সৌন্দর্যবর্ধক ঘাস চাষ করে চাঁদপুরের মনির হোসেন নিজের ভাগ্যবদল করেছেন। অনলাইনেই বিক্রি হচ্ছে তার চাষকৃত ঘাস। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এখন তার কাছে ঘাস চাষ শিখতে আসছেন।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বালিয়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিললো মনির হোসেনের।

মনির হোসেন চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আবু তাহের গাজী ও মনি বেগমের ছেলে। ৩৮ বছর বয়সী মনির পরিবারে তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। আয়ের পথ না পেয়ে মনির ২০১৩ সালে বাহারাইন চলে যান।  সেখানে বাগানে কাজ করতেন। 

২০১৮ সালে দেশে ফিরে বেকার বসে ছিলেন। ২০২০ সালে মেক্সিকো থেকে লং কার্পেট ঘাস আমদানি করেন তিনি। সেই ঘাস লাগিয়ে বর্তমানে বছরে ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা আয় করছেন। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে সুখের সংসার তার।

মনিরের ঘাসচাষে নিয়োজিত শ্রমিক পারভেজ জানান, বছর তিনেক আগে আমদানিকৃত সেই মেক্সিকান বারমুডা লং কার্পেট ঘাস থেকেই নতুন ঘাসের জন্ম হয়। এরজন্য নির্দিষ্ট কোনো বীজের প্রয়োজন নেই। জমি প্রস্তুতকালে প্রথমে জমির মাটি লেভেলের পর তাতে প্লাস্টিক বিছানো হয়। তার উপর মাটি ফেলে পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে কাদামাটি করা হয়। সে মাটির ওপরে টুকরো টুকরো ঘাস লাগানো হয়। ঘাস উঠানোর আগে দুয়েকবার আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হয়। এরপর ঘাস বিক্রির উপযোগী হয়।

এই কাজে ৫০/৬০ জনের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। তারা জমি প্রস্তুত, ঘাস বাছাই, আগাছা পরিষ্কার, পরিবহন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ঢাকা, বরিশাল, যশোরসহ দূর-দূরান্তে এসব ঘাস ট্রাকযোগে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

উদ্যোক্তা মো.

মনির হোসেন বলেন, ‍“মেক্সিকান বারমুডা লং কার্পেট ঘাস মূলত সৌন্দর্য বর্ধনে কাজে আসে। অনলাইনের সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি প্রমোট করি। রুচিশীল মানুষরা এ ঘাস পছন্দ করেন। নিজেদের বাড়ির আঙিনাসহ খেলার মাঠ বা রাস্তার দুপাশে লাগাচ্ছেন। প্রথমদিকে পরিবারসহ এলাকাবাসী এ কাজকে গুরুত্ব না দিলেও এখন ঘাসচাষে বছরে ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা আয়ের এই সফলতাকে প্রশংসার চোখেই দেখছেন সবাই।”

তিনি আরো বলেন, ‍“বর্তমানে আমি দক্ষিণ বালিয়া ছাড়াও ইচুলী, লক্ষীপুর ও মোহনপুরে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ একর জমি লিজ নিয়ে এ ঘাস চাষ করছি। যদি ঋণ সহায়তা এবং প্রশাসন হতে খাস জমি বরাদ্দ পাই, তাহলে আমি এ ব্যবসা আরও প্রসার ঘটিয়ে বহু মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারব।”

এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “লং কার্পেট ঘাসচাষ পদ্ধতি পরিদর্শন করে খাস জমি বরাদ্দসহ মনিরের মতো উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে সহায়তার আশ্বাস দিচ্ছি। তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”

ঢাকা/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন র হ স ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ