নানা রকম গুড় আছে বাজারে— ঝোলা গুড়, দানা গুড়, পাটালি, নলেন গুড়, হাজারি গুড়। তবে খেজুর গুড়ের বাজার ছিল গ্রাম কেন্দ্রিক। বর্তমানে খেজুর গুড়ের চাহিদা শহরেও বেড়েছে। শীতের মৌসুম এলেই বেড়ে যায় খেজুর গুড়ের চাহিদা। শীতের মিষ্টি পিঠা তৈরিতে খেজুর গুড় ব্যবহার করা হয়। অনেকে রুটি, পরোটা, মুড়ির সঙ্গে খেজুর গুড় খেয়ে থাকেন। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় খেজুর গুড়ের বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এ বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন ল্যাবএইড হসপিটালের সিনিয়র পুষ্টিবিদ কামরুন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই রক্ত স্বল্পতায় ভুগে থাকেন। রক্ত স্বল্পতার প্রধান কারণ আয়রনের ঘাটতি। এই আয়রনের ঘাটতির কারণে নানা রকম শারিরীক জটিলতার সৃষ্টি হয়। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। খেজুরের গুড়ে রয়েছে প্রচুর আয়রন। এই গুড় খেলে আয়রনের অভাব পূরণ হয়। সাধারণভাবে পিঠা,পুলি,পায়েস তৈরিতে খেজুর গুড় ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া চিয়া সিডস বা ইসবগুল মিশিয়েও খেজুর গুড় খাওয়া যেতে পারে।’’
কামরুন আহমেদ জানান, কিশোরীর বয়ঃসন্ধি কালে যেসব পুষ্টি উপাদান দরকার সেই পুষ্টি উপাদানের অনেক কিছু খেজুরের গুড়ে পেতে পারে।
‘‘যারা হজমের সমস্যাতে ভুগছেন তাদের জন্য খেজুরের গুড় মহৌষধ হতে পারে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তারা প্রতিদিন খেজুর গুড় দিয়ে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন। খেজুরের গুড় লিভারের জন্য উপকারী। এই গুড়ে রয়েছে প্রচুর পটাসিয়াম আর সোডিয়াম। এই দুই উপাদান পেশী শক্ত করে। ত্বক ভালো রাখে, তারুণ্য ধরে রাখে, ব্রণ, ফুসকুড়ি দূর করে।’’— যোগ করেন কামরুন আহমেদ।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর চারপাশে নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীর চারপাশে ভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে লুকানো সেই বৈদ্যুতিক শক্তির খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একদল বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নতুন ধরনের এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডল জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। শান্ত কিন্তু শক্তিশালী এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। পৃথিবীর বায়ু ও মহাকাশের সংযোগে প্রধান ভূমিকা পালনও করে থাকে এই শক্তি। নাসার এনডুরেন্স মিশনের মাধ্যমে এই ক্ষেত্রের খোঁজ মিলেছে।
পৃথিবীর অনেক ওপরে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে, এর ফলে সেখানে পরমাণু চার্জযুক্ত কণা ভেঙে হালকা ইলেকট্রন ও ভারী আয়নে পরিণত হয়। সাধারণভাবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আয়নকে নিচে টেনে নিয়ে আসে আর ইলেকট্রন হালকা বলে ওপরে ভেসে থাকে। কিন্তু বৈদ্যুতিক চার্জ আলাদা থাকতে চায় না। ইলেকট্রন পালাতে শুরু করলে তার সঙ্গে আয়নকে একসঙ্গে ধরে রাখার জন্য একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই ক্ষেত্র আয়নকে ওপরে ঠেলে দেয় আর ইলেকট্রনকে ধীর করে দেয়। এই ভারসাম্যকে বিজ্ঞানীরা অ্যাম্বিপোলার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র বলেন। এটি একটি অদৃশ্য টানাটানির মতো কাজ করে। চার্জকে আলাদা হওয়া থেকে রক্ষা করে। পৃথিবী থেকে ২৫০ থেকে ৭৭০ কিলোমিটার ওপরে এই ক্ষেত্রের উপস্থিতি দেখা যায়। এর প্রভাব সূক্ষ্ম, কিন্তু বেশ শক্তিশালী।
নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের বিষয়ে নাসার বিজ্ঞানী গ্লিন কলিনসন বলেন, অ্যাম্বিপোলার ক্ষেত্র কণাকে উত্তপ্ত করার পরিবর্তে শান্তভাবে কণাকে ওপরে নিয়ে যায়, যেখানে অন্যান্য শক্তি সেগুলোকে আরও ওপরের মহাকাশে নিয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখছেন, এই ক্ষেত্র হাইড্রোজেন আয়নকে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। মাধ্যাকর্ষণের ঊর্ধ্বমুখী শক্তির চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই শক্তি।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবাহিত চার্জযুক্ত কণার তথ্য জানতে ২০২২ সালের ১১ মে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল নাসার এনডুরেন্স মিশন। রকেটটি পৃথিবীর ওপরে ৭৬৮ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর আগে বায়ুমণ্ডলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেসব তথ্য পর্যালোচনা করেই নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: আর্থ ডটকম