সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা ওলামা দল নেতার ছেলে মো. হাবিবুল্লাহ ও লোকজন জাকি মুজাহিদ রিফাত ও মেহেদী হাসান নামে দুই কলেজ শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সকাল ও আগেরদিন সন্ধ্যায় শ্যামনগর মহসীন কলেজ ও নকিপুর বাজারে তাদের মারধর করা হয়।  

রিফাত ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বেলালের এবং মেহেদী হাসান উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বক্কারের ছেলে। তারা শ্যামনগর সরকারি মহসীন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

ভুক্তভোগী দুই তরুণের পরিবারের দাবি, স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে তাদেরকে মারধর করা হয়েছে। স্থানীয় ঊর্ধ্বতন নেতাদের বারবার বলা সত্ত্বেও তারা কর্মী সমর্থকদের নিবৃত্ত না করে বরং উস্কে দিচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। 

রিফাতের চাচা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তার ভাতিজা রিফাতকে লোহার চেইন দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক রবিউল ইসলামের ছেলে হাবিবুল্লাহ। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার মেলেনি। 

শফিকুলের ভাষ্য, কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একপর্যায়ে গত ২২ জানুয়ারি দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সে ঘটনায় দু’পক্ষের বেশকিছু কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। বর্তমানে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে। তবে উপজেলা সদরের বাইরে থেকে প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন শ্যামনগরে গেলে তাদেরকে খুঁজে খুঁজে নিয়ে মারধর করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বক্কার জানান, রোববার সকালে তার ছেলে পরীক্ষায় অংশ নিতে কলেজে যায়। বেলা ১১টার দিকে ১০-১২ জন সঙ্গীকে নিয়ে হাবিবুল্লাহ তার ছেলেকে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকে বেধড়ক মারধর করে। এসময় শিক্ষক ও সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। আবু বক্কার সিদ্দিক অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর হাবিবুল্লাহ ফেসবুকে নানা ধরনের উস্কানিমূলক পোষ্ট দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করছে। 

অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে হাবিবুল্লাহ ও তার বাবা রবিউল ইসলামের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বারবার কল দেওয়া হলেও তারা সাড়া দেননি। 

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খান আব্দুস সবুর বলেন, এমনটি হয়ে থাকলে তা খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। বিষয়টি ওলামা দল নেতা রবিউল ইসলামকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

হুমায়ুন কবীর জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ ল ইসল ম দল ন ত ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শ্যামনগরে আবারও পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৮টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

সাতক্ষীরা শ্যামনগরে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে আবারও পরিত্যক্ত অবস্থায় হাসুয়া ও রামদাসহ ৩৮টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে শ্যামনগরের নকিপুর গ্রামের শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি রহমত আলী বাড়ির সামনে বিল্লাল গাজীর পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ৩৪টি হাসুয়া ও ৪টি রামদা উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) একই এলাকার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাবের মিস্ত্রির দখলে থাকা পুকুর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৪টি হাসুয়া ও রামদা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, বিল্লাল গাজীর স্ত্রী সুফিয়া সকালে পরিত্যক্ত পুকুর পাড়ে কাজ করার সময় বস্তার ভিতরে থাকা দেশীয় অস্ত্রগুলো দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তার ভিতর থেকে ৩৪টি হাসুয়া এবং ৪টি রামদা উদ্ধার করে। দীর্ঘদিন ধরে পানির মধ্যে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার কারনে এসব অস্ত্রে মরিচা পড়ে গেছে।

নকিপুর গ্রামের সুজা মাহমুদ জানান, অস্ত্রগুলো বিভিন্ন সময়ে ভূমিহীন নেতা ও বাস্তুহারালীগ সভাপতি মোকছেদ, তার জামাতা স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা সাবের মিস্ত্রি ও ছেলে রহমত আলীর নেতৃত্বে ভূমিদস্যু বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করতেন। পাঁচ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর থেকে সাবের ও তার শ্যালক রহমত পলাতক রয়েছে বলে তিনি জানান।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, “খবর পেয়ে বস্তার মধ্য থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় হাসুয়া ও রামদাগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। পুকুরে কে বা কারা এই রাম দা ও হাসুয়া গুলো লুকিয়ে রেখেছিল সে তথ্য উদঘাটনে পুলিশের অনুসন্ধান চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরকারি খাল দখলের অভিযোগ
  • শ্যামনগরে আবারও পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৮টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
  • মায়ের কোল থেকে ছিটকে গাড়ির চাকায় পিষ্ট শিশু