন ইসলাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক মুফতি মানজুর আহমাদ, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ খলিলুল্লাহ, সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা জাহিদুল ইসলাম, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতী হাফিজ বিন আশরাফ, সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক খালিদ বিন রিয়াসাত ও গাজী শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সভায় মহানগরের প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে দ্রুত কমিটি গঠন এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত আগামী ৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়। 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ