ভয়ের কিছু নেই, আইনিভাবে মোকাবিলা করব: পরীমণি
Published: 26th, January 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার বহুল আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত আজ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন। এ খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা চলছে। নানাজন নানারকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। নির্মাতা আশফাক নিপুণ, নায়িকা মাহিয়া মাহিসহ অনেকেই বিষয়টি নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন।
আদালতের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবরটি পেয়েছেন পরীমণি। এ বিষয়ে একটি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, “ফোন হাতে নিয়ে ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে খবরটা দেখলাম। আমি আজ আদালতে যেতে পারিনি। এর আগেও একবার যেতে পারিনি, সেবার আমার মৃত নানুর একটা বিষয় ছিল। সে হিসেবে পরপর দুবার আমি আদালতে যেতে পারিনি। আজকে আমার শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাজির থাকতে পারিনি। আমার আইনজীবীকে তা জানিয়েছিও। আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, আজকে আমার অবশ্যই যাওয়া উচিত ছিল। সচেতন নাগরিক হিসেবেও মনে করছি, যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু শরীর অনেক বেশি খারাপ ছিল। শরীর অসুস্থ থাকলে তো কিছু করার নেই। আমি বিছানা থেকে ওঠার মতো শক্তিও পাচ্ছিলাম না। ঠিক থাকলে আমি তো আদালতে যেতাম। আদালতে যাওয়া নিয়ে আমার কখনো কোনো সমস্যা ছিল না। মাতৃত্বকালীন সময়টায়ও কিন্তু আমি আদালতে যাওয়া বাদ দিইনি।”
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাড়তি যস্ত্রণার মধ্যে পড়েছেন পরীমণি। তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পরিচিত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সবাই অনবরত ফোন করছেন, খোঁজখবর নিতে। এটা তো আমার জন্য বাড়তি একটা যন্ত্রণা। বিব্রতকরও। উটকো ঝামেলা বলতে পারেন।”
আরো পড়ুন:
অভিযোগ প্রমাণ হলে কত বছরের শাস্তি হবে পরীমণির
ধর্মের দোহাই দিয়ে কী প্রমাণ করতে চলেছেন তারা: পরীমণি
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে চিন্তিত নন পরীমণি। কারণ আইনিভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করতে চান। এ বিষয়ে পরীমণি বলেন, “এখানে ভয়ের কিছু নেই। আমি আইনিভাবে মোকাবিলা করব। জামিনের জন্য আবেদন করবেন আমার আইনজীবী।”
গতকাল টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে একটি প্রসাধনপণ্যের শোরুম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল পরীমণির। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আপত্তির কারণে টাঙ্গাইলে যাওয়া হয়নি তার। এ নিয়ে গতকাল রাতে ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। অনেকেই সেই পোস্টের সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশের ‘যোগসূত্রের’ কথা বলছেন।
এ বিষয়ে পরীমণি তার ভাবনার কথা জানিয়ে বলেন, “যে যা মন চায় করুক। যা মন চায় ভাবুক— এসব নিয়ে আমি কিছুই ভাবতে চাই না। আমার কোনো কিছুতে সমস্যা মনে হলে আমি কথা বলবই। আমার গায়ে লাগলে আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলব না। সবার মতো আমি চুপ করে থাকতে পারি না। যেকোনো অন্যায় নিয়ে আমি কথা বলছি। এই অন্যায় নিয়ে কথা বলার কারণে আমাকে যদি বারবার জেলে যেতে হয়, আমি গেলাম। আর কী করব। কিছু হলেই জেলে পাঠাবে, তাহলে তো দেশের কেউ কথাই বলবে না। সবাই বোবা হয়ে থাকবে? আমৃত্যু আমি অন্যায় দেখলে কথা বলব, যা আছে কপালে।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট
বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।
বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।
রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।