‘যানজট-দূষণ রোধে গণপরিবহন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে’
Published: 26th, January 2025 GMT
যানজট-দূষণ রোধে বিদ্যমান গণপরিবহন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি ভবনে বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন পার্টনারশিপ কার্যকর করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে সচল রেখে দুর্ঘটনা কমানো, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের পুরো জিনিসটাকে (গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা) ঢেলে সাজাতে হবে।”
আরো পড়ুন:
বরিশালে অটোরিকশার চাপায় শিশু নিহত, সড়ক অবরোধ
রোড ডিভাইডারে প্রাইভেটকারের ধাক্কা, শ্যালক ও দুলাভাই নিহত
পরিবেশ ও জলবায়ু রক্ষায় ইলেকট্রিক গাড়ি (ইভি) নামানোর কোনো চিন্তা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের সময় অল্প। কিন্তু জনগণের আকাঙ্ক্ষার চাপ আমাদের ওপর অনেক বেশি। অবশ্য, আমরা জনপ্রত্যাশার এই চাপ মেনে নেই। কারণ, জনগণের প্রত্যাশা যত সুতীক্ষ্ম হবে আমাদের কাজও তত বেশি ত্বরান্বিত হবে। তবে মুশকিল হচ্ছে একটি সীমাবদ্ধ সময়ের মধ্যেই আমাদের কাজগুলো করতে হচ্ছে। ইভির বিষয়টিও দীর্ঘমেয়াদি।”
পরিবেশ মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চুনতি অভয়ারণ্যের বড়-বড় পাহাড় কেটে বড় রেললাইন হয়েছে। আর এটাকে উন্নয়ন হিসেবে মেনে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই পাহাড় কেটে যদি উন্নয়ন হয় তাহলে পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বে আলাদা কোনো মন্ত্রণালয় থেকে লাভ নেই। পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে যদি তার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে না দেওয়া হয় এবং উন্নয়নের চাপ ও উন্নয়নের সিদ্ধান্ত যদি পরিবেশ অধিদপ্তরের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে না।”
“আমাদের কাজটাই হচ্ছে রেগুলেট (নিয়ন্ত্রণ) করা। কিন্তু আমরা যদি সেটি স্বাধীনভাবে করতে না পারি, তাহলে দেখা যাচ্ছে উন্নয়ন এবং পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্য আনা যাবে না। আর উন্নয়নকে যদি প্রাধান্য দিয়ে পরিবেশকে সাব-সাবজেক্ট রাখা হয়, তাহলে যেরকম পরিবেশ আমরা চাই সেটি পাব না,” বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন য নজট পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার-নির্বাচন নিয়ে বিএনপিকে টার্গেট করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে: মির্জা ফখরুল
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপিকে টার্গেট করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে টার্গেট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা প্রচারণা চলছে যে বিএনপি আগে নির্বাচন চায়, পরে সংস্কার অথবা বিএনপি সংস্কার চায় না, নির্বাচন চায়। এটা দিয়ে জনগণের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে বিষয়ে জোর দিচ্ছি, সে বিষয়ে অনেকেই বুঝতে সক্ষম হচ্ছেন না। আমরা কখনই এটা বলছি না—আগে নির্বাচন, পরে সংস্কার। আমরা বলে আসছি; প্রথমত, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য মিনিমাম সংস্কার যেটুকু দরকার, তা করতে হবে। যেমন নির্বাচন ব্যবস্থাকেন্দ্রিক যে সংস্কার, তা করতে হবে; দ্বিতীয়ত, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে; তৃতীয়ত, জুডিশিয়াল রিফর্ম (বিচার ব্যবস্থার সংস্কার) করতে হবে। এই তিনটি বিষয়ে সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আজ যে সংস্কার দাবি উঠেছে, তা বিএনপিরই দাবি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি যে ৩১ দফার প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে সংবিধান সংস্কার বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে মতামত দিয়েছে। কতগুলো বিষয় আছে যা মীমাংসিত, সেগুলোতে বিএনপি হাত দিতে চায় না।
আরও পড়ুনসংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে কী বলছে বিএনপি, জামায়াত ও অন্যরা১৭ জানুয়ারি ২০২৫ফ্যাসিবাদীদের বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা আছে কি না—প্রশ্ন করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরস্পরবিরোধী মতামত নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কা নেই। কারণ, গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই হচ্ছে ভিন্ন মত। সব রাজনৈতিক দলের যদি একই রকম মতামত হয়, তবে তো একই ধরনের হয়ে গেল। এখানে একেক দলের একেক মত থাকবে। দেশের জনগণ বেছে নেবেন, কোনটা তাঁদের জন্য প্রযোজ্য।’ এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘দেশের জনগণের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক রয়েছে। আর যাঁরা সংস্কার নিয়ে এসেছেন, তাঁরা জ্ঞানী লোক, পণ্ডিত লোক; বিশাল বিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন। তাঁদের আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। কিন্তু তাঁরা যদি জনগণের বাইরে গিয়ে কিছু করেন, তবে আমরা সেটাকে সমর্থন করতে পারি না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গোটা পৃথিবীতে ডানপন্থীদের একটা উত্থান হয়েছে। তাঁরা এখন বলছেন, ‘গণতন্ত্র ইজ গোয়িং ডাউন।’ জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশ সফরে এলে বিএনপি তাঁর সঙ্গে বৈঠক কর। সেখানে তিনি বলেছিলেন যে ‘গণতন্ত্র এখন বিপদের সম্মুখীন।’ এখন বিভিন্ন দেশে ডানপন্থীদের উত্থান হচ্ছে, কর্তৃত্ববাদের উত্থান হচ্ছে, গণতন্ত্র নিচে নামছে। কিন্তু তারপরও গণতন্ত্রই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা, শাসনের জন্য, সুশাসনের জন্য।
সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রচারণাসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতের মিডিয়ায় যেসব প্রচার হচ্ছে, সেগুলো যে ডাহা মিথ্যা, এটা আপনারা ভালো করে জানেন। ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম দিকে কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরে অন্যায় হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে কী এসব হয়েছে? অথচ ভারতের মিডিয়ার বয়ানে দেখবেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চরম অন্যায় হচ্ছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সোশ্যাল মিডিয়া দেখি না। কারণ, সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে একটা মিস ইনফরমেশন, মিথ্যা প্রচার ও অপপ্রচারের কারখানা।’
আরও পড়ুনবিএনপির সংস্কার প্রস্তাব: ক্ষমতার ভারসাম্য, একজন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় ২৩ নভেম্বর ২০২৪দলীয় নেতা-কর্মীদের অপরাধ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইতিমধ্যে দলীয় কিছু ব্যক্তি, কিছু কিছু কাজ (অপরাধ) করেছিল, যা আমরা প্রশ্রয় দিই না; তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও সংগঠনের কমিটি ভেঙে দিয়েছি, দলের নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছি।’
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সহসভাপতি ওয়াদুল্লাহ মাসুদ, আবু তাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।