চাকরিতে ১৬০ জনকে পুনর্বহালসহ তিন দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা সিটি করপোরেশনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এতে কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মচারীরা সিটি করপোরেশনের ভেতর অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। 

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। আন্দোলনকারীরা জানান, চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহাল এবং তাদের অন্য দাবিসমূহ মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা জানান, লিখিত নোটিশ না দিয়ে মৌখিক নির্দেশে গত ১ জানুয়ারি ১৬০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, যা শ্রম আইনের পরিপন্থি। ষাটোর্ধ্ব শ্রমিকদের সামাজিক কোনো নিরাপত্তা না দিয়ে হঠাৎ করে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ায় তারা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছেন। চাকরি হারিয়ে অনেকে এক বেলা খেয়ে না খেয়ে জীবন যাপন করছেন। এ কারণেই আজকের আন্দোলন। 

আরো পড়ুন:

বিচারক অপসারণ না হওয়ায় আদালতের ফটকে তালা, সড়ক অবরোধ

ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বগুড়ায় বিক্ষোভ

বরিশাল সিটি করপোরেশনের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হোসেন ঢালী বলেন, “যাদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়াসহ ৩ দফা দাবি নিয়ে বিগত ১ নভেম্বর থেকে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। যত দিন পর্যন্ত আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে না নেওয়া হবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চলবে। 

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সদস্য সচিব ডা.

মনীষা চক্রবর্ত্তি বলেন, “বরিশাল সিটি করপোরেশন অন্যায়ভাবে ১৬০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে যা শ্রম আইনের পুরোপুরি লঙ্ঘন। চাকরিচ্যুত কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি ও চাকরি স্থায়ীকরন ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণের দাবি জানিয়ে আমরা এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছি।”

বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল বারী বলেন, “শ্রম আইন মেনেই ষাটোর্ধ্বদের বাদ দেওয়া হয়েছে। যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তারা সিটি করপোরেশনের নিয়মিত কর্মী নয়। দিন মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে। এদের চাকরি স্থায়ী করার দাবি পুরোপুরি অযৌক্তিক। তবে, যেহেতু শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে, আইনের মধ্যে থেকে কিছু করা গেলে তা করা হবে।”

ঢাকা/পলাশ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক অবর ধ চ কর চ য ত

এছাড়াও পড়ুন:

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি

হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে স্মারকলিপি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারী। 

বৃহস্পতিবার ২৮ হাজার ৩০৭ কর্মীর সই করা এক হাজার ৪২৮ পৃষ্ঠার এই স্মারকলিপি উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। 

এতে বলা হয়, সংস্কার দাবির কারণে মাঠপর্যায়ে কোনো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও গত ১৬ অক্টোবর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ১০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করে। একই দিন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং আরও ১৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই ঘটনায় সমিতির কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দেয়, যার ফলে কিছু এলাকায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।

স্মারকলিপি আরও বলা হয়, আরইবি এখনও মামলা, চাকরিচ্যুতি, বদলি, সাসপেন্ড বিভিন্ন হয়রানিমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। শুধু স্মারকলিপিতে সই দেওয়ার কারণেও সম্প্রতি মাদারীপুর ও রাজশাহীর কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সংযুক্ত করে তদন্তের নামে হয়রানি ও শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। চাকরি হারিয়ে, মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি সমিতির ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সই করা স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

স্মারকলিপিতে মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ