টেলিযোগাযোগ খাতের রূপান্তরের গল্প
Published: 26th, January 2025 GMT
একটা সময় ফোনে কথা বলতে প্রতি মিনিট সাত থেকে আট টাকা খরচ করতে হত! এমন ব্যয়বহুল সেবা, যা মূলত ভয়েস কলেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন দৃশ্যপটে পরিবর্তন এসেছে। টেলিযোগাযোগ সেবার বিস্তার এবং সহজলভ্য ইন্টারনেটের সুবাদে মানুষ তাৎক্ষণিক যোগাযোগের সুবিধা পাচ্ছে। এছাড়া এক অ্যাপের মাধ্যমে বিল পরিশোধ কিংবা চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত পরামর্শও নিতে পারছেন।
ভয়েস কল-নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সেবা প্রদানে টেলিযোগাযোগ খাতের রূপান্তরের যাত্রা সহজ ছিল না। দুই দশক আগেও এ খাতে ছিল একক আধিপত্য। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলালিংক কার্যক্রম শুরু করে। এতে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়। এর ফলে কল রেট কমতে শুরু করে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে মোবাইল কলরেট ছিল ১৬ টাকা প্রতি মিনিট। ২০০৫ সালের আগে মোবাইল কলরেট ছিল পাঁচ থেকে আট টাকা প্রতি মিনিট। গ্রাহক প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাত্রার শুরুতেই দেশে ভয়েস কল সেবাকে সবার কাছে পৌঁছাতে ভূমিকা রেখেছে বাংলালিংক।
টেলিযোগাযোগ খাতে একাধিক অপারেটরের প্রবেশ এবং উল্লেখযোগ্য প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসতে শুরু করে। অপারেটররাও তাদের আয় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে নতুন করে বিনিয়োগ করে, যা বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সেবা চালুর পথ উন্মুক্ত করে দেয়। একই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য অবকাঠামো উন্নয়ন টেলিযোগাযোগ খাতে উদ্ভাবন ত্বরান্বিত করে।
২০১৩ সালে থিজি চালু হওয়ার পর দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে যায়— কাস্টমার বিহেভিয়ারে পরিবর্তন আসে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পায়। থ্রিজি ইন্টারনেট চালুর পর এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক ট্রেন্ড অনুসরণ করে ডিজিটাল সেবা প্রদানে নিজেদের ডিজিটাল পোর্টফোলিওর মান উন্নয়নের দিকে মনোযোগী হয়।
‘ডিজিটাল ফর অল’ লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রাহক-কেন্দ্রিক ডিজিটাল অপারেটর হিসেবে দেশের মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন ও অতাধুনিক উদ্ভাবনী সেবা প্রদানে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরিতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলালিংক। সাশ্রয়ী মূল্যে টকটাইম এবং সবার জন্য ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে ভূমিকা রাখছে। ডিজিটাল সেবার উদ্ভাবনী পোর্টফোলিও তৈরিতে স্থানীয় পর্যায়ে মেধাবীদের ক্ষমতায়ন ও তাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলছে।
মাইবিএল সুপারঅ্যাপ ও টফির মাধ্যমে তথ্য প্রাপ্তি ও বিনোদন গ্রহণের সুযোগ সবার জন্য সহজলভ্য করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রিমিয়াম ডিজিটাল বিনোদন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টফিতে বিভিন্ন টিভি শো দেখার পাশাপাশি সরাসরি খেলা ও টিভি দেখা যায়। অন্যদিকে, মাইবিএল সুপারঅ্যাপ ছয়টি মৌলিক ডিজিটাল সেবাকে সকলের কাছে পৌঁছে দিয়েছে; সেবাগুলো হচ্ছে- কানেক্ট, কনটেন্ট, কমার্স, কেয়ার, কোর্সেস ও কমিউনিটি। টফি কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য ভিডিও শেয়ারিং ফিচারের মাধ্যমে চ্যানেল মনিটাইজ করার সুযোগ তৈরি করেছে। এখন টফিতে প্রায় ৭০ লাখ মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। পাশাপাশি খেলা দেখা কিংবা লিনিয়ার টিভির জন্য প্ল্যাটফর্মটি ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাসিক ভিউ ৪ কোটি ছাড়িয়েছে। এছাড়াও, দেশের প্রথম ও একমাত্র টেলকো পণ্য হিসেবে আইসিসি বিশ্বকাপের সকল আয়োজনের ডিজিটাল সম্প্রচারের স্বত্ব লাভ করেছে এবং একমাত্র ওটিটি হিসেবে টফির সনি, বিফোরইউ, ডিসকভারি ও জি, এ চার আন্তর্জাতিক ব্রডকাস্টারের ডিরেক্ট ফিড রয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রাহকদের ডিজিটাল চাহিদা পূরণে সমাধান হিসেবে ভূমিকা রাখছে মাইবিএল সুপারঅ্যাপ। ৮০ লাখেরও বেশি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী এবং প্রতিদিন হাজার হাজার কোর্স ব্যবহারকারী সেবা নিচ্ছেন মাইবিএল থেকে। এছাড়া, অ্যাপটির কেয়ার সেকশন থেকে মাসে প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারীকে ডাক্তারি পরামর্শ এবং জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদানে সহায়তা করা হচ্ছে। তরুণদের ক্ষমতায়ন ও তাদের অনন্য ডিজিটাল অভিজ্ঞতা প্রদানে সম্প্রতি রাইজ নামে উদ্ভাবনী এআই-নির্ভর ডিজিটাল লাইফস্টাইল অ্যাপ চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
লেখক: হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স, বাংলালিংক
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম ব যবহ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ইরানে যাচ্ছে নারী কাবাডি দল
মাত্রই ঢাকায় শেষ হয়েছে বাংলাদেশ-নেপাল পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। তাতে স্বাগতিকেরা জিতেছে ৪-১ ব্যবধানে। তবে ঘরের মাঠে নেপালকে হারিয়ে আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই, বলছেন কাবাডিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কারণ, এশিয়ান গেমসের পদক এখন সোনার হরিণ হয়ে আছে।
নারী কাবাডিতেও পদক জয় কঠিন হয়ে পড়েছে। গত এশিয়ান গেমসে নেপালের কাছে হেরে পদকশূন্য ছিল বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল ষষ্ঠ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে তেহরানে যাচ্ছে আগামীকাল রোববার রাতে বা সোমবার সকালে।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ পাঁচবার হয়েছে। চারবারই চ্যাম্পিয়ন ভারত। একবার দক্ষিণ কোরিয়া, সেটি টুর্নামেন্টের চতুর্থ আসরে। দীর্ঘ ৭ বছর বিরতি দিয়ে টুর্নামেন্টটা হচ্ছে আবার। ৪-৯ মার্চ ইরানের রাজধানীতে আয়োজিত টুর্নামেন্টে খেলছে ৭ দেশ—ইরান, ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল , ইরাক ও বাংলাদেশ।
১০ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ প্রস্তুতি শুরু করে। তাই প্রস্তুতি নিয়ে একটু অতৃপ্তি আছে। আরেকটু সময় পেলে ভালো হতো, মনে করছেন খেলোয়াড়েরা। কাবাডি ফেডারেশন বলছে, তারা বেশি দিন হয়নি দায়িত্বে এসেছে। দ্রুততম সময়ে গুছিয়ে উঠতে সময় লেগেছে।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত দুবার খেলেছে এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে। ২০০৫ সালে প্রথম টুর্নামেন্ট আর ২০০৮ সালে তৃতীয় টুর্নামেন্টে। ভারতের হায়দরাবাদের পর ভারতেরই তামিনাড়ুতে অংশ নেয় বাংলাদেশ। প্রথমবার শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ পায়। ২০০৭, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি।
২০০৫ ও ২০০৮ সালে খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন মালেকা। দ্বিতীয়বার ছিলেন অধিনায়ক। এবার সহকারী কোচ হিসেবে গেলেও ম্যাচের সময় ডাগআউটে মূল কোচের ভূমিকায় তাঁকে দেখা যাবে। কারণ, ইরানে নিয়মই হলো, মেয়েদের খেলায় ছেলেরা থাকতে পারবেন না। ফলে বাংলাদেশ নারী দলের পুরুষ কোচ সুবিমল দাসকে বাইরেই থাকতে হবে।
শাহনাজ পারভীনের প্রত্যাশা এবার বাংলাদেশ পদক নিয়ে ফিরবে, ‘এখন পদক জেতা কঠিন। তবে আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে আশা করি ব্রোঞ্জ নিয়ে ফিরব।’