বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, “বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) প্রায় ৪৫-৫০টির মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলোকে পিপিপি (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব) বা ইজারার মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের দিতে চায় সরকার।”

ইতোমধ্যে গত ছয় মাসে তিনটি মিল হস্তান্তর হয়েছে, আরো কিছুর প্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের বলতে চাই–এখন সরকার কোনো সম্পর্কের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না, সিদ্ধান্ত নিবেন বিনিয়োগকারীর যোগ্যতা এবং প্রস্তাবের ভিত্তিতে। প্রতিষ্ঠানগুলোর রিসোর্স (সম্পদ) ব্যবহার করুন, নিজে ও দেশকে লাভবান করুন, অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে অবদান রাখুন।”

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিল লিজ (ইজারা) পদ্ধতিতে পরিচালনায় বিটিএমসি ও ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.

) লি. মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশে সেনাশাসন আসার কোনো প্রেক্ষিত নেই: মাহফুজ

তরুণদের রাজনৈতিক দলকে স্বাগত: তারেক রহমান 

শেখ বশিরউদ্দীন বিনিয়োগের জন্য ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.) লি. কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বিটিএমসি ও বিজেএমসির মিলগুলোতে পরিপূর্ণ অবকাঠামো আছে। কিছুটা সংস্কার করে নিলেই দ্রুত এর উৎপাদন শুরু হবে, লাভ করার সুযোগ হবে। ওপেন টেন্ডারের (উন্মুক্ত দরপত্রের) মাধ্যমে সততা, নিষ্ঠা ও দ্রুততার সাথে কাজগুলো করা হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বিনিয়োগকারী খুঁজছে, ব্যবসায়ীরা সুযোগটা নিয়ে নিন।”

বিনিয়োগের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরে বিনিয়োগের আহ্বান করেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, “কুড়িগ্রামের উপযোগী কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করলে জনসাধারণ উপকার পাবে। বন্ধ থাকা মিলগুলো পুনরায় চালুর জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।”

ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.) লি. ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির আহমেদ বলেন, “কর্মসংস্থান বাড়াতে এবং জন ও পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে তুলতে চাই-যেখানে কুড়িগ্রামবাসী উপকৃত হয়।”

এরপরে বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাহিদ হাসান এবং ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.) লি. ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির আহমেদ এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

অনুষ্ঠানে বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাহিদ হাসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত শিকদার, আরিফুর রহমান খান, মঈনুল ইসলাম, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, বিটিএমসির সাবেক চেয়ারম্যান ব্রি. জে (অব.) মো. জিয়াউল হক, বিজেএমএ সম্পাদক আব্দুল বারিকসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ

বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।

জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।

জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।

আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।

বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ