ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগে ক্লাস করার ৪ মাস পর এক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীদের সন্দেহ হলে তারা বিভাগের সভাপতিকে বিষয়টি জানান। পরে তাকে প্রক্টর দপ্তরের মাধ্যমে পুলিশের সোপর্দ করা হয়।

ওই ভুয়া শিক্ষার্থীর নাম নাভিক রহমান। তিনি ছদ্মবেশে আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস করছিলেন এতদিন।

জিজ্ঞাসাবাদে নাভিক রহমান দাবি করেছেন, তার মায়ের অনেক আশা ছিল, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পাননি। তাই মাকে খুশি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিনয় করে আসছিলেন।

নাভিক রহমানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘুরে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টে নিজেকে রাবি আইন বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রোফাইল পিকচারে আইন বিভাগ লেখা একটা টি-শার্ট পরিহিত ছবিও রয়েছে। এছাড়া আইন বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি। তার বন্ধু তালিকায় আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরও অনেকে যুক্ত রয়েছেন।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহরুখ মাহমুদ বলেন, “তার বিষয়ে ব্যাচমেটদের সন্দেহ হলে তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং পরিচয় বের হয়ে আসে। এমনকি সে তার গার্ডিয়ান হিসেবে যাদের ডেকেছিল, তারাও ভুয়া। এরপর বিভাগের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রক্টর অফিস নিয়ে গিয়ে নাভিক ও তার ভুয়া অভিভাবকদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “গত ৪ মাসে বিভাগের সবকিছুতে সে উপস্থিত ছিল একদম প্রফেশনাল স্পাই এজেন্টের মতো। সে কোনো গুপ্তচর প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত কিনা তদন্ত করা হোক।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সতর্ক থাকা দরকার আমাদের বিভাগের সিকিউরিটি নিয়ে। একজন ৪ মাস যাবৎ ক্লাস করেছে, প্রতিটা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে। অথচ আমাদের বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইডেন্টিফাই করতে পারেনি, এটা চরম ব্যর্থতা।”

ইমতিয়াজ নাহিদ নামে চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “ওই ব্যাচে এর আগেও একজন ফ্রড ধরা পড়েছিল। তার নাম ছিল আনিকা। সবাই মিলে তাকে ধরার চেষ্টা করলে পালিয়ে যায় মেয়েটা।”

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মেহেদী বলেন, “আমাদের ক্লাস শুরু হওয়ার প্রথম দিকে এক মাস মত রোল কল করা হত না। ওইসময় নাভিককে নিয়মিত ক্লাস করতে দেখেছি। পরে রোল কল শুরু হলে তাকে খুব একটা নিয়মিত দেখা যেত না। তবে বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সে নিয়মিত অংশগ্রহণ করত। আমাদের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় তাকে উপস্থিত হতে না দেখে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারি, তার নাম আমাদের শিক্ষার্থীদের তালিকায় নেই।”

এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.

সাঈদা আঞ্জু বলেন, “তাকে বেশ রাতে আটক করা হয়েছে। আমি স্বশরীরে তখন উপস্থিত হতে পারিনি। প্রক্টর স্যারের সঙ্গে অল্প কথা হয়েছিল। আজ বিস্তারিত কথা বলার পর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। এটুকু জেনেছি যে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই না। তাই সে আদৌ ক্লাস করেছে কিনা, সেটা সংশ্লিষ্ট ব্যাচের শিক্ষার্থীরাই ভালো বলতে পারবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “ছেলেটি স্বীকার করেছে যে, তার মায়ের অনেক আশা ছিল, তার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পায়নি। তাই মাকে খুশি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিনয় করেছে এতদিন। তাকে থানায় হস্তান্তর করেছি। পুলিশ অধিকতর তদন্ত করে বিষয়টি দেখবে।”

এ বিষয়ে জানতে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মালেকের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইন ব ভ গ র ক ল স কর রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শুক্র-শনিবার খোলা ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের প্রয়োজনে সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আঞ্চলিক ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা রাখা হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএসসিসি থেকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলমান থাকায় নাগরিকত্ব সনদ এবং জন্ম-মৃত্যু সনদ সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার ও শনিবার) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা থাকবে। 

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ