কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
Published: 26th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবির) ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলাস্থ কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের হলরুমে এ আনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া সেক্টরে বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. মারুফুল আবেদিন।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে ৫১ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ২ যুবক আটক
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রিন্সিপাল কর্নেল এসএম রাকিব ইবনে রেজওয়ান, ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো.
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নাজাতের তাৎপর্য ও আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র রমজান। নাজাত মানে মুক্তি। রমজানের নাজাতের অর্থ হলো, এই মাসে মানুষ পাপ-তাপ থেকে মুক্ত হবে, পাপের আকর্ষণ থেকে মুক্ত হবে, জাহান্নাম থেকে মুক্ত হবে।
মানুষের সফলতার পথে তিনটি প্রধান বাধাস্বরূপ অপশক্তি রয়েছে—জিন শয়তান, মানুষ শয়তান ও নফস শয়তান। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি বলো “আমি আশ্রয় গ্রহণ করি মানুষের প্রতিপালক, মানুষের মালিক, মানুষের মাবুদ (আল্লাহ) এর নিকট, প্ররোচনাদাতা খন্নাস (শয়তান) এর অনিষ্ট থেকে; যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। সে জিন হতে এবং মনুষ্য হতে।”’ (সুরা নাস, আয়াত: ১-৬)
‘আর অবশ্যই আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং আমি জানি তাকে তার নফস যে বিষয়ে প্ররোচনা দেয়।’ (সুরা কাফ, আয়াত: ১৬) ‘নিশ্চয়ই নফস মন্দের প্রতি নির্দেশ করে।’ (সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৫৩)
রমজানে জিন শয়তান বন্দী থাকলেও মানুষ শয়তান ও নফস শয়তান সক্রিয় থাকে। তাই মানুষ পাপাচার থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারে না। এ কারণে নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, মানুষকে শয়তানের প্রভাবমুক্ত হওয়ার জন্য অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করে সৎ সঙ্গ অর্জন করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আর সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।’ (সুরা তওবা, আয়াত: ১১৯)
নফসের তিন অবস্থা রয়েছে—নফসে আম্মারা, নফসে লাওয়ামা ও নফসে মুতমাইন্না। নফসে আম্মারা হলো ‘পাপাসক্ত সত্তা’, যা পাপে আসক্ত ও পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত। (সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৫৩)
নফসে লাওয়ামা হলো ‘অনুতপ্ত সত্তা’, যা শয়তানের ধোঁকা বা রিপুর তাড়নায় অথবা পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও পরিস্থিতির প্রভাবে সাময়িক পাপে লিপ্ত হয়, কিন্তু পরে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে তওবা করে। (সুরা কিয়ামাহ, আয়াত: ২)
নফসে মুতমাইন্না হলো ‘প্রশান্ত সত্তা’, যার পাপের প্রতি বিরাগ এবং নেকির প্রতি অনুরাগ থাকে। (সুরা ফজর, আয়াত: ২৭-৩০)
নফসে আম্মারা ও নফসে লাওয়ামাকে নফসে মুতমাইন্নায় পরিণত করাই রমজানের অন্যতম উদ্দেশ্য।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর তাকে তার অসৎ কর্ম ও সৎ কর্মের জ্ঞান দান করেছি। সে সফল হলো যে তার নফসকে পরিশুদ্ধ করল; আর সে ব্যর্থ হলো যে নফসকে কলুষিত করল।’ (সুরা শামস, আয়াত: ৮-১০)
নাজাতের অর্থ হলো সব দোষ-ত্রুটি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা ও পবিত্রতা অর্জন করা এবং সৎ গুণাবলি অর্জনের মাধ্যমে স্থায়ী মুক্তি নিশ্চিত করা। যাতে নফসে মুতমাইন্নার অবস্থা থেকে পুনরায় লাওয়ামা বা আম্মারার দিকে ফিরে না যায়।
নাজাত বা মোহমুক্তির অন্যতম উপায় হলো তওবা ও ইস্তিগফার করা। তওবা অর্থ হলো পাপ ত্যাগ করে পুণ্যের প্রতি মনোনিবেশ করা। ইস্তিগফার হলো কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং পুনরায় সেই অপরাধ না করার অঙ্গীকার করা ও দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা।
জাগতিক সব মোহ-মায়া ও আকর্ষণ থেকে মুক্ত হওয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো ইতিকাফ। এতে বান্দা সবকিছু থেকে মুক্ত হয়ে একান্তভাবে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান।
পাপের অকল্যাণ ও ভয়াবহ পরিণতি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য, পাপের আকর্ষণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য এবং পবিত্র শবে কদর লাভের জন্য ইতিকাফ অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল। রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়াহ।
● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]