বাঁচাত চান ইবি শিক্ষার্থী, প্রয়োজন ৩০ লাখ টাকা
Published: 26th, January 2025 GMT
কৃষক বাবার সন্তান উত্তম রায়। পড়াশোনা করছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষে।
অস্বচ্ছল পরিবারে বেড়ে ওঠা কৃষকের বাবার এ মেধাবী সন্তানের স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে পরিবারের হাল ধরার। কিন্তু তিনি মরণব্যাধী ক্রোনিক কিডনি ডিজিজে (সিকেডি) আক্রান্ত। এতে তার দুটো কিডনিই অচলপ্রায় হয়ে পড়েছে।
তার জীবন বাঁচানোর শেষ উপায় কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট, যার জন্য প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। এ ব্যয়ভার তার পরিবারের একার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। তাই পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে এবং তাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সবার কাছে সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন এ শিক্ষার্থী।
উত্তম রায়ের সহপাঠী রতন সাহা বলেন, “চিকিৎসক যখন আমার বন্ধুর দুইটি কিডনি ড্যামেজের বিষয়টি জানালেন, তখন আরো স্পষ্ট হওয়ার জন্য ভারত গিয়ে পরীক্ষা করেছে। আসলেই তার কিডনি দুইটি ড্যামেজ। এমতাবস্থায় ওর চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন, যা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভাগ থেকে যতটুকু পারছি, সহযোগিতা করছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, চিকিৎসার জন্য তারা যেন তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করে। সবার সর্বাত্মক সহযোগিতায় আমরা আমাদের সহপাঠীকে নিয়ে আবার নতুনভাবে চলার স্বপ্ন দেখতে পারি।”
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা:
বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায়- 01781053398 (উত্তম রায়), 01568774826 (উত্তমের বাবা)
ব্যাংক- হিসাবের নাম উত্তম কুমার রায়, হিসাব নম্বর ২০৫০ ১৩৩ ৬৭ ০০৩৯১৫০৫, ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, কুষ্টিয়া শাখা।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
দায়িত্ববোধ থেকেই জীবনের ঝুঁকি নেই: মেজবাহ
২৬ বছর চাকরি জীবনে চিহ্নিত মাদক কারবারি ও কুখ্যাত খুনিসহ অনেক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছি। এমন সাহসিতাপূর্ণ কাজের জন্য পুলিশ সুপার (এসপি) থেকে ৬২ বার পুরস্কৃত হয়েছি। তবে এবারের কাজের অভিজ্ঞতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। দায়িত্ববোধ থেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ মোবারক হোসেন নাফিজকে আটক করি। নাফিজ ভাটারা থানার একটি ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।
কথাগুলো বলছিলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ভাটারা থানার সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মেজবাহ উদ্দিন।
এএসআই মেজবাহ সমকালকে বলেন, এই কাজের জন্য আমাকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) প্রদান করা হয়েছে। এটা আমার একার অর্জন না। ডিসি স্যার থেকে শুরু করে থানার ওসি স্যার পর্যন্ত সবার অর্জন এটা। স্যারদের উৎসাহে এমন কাজ করার সাহস পেয়েছি।
সোমবার বিকেল ৩টায় বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) থানার গ্রুপে পদকের কাগজ দিলে থানার অফিসার থেকে শুরু করে সবাই অভিনন্দন জানিয়েছেন। আজকে আমার জন্য বাহিনী গর্বিত। বাকি চাকরি জীবন এভাবেই অপরাধীদের আতঙ্ক এবং সাধারণ মানুষের জন্য চাকরি করে যেতে চাই।
২০২৫ সালে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পুলিশ সদস্য মেজবাহ উদ্দিনকে বিপিএম পদক প্রদান করা হয়। গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিবের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
একটি সূত্র জানায়, এখন থেকে পুলিশ সদস্যদের সাহসিকতা ও ভালো কাজের জন্য সারা বছর বিপিএম ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) দেওয়া হবে। আগে সারা বছর কাজের পর বছর শেষে এসে পদক প্রদান করা হতো। এতে অনেক ভালো কাজ করেও পদক বঞ্চিত হতেন সদস্যরা। এখন থেকে এটার সুযোগ নেই। ভালো কাজ করলেই সঙ্গে সঙ্গে মূল্যায়ন করা হবে।
গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বারিধারা জে-ব্লক এলাকায় চিহ্নিত অপরাধী মোবারক হোসেন নাফিজকে আটক করতে গেলে তার চাকুর আঘাতে আহত হন এএসআই মেজবাহ উদ্দিন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় নাফিজকে গ্রেপ্তারের পর তার বীরত্বের প্রশংসা করেন নেটিজেনরা। এরপর পুলিশের আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার থেকে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা প্রশংসা করেন।
মেজবাহ বলেন, আসামি নাফিজ চাঁদার দাবিতে বারিধারা জে-ব্লকে অবস্থান করছে বলে খবর আসে। তাকে ধরতে অভিযান শুরু হয়। এর মধ্যে আমি তাকে ধরে ফেলি। এর এক মিনিটের মধ্যে সে চাকু দিয়ে আমাকে আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারপরও তাকে ছাড়েনি। এরপর হাতে কামড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় অপরাধী নাফিজ। সেদিন জীবন বাজি রেখে তাকে আটক করি।
চাকরি জীবনে ডিএমপিতে পদায়ন এই প্রথম। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী দায়িত্ব নেওয়ার পর ঢাকা মহানগরে ছিনতাই ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা আসে। থানা থেকে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। আমরা জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য আসছি, এখানে কোনো অপরাধী থাকবে না।
তিনি বলেন, বাহিনীর জন্য এমন কাজ করতে পেরে নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। অপরাধীকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে পেরেছি। পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য হিসেবে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী আছে। দেশের জন্য এমন সাহসিকতা কাজের জন্য স্ত্রী ও সন্তানরাও আজ গর্বিত।
জানা যায়, মেজবাহ ২০০০ সালে ১৯ মে কনস্টেবল পদে পুলিশে ভর্তি হয়। এরপর ২০১৭ সালে ১০ মার্চ তিনি পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হন। সর্বশেষ গত বছরের ৮ নভেম্বর মেজবাহ ডিএমপির ভাটারা থানায় বদলি হয়ে আসেন। এর আগে তিনি খুলনা, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন থানায় সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
ভালো কাজের জন্য ৬২ বার পুরস্কার পান তিনি। ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু থানায় তার জন্ম। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় মেজবাহ। এক ভাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চাকরি করেন। বাকি দুই ভাই বিদেশ থাকেন।
ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, মেজবাহর এই সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুলিশ সদরদপ্তরের সুপারিশে বিপিএম (সাহসিকতা) পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া ওই সময়ই ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী মেসবাহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের জন্য অনুকরণীয় বলে উল্লেখ করে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার প্রদান করেন।